Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আধুনিক চামড়া শিল্প নগরী গড়ার সময় বাড়লো দুই বছর

একনেকে ৪৯৭৯ কোটি টাকার ৮টি প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৭, ৭:৪৬ পিএম

সাভারে আধুনিক চামড়া শিল্প নগরী স্থানান্তরের মেয়াদ আবারও দুই বছর বাড়িয়েছে সরকার। এজন্য তৃতীয় বারের মতো প্রকল্পে সংশোধনী আনা হয়েছে। এই সংশোধনী প্রস্তাবসহ মোট ৮টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৪ হাজার ৯৭৯ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। এর সরকারী তহবিল থেকে ৪ হাজার ৬৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থার তহবিল থেকে ৫১ কোটি ১৬ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৮৫৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম, ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য জুয়েনা আজিজ পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা সচিব কে এম মোজাম্মেল হক এবং আইএমইডি সচিব মো. মফিজুল ইসলাম প্রমুখ।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, চামড়া শিল্পের উন্নয়নে দেশে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির জন্য তাগিদ দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক্ষেত্রে বেসরকারি উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে সরকার জমির ব্যবস্থা করবেন। এছাড়া অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর আওতায় যেসব রাস্তা বা বাঁধ তৈরি হবে সেগুলো পাশে জলাধার এবং বনায়নের তাগিদও দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে দেশের সব মেডিকেল কলেজ বিশেষ করে সেনাবাহিনী পরিচালিত মেডিকেল কলেজগুলোতে নিউক্লিয়ার মেডিসিন সেবার মান সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা
একনেকের একটি সূত্র জানায়, ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী পুকুর ও খালে যাতে ঠিক মতো মাটি কাটা হয় সেদিকে নজর রাখার তাগিদ দিয়েছেন। একই সঙ্গে অর্থ ব্যয়ে বিশেষ সতর্ক হতে হবে। যাতে পানিতেই সব টাকা না যায়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে গিয়ে ধলেশ্বরী নদীকে দূষণ করা হবেনা। সরকার টেকসই চামড়া শিল্পের বিষয়ে আন্তরিক। ট্যানারি মালিকদের সহযোগিতা নিয়েই সাভারে চামড়া শিল্প স্থানান্তর করা হচ্ছে। এবার নতুন করে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হলেও ব্যয় বাড়ানো হয়নি। শিল্প কারখানা স্থানান্তরকরণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। ২০০৩ সালে এটি শুরু হলেও বর্তমান সরকারের আন্তরিকতার কারণে এটি দ্রুত গতিতে চলছে। এবার আশা করছি নির্ধারিত সময়েই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী চাচ্ছেন এ শিল্পনগরীর কাছে শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য যাতে আবাসন প্রকল্প নেয়া যায়।
একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, ক্ষুদ্রাকার পানি সম্পদ উন্নয়ন (২য় পর্যায়) প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২৮৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। এছাড়া টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর উপজেলার অর্জুনা নামক এলাকাকে যমুনা নদীর ভাঙ্গন হতে রক্ষার্থে নদী তীর সংরক্ষণ,ব্যয় ২৮১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ওয়েস্ট জোন এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও পরিবর্ধন, ব্যয় ১ হাজার ২৪৯ কোটি ৫ লাখ টাকা। চামড়া শিল্প নগরী, ঢাকা (৩য় সংশোধিত), ব্যয় ১হাজার ৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। দেশের ৮টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসে ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড এ্যালায়েড সায়েন্সেস স্থাপন,ব্যয় ৫৮২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। সৈয়দপুর-নীলফামারী মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ, ব্যয় ২২৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। নওগাঁ-আত্রাই-নাটের মহাসড়কে অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ, ব্যয় ২০১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। জয়পুরহাট- আক্কেলপুর-বদলগাছী এবং ক্ষেতলাল-গোপিনাথপুর-আক্কেলপুর জেলা মহাসড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতিকরণ প্রকল্প, এটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
ব্রিফিংএ জানানো হয়, ইতিমধ্যেই ৯২টি কারখানা সাভারে স্থানান্তরিত হয়েছে। বাকিগুলোও পর্যায়ক্রমে যাচ্ছে। প্রকল্পটি মোট ১৭৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ২০০৩ সালের জানুয়ারি হতে ২০০৫ সালে ডিসেম্বরে বাস্তবায়নের জন্য ২০০৩ সালে হাতে নেয়া হয়। এরপর শিল্পমন্ত্রণালয় প্রকল্প ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে মেয়াদকাল এক বছর বৃদ্ধি করে ২০০৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে পরিকল্পনা কমিশন ব্যয় বৃদ্ধি করে ছাড়া ৬ মাস করা হয়। পরবর্তীতে প্রকল্পের অনুকূলে প্রস্তাবিত প্রকল্প সাহায্যের সংস্থান না হওয়ায় অর্থায়নের ধরন পরিবর্তন করে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে মোট ৫৪৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকায় ২০০৩ সালের জানুয়ারি হতে ২০১০ সালের জুনে বাস্তবায়নের জন্য প্রথম সংশোধন করা হয়। প্রকল্পের গুরুত্বপূর্ণ কাজ পিইটিপি, ডাম্পিং ইয়ার্ড এবং পানি উত্তোলন, পরিশোধন ও সরবরাহ ব্যবস্থার কাজ ২০১০ সালে জুনের মধ্যে সমাপ্ত করা সম্ভব না হওয়ায় পরিকল্পনা কমিশন প্রকল্পটির মেয়াদ পুনরায় ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া আর ২ বছর বৃদ্ধি করা হয়। পরবর্তীতে একনেক ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট প্রকল্পটির দ্বিতীয় সংশোধন ১ হাজার ৭৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০০৩ সালের জানুয়ারি হতে ২০১৬ সালের জুনে অনুমোদিত হয়। সর্বশেষ পরিকল্পনা কমিশন ব্যয় বৃদ্ধি ছাড়া প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর অর্থাৎ জুন ২০১৭ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। এখন ২০১৯ সালের জুন পর্যন্ত ২ বছর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ