Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আশুলিয়ায় জিম্মি করে টাকা নেয়ার সময় শিল্প পুলিশের এএসআইসহ গ্রেফতার ৪

সেলিম আহমেদ, সাভার : | প্রকাশের সময় : ৯ নভেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সাময়িক বরখাস্ত, ২ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয় দিয়ে টার্গেটকৃত লোকদের জিম্মি টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে শিল্প পুলিশের এক এএসআইসহ ৪জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জব্দ করেছে তাদের ব্যবহৃত স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার ভাইয়ের একটি মাইক্রোবাস। মাইক্রেবাসের ভিতর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে জিম্মি করে রাখা ৪ যুবককে। এঘটনায় শিল্প পুলিশ-১ এর আশুলিয়া জোনের এএসআই মুকবুল হোসেনকে সাময়িক বরখাস্ত করে দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হচ্ছে- শিল্প পুলিশ-১ এর আশুলিয়া জোনের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মুকবুল হোসেন, তার সহযোগী বিপ্লব হোসেন, স্বপন হোসেন ও হাসমত আলী শেখ।
মুকবুল হোসেনের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানাধীন। সে নিজেকে ডিবি পুলিশের ওসি ও তার সহযোগীরা সদস্য পরিচয় দিতো। তাদের কবল থেকে উদ্ধারকৃতরা হচ্ছে- শামীম হোসেন, রায়হান, আতিয়ার ও মেহেদী হাসান।
আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ( ওসি) আবদুল আউয়াল জানান, ভোরে আমাদে কাছে সংবাদ আসে ডিবি পুলিশের একটি টিম মানুষকে জিম্মি করে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছে। সে প্রেক্ষিতে আমরা বাইপাইল এলাকায় অবস্থান নেই। পরে একটি প্রাইভেট কারে আসা নারীর কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেওয়ার সময় হাতেনাতে তাদের আটক করা হয়। তখন কৌশলে দুইজন পালিয়ে যায়।
পরে আটককৃতদের তথ্য যাচাই করে জানা যায় ডিবির ওসি পরিচয় দেওয়া ব্যক্তি আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর এএসআই মকুবল হোসেন। এসময় ভূয়া ডিবি সদস্য পরিচয় দেওয়া ৪জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, শিল্প পুলিশের এএসআই একটি ভুয়া ডিবির টিম সাজিয়ে আশুলিয়ার বিভিন্ন স্থানে তাদের টার্গেটকৃত মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে চাদাঁবাজি করে আসছিল। তাদের এ চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
তাদের ব্যবহৃত জব্দ হাইয়েজ মাইক্রোবাসটির ( ঢাকা মেট্রো চ-৫৬-১৫৯৬) মালিক আশুলিয়া থানার ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি লতিফ মন্ডলের চাচাতো ভাই তাজুল মন্ডল।
তবে আওয়ামী লীগ নেতা লতিফ মন্ডল দাবি করেন, মাইক্রোবাসটি আমার চাচাতো ভাইয়ের। গাড়িটি রেন্ট-এ-কারে চলে। অপরাধীরা চালকে ভুলবুঝিয়ে ভাড়া নিয়ে থাকতে পারে। ভুক্তভোগী শামীম হোসেন জানান, ভোরে বাইপাইল স্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ একটি মাইক্রোবাস সামনে দাড়ায়। পরে কয়েকজন ব্যক্তি গাড়ি থেকে নেমে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তার কাছে মাদক রয়েছে বলে তল্লাশী শুরু করে।
এসময় তাকে জোরপূর্বক মাইক্রোবাসে উঠিয়ে ২০হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে মাদক মামলায় আসামী করে আদালতে চালান করে দিবে বলে জানান তারা। তখন বাধ্য হয়ে তার মা চম্পা বেগম বিকাশের মাধ্যমে ১০হাজার টাকা পাঠায়। পরে আরও ১০ হাজার টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এসময় তার মা থানা পুলিশকে অবহিত করলে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার হন।
ঢাকা শিল্প পুলিশ-১ এর পরিচালক সানা শামিনুর রহমান জানান, বিষয়টি জানার পর মুকবুলকে সাময়িক বরখাস্থ করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনাটি তদন্তে শিল্প পুলিশের এএসপি জানে আলম ও পরিদর্শক বাবর আলীকে নিকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ২৪ঘন্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিদেন দিতে বলা হয়েছে।
এঘটনায় আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ