Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আপনাদের জিজ্ঞসার জবাব

| প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

প্রশ্ন : তওবা কি মুমিনের মুক্তির উপায়?
উত্তর : মানুষ ভুলের ঊর্ধ্বে নয়। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় প্রত্যেকের দ্বারা গুনাহের কাজ হয়ে যায়। কেবল আম্বিয়ায়ে কেরাম (আ.) ছিলেন সকল ভুলের ঊর্ধ্বে। তারা ছাড়া পৃথিবীর সকল মানুষই কোনো না কোনো গুনাহে লিপ্ত হয়েছেন। কিন্তু গুনাহ পরবর্তী মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দার জন্য তওবার সুবর্ণ সুযোগ রেখেছেন। গুনাহ করার পর যে খাঁটি দিলে আল্লাহর নিকট তওবা করবে, আকুতি-মিনতি করে ক্ষমা প্রার্থনা করবে আল্লাহ তার সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেন।
তাওবা শব্দের অর্থ : প্রত্যাবর্তন করা, ফিরে আসা, ক্ষমা প্রার্থনা করা, অনুতাপ করা প্রভৃতি। পরিভাষায় : কোনো পাপকাজ সংঘটিত হওয়ার পর অনুতাপ-অনুশোচনা করে সেই পাপ কাজের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং সেই পাপকাজ ছেড়ে ভালো কাজে ফিরে আসাকেই তাওবা বলে। তওবার ভিত্তি : তওবার ভিত্তি হলো পরকালে বিশ্বাস এবং আল্লাহ ও তাঁর রসুলের বিধানের প্রতি অনুরাগ।
পাপ রাশির ক্ষমা ও জাহান্নাম থেকে মুক্তির জন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) তওবার শিক্ষা দিয়েছেন। তওবার বদৌলতে গুরুতর পাপ থেকে মুক্তির সুসংবাদও তিনি দিয়েছেন। পবিত্র কুরআনে আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ না হওয়ার কথা বলা হয়েছে। তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা শিরক ও কুফর ছাড়া সব ধরনের পাপ মাফ করে দেন। বিশ্ব মানবতার প্রতি ইসলামের অন্যতম অবদান এই যে, মানুষকে হতাশা থেকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। শত পাপ করেও কেউ অনুতপ্ত হয়ে ক্ষমা চাইলে তাকে ক্ষমা করা হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা খালেস দিলে তাওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে এসো। আশা করা যায়, আল্লাহ তোমাদের ছোটখাটো ত্রæটিবিচ্যুতি মার্জনা করে দেবেন এবং এমন জান্নাতে স্থান দেবেন, যার পাদদেশ দিয়ে ঝরনাধারা প্রবাহিত।’ (সুরা তাহরিম : ৮)
মহান আল্লাহ তায়ালা এ আয়াতের মাধ্যমে মুমিন বান্দাদেরকে বিশুদ্ধ নিয়তে ও একনিষ্ঠভাবে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানিয়েছেন। এর প্রতিদান স্বরূপ দুনিয়ার জীবনে ঘটে যাওয়া অন্যায় আল্লাহ তায়ালা মাফ করার পর তাদেরকে জান্নাতে স্থান দেবেন, যার পাদদেশে নহর প্রবাহিত।
অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘যারা তাওবা করে, ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে, আল্লাহ তায়ালা তাদের খারাপ কাজগুলোকে ভালো কাজ দ্বারা পরিবর্তন করে দেন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। আর যারা তাওবা করে এবং নেক কাজ করে আল্লাহর প্রতি তাদের তাওবাই সত্যিকারের তাওবা।’ (সুরা ফুরকান : ৭০-৭১) এ আয়াত দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তায়ালা তাওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং তিনি তওবাকারীদের ক্ষমা করতেও ভালোবাসেন। আরো ইরশাদ হয়েছে,‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা সবাই তাওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে এসো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সুরা নুর : ৩১) অন্যত্র মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দাকে তওবার প্রতি আহ্বান করে ইরশাদ করেছেন, তারা কি আল্লাহর দিকে তাওবা করে ফিরে আসবে না এবং তাদের গুনাহগুলোর জন্য ক্ষমা চাইবে না? অথচ আল্লাহ তো ক্ষমাশীল এবং মেহেরবান।’ (সুরা মায়েদা : ৭৪) (চলবে)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ