Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসমাবেশের ব্যাপক প্রস্তুতি আ’লীগের

৭ মার্চের বঙ্গবন্ধু ভাষণের ইউনেস্কোর স্বীকৃতি উদযাপন ১৮ নভেম্বর

তারেক সালমান : | প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের ইউনেস্কোর স্বীকৃতি উদযাপনে ১৮ নভেম্বর রাজধানী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘নাগরিক সমাবেশ’ করবে আওয়ামী লীগ। নাগরিক সমাবেশের ঘোষণা হলেও মূলত ১৮ তারিখে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তিমত্তার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে চায় ক্ষমতাসীন দলটি। দীর্ঘদিন পর গত ১২ নভেম্বর রবিবার একই ভেন্যুতে প্রতিপক্ষ বিএনপির ‘একটি সফল জনসভা’ই পূর্বনির্ধারিত নাগরিক সমাবেশ কার্যত জনসভার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। আর ওই দিন নিজেদের সাংগঠনিক শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই ব্যাপক প্রস্তুতিও নিচ্ছে দলটি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি দেয়া উপলক্ষে নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে কয়েক মাস পর তিনি প্রকাশ্য জনসভায় ভাষণ দেবেন। সূত্র জানিয়েছে, ওই দিন জাতির উদ্দেশে বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনামূলক বার্তা দেবেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা
এর আগে দীর্ঘ তিন মাসেরও বেশি সময় চিকিৎসা শেষে যুক্তরাজ্য থেকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার দিন বিমানবন্দরের সামনে শোডাউন করে বিএনপিবিএনপির এমন কর্মসূচির বিপরীতে পাল্টা কোনো কর্মসূচি দিতে চায় না আওয়ামী লীগ। তবে নির্বাচন সামনে রেখে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখা ও দলীয় শক্তি জানান দেয়ার লক্ষ্যেই ১৮ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশের আড়ালে ব্যাপক লোক সমাগমের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে। নাগরিক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত এ সমাবেশে দলের নেতাকর্মী ছাড়াও নাগরিক সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, পেশাজীবীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেবেন। সমাবেশ সফল করতে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে সমাবেশ ঘিরে আলাদা আলাদা প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সমাবেশে রাজধানীর সব থানা ও ওয়ার্ড থেকে নেতাকর্মীরা অংশ নেয়া ছাড়াও ঢাকার আশপাশের জেলা থেকেও সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী আসবেন। এতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন জানান, ওই দিন বেলা আড়াইটায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ আয়োজনে নাগরিক কমিটি সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া জানান, প্রধানমন্ত্রীর পাশাপাশি এ অনুষ্ঠানে দেশের বরেণ্য বুদ্ধিজীবী এবং বিভিন্ন পেশার উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা বক্তব্য তুলে ধরবেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন জাতীয় অধ্যাপক প্রফেসর ইমেরিটাস আনিসুজ্জামান। পরিচালনা করবেন নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী।
নাগরিক সমাবেশ আয়োজন করছে আওয়ামী লীগের প্রচার উপকমিটি। গত সোমবার কমিটির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের বাসায় প্রস্তুতি বৈঠক হয়। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণ কমিটি গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পল্টন কমিউনিটি সেন্টারে প্রস্তুতি বৈঠকের পর আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আজিমপুর পার্ল হারবার কমিউনিটি সেন্টারে বর্ধিত সভা করবে। নাগরিক সমাবেশকে সফল করতে এসব প্রস্তুতি সভা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: শাহে আলম মুরাদ। তিনি জানান, আজকের প্রস্তুতি সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপুমনি। এছাড়া বিশেষ অতিথি থাকবেন খাদ্যমন্ত্রী অ্যাড. কামরুল ইসলাম।
এদিকে, দীর্ঘ ১৯ মাস পর গত ১২ নভেম্বর প্রকাশ্যে কোনো ময়দানে জনসমাবেশ করে ক্ষমতাসীনদের রাজপথের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ওই জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেদিন দলের জনসভাকে কেন্দ্র করে সরকারের নির্দেশে রাজধানীকে কার্যত বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয় বলে দলটির অভিযোগ। সারাদেশের সড়ক পরিবহন এক অঘোষিত নির্দেশনায় বন্ধ করে দেয়া হয়। এমনকি জনসভাস্থলের দিকে আসার সময় বিএনপি চেয়ারপারসনকে বাসের কৃত্রিম জট দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করা হয় বলেও খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে অভিযোগ করেন। এরপরও দলটির দাবি দেশের জনগণ সরকারের সকল বাধা উপেক্ষা করে ‘গণতন্ত্রের’ মুক্তির আকাক্সক্ষায় জনসভা সফল করেছে। এ জন্য স্বয়ং খালেদা জিয়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটারে জনগণকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছেন।
এদিকে, শনিবারের নাগরিক সমাবেশ সফল করার জন্য আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলী এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বৈঠক ডাকা হয়েছে। দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আওয়ামী লীগের সূত্র বলছে, গত রবিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির জনসভার চেয়ে বড় জমায়েত দেখানোর চ্যালেঞ্জে পড়েছে আওয়ামী লীগ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের কর্মসূচিটি ৮ নভেম্বর নির্ধারিত ছিল। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য এটি পেছানো হয়। অবশ্য গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, সমাবেশ নিয়ে রাজনীতি করছি না। আমাদের সমাবেশ পাল্টাপাল্টি না।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করবে এতে আওয়ামী লীগের কোনো আপত্তি নেই। তবে আবার যদি সন্ত্রাস-নাশকতা করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি রাজনৈতিকভাবেও মোকাবিলা করা হবে।



 

Show all comments
  • রফিক ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:৪৯ এএম says : 2
    সমাবেশের জন্য শুভ কামনা রইলো।
    Total Reply(0) Reply
  • নিজাম ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ৩:৫০ এএম says : 1
    সমাবেশের কারণে যাতে জনভোগান্তি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আ’লীগ

১৪ আগস্ট, ২০১৮

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ