পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
একাডেমিক কোনো শিক্ষা না থাকলেও প্রবল ইচ্ছা এবং চেষ্টায় যে কেউ হতে পারে আলোকিত। যশোরের শার্শা উপজেলার মোটর সাইকেল মেকানিক মিজান তার দৃষ্টান্ত। কঠোর পরিশ্রম ও প্রবল আগ্রহে মিজান এখন দেশসেরা আবিস্কারক ও উদ্ভাবক হতে যাচ্ছেন। নতুন নতুন চিন্তা আর গবেষণায় এখন তার আবিস্কারের সংখ্যা ৮ টি।
১৯৭১ সালরে ৫ মে শার্শা উপজলোর নজিামপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ মিজানুর রহমান পিতা-মাতার ৬ সন্তানরে মধ্যে মিজান ৫ম। দারিদ্রতার কারণে লেখাপড়া শিখতে পারেননি মিজান। ৮/৯ বছর বয়সেই বেঁেচ থাকার তাগিদে নেমে পড়েন মজুরের কাজে। মাঠে শ্যালো মেশিন চালানো এবং মেরামতের কাজ করেন মিজান। পরর্বতীতে নাভারন বাজারে একটি মোটর সাইকেলের গ্যারেজে কাজ পান তিনি। সেখান থেকেই তার মোটর মেকানিক হিসেবে র্কমজীবন শুরু হয় তার। র্বতমানে র্শাশা বাজারে ভাই ভাই ইঞ্জিনিয়ারিং ওর্য়াকসপ নামে একটি মোটর সাইকেলের গ্যারেজ রয়েছে তার। ছোটবেলা থেকেই তার শখ ছিল নতুন কিছু করা, নতুন কিছু জানা। তবে মেকানিক হেসেবে তার ইঞ্জিন তৈরি করতে প্রবল আগ্রহ ছিল।
মিজানের আবিষ্কার
মিজান প্রথমে উদ্ভাবন করনে হাফ ক্রানসেপ্ট দিয়ে একটি আলগা ইঞ্জিন। এই ইঞ্জিনের সকল যন্ত্রপাতি দেখা যেত বাইরে থেকে। এ ইঞ্জিনটি একবার জ্বালানি তেল দিয়ে চালু করলে পরর্বতীতে আর তেলে লাগতো না। ইঞ্জিনের সৃষ্ট ধোঁয়া থেকে জ্বালানি তৈরি করে নিজে নিজে চলতো ইঞ্জিনটি।
ঢাকার তাজরিন গার্মেন্টস এ ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে শতাধিক শ্রমিকের প্রাণহানির পর মিজান দ্বিতীয় গবষণা করে উদ্ভাবন করনে স্বয়ংক্রিয় অগ্নিনির্বাপন যন্ত্র, যা বাসা বাড়ি, কলকারখানা, অফিস-আদালতে আগুন লাগলে যান মালের ক্ষয়ক্ষতি রক্ষার্থে ৫ থেকে ১০ সেকেন্ডের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে আগুন নেভাতে শুরু করে। এটি বিদ্যুত্ না থাকলেও চলবে। এই যন্ত্রটি অল্প জায়গায় রাখা যায়। কোনো জায়গায় আগুন লাগলে যন্ত্রটি তার তাপমাত্রা নির্ণয়ক যন্ত্রের মাধ্যমে আগুন’র অবস্থান নিশ্চিত করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলার্ম ও লাইট অন করে দেয়। তারপর একইসাথে সংযুক্ত মোবাইল থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে ফোন করে দেয়, পাশাপাশি যন্ত্রটি পানির পাম্পকে সুইচ অন করে দেয়। যা আগুনের অবস্থান নিশ্চিতের ৫/৭ সেকেন্ডের মধ্যেই সম্ভব হয়। অতঃপর পানির পাম্প’র সাথে সংযুক্ত পাইপের মাধ্যমে আগুনের অবস্থান পৌঁছে দেয় এবং অসংখ্য ছিদ্রযুক্ত ফাঁপা বলয়ের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফলে আগুন নিভে যায়। এটি উদ্ভাবনির পর ২০১৫ সালে যশোর জেলা স্কুেলর একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় মিজান এটি প্রর্দশন করে প্রথমস্থান অধিকার করেন। পরর্বতীতে এটি বিভাগীয় এবং জাতীয় র্পযায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলায় প্রথম ও দ্বিতীয়স্থান অধিকার করেন। দেশে পেট্র্ল বোমায় যখন মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছিল ঠিক সে সময়ে মিজান উদ্বাবন করেন তার তৃতীয় উদ্ভাবন অগ্নিনিরোধ জ্যাকেট। এ জ্যাকেট পরে ড্রাইভার বা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা নিরাপদে কাজ করতে পারবেন। এতে করে আগুনের মাঝে গিয়ে সম্পদ রক্ষা করার সময় তার শরীরে আগুন র্স্পশ করবে না। তার চর্তুর্থ উদ্ভাবন অগ্নিনিরোধ হেলমেট। এটি ব্যবহার করলে র্দুঘটনার আগুনে গলার শ্বাসনালি পুড়বে না। তার পঞ্চম উদ্ভাবন হলো প্রতিবন্ধীদের জীবন-মান উন্নয়নে মোটরকার। এটা বিদ্যুত্ বা পেট্র্ল চালিত।
কৃষকদরে জন্য স্বয়ংক্রিয় সেচ যন্ত্র উদ্ভাবন হলো তার ষষ্ঠ উদ্ভাবন। কৃষকরা দূর-দূরান্তরে মাঠে জমিতে পানি দিতে আর ক্ষেতে যেতে হবে না। বাড়ি বসেই সেচযন্ত্রটি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বন্ধ বা চালু করতে পারবেন। তাছাড়া এ যন্ত্রটি জমিতে পানির প্রয়োজন হলে নিজে নিজেই চালু হয় এবং পানির প্রয়োজন না থাকলে এটি একা একাই বন্ধ হয়ে যায়। দেশীয় প্রযুক্তিতে মিজান তার সপ্তম উদ্ভাবন করেছেন ফ্যামেলি মোটরযান। ব্যবহারযোগ্য এ কার এলাকার মানুষের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। মিজানরে অষ্টম উদ্ভাবনে রয়েছে পরিবেশ সেফটি যন্ত্র। এটি পরিবেশ রর্ক্ষাথে বহুমুখী কাজ করে থাকে। যন্ত্রটি বাড়ি, অফিস বা কলকারখানায় ময়লা পরিষ্কারের কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে। হাতের র্স্পশ ছাড়াই এ যন্ত্রটি পরিষ্কর করার কাজে ব্যবহার হয়। এ যন্ত্রটি উদ্ভাবনরে পর ২০১৬ সালের ৫ জুন জাতীয় পর্যায়ে মিজান পরিবেশ পদক লাভ করনে। জেলা, বিভাগ ও জাতীয় র্পযায়ে মিজান এ র্পযšত মোট ১৭টি সাফল্য সনদ ছাড়াও পয়েছেনে অসংখ্যা ক্রেস্ট ও সাফল্য পুরস্কার।
এরইমধ্যে মিজানের আবিষ্কৃত দেশীয় প্রযুক্তির মোটরকার প্রধানমন্ত্রীর র্কাযালয়ের এ টু আই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হয়েছে। গ্রামীণ স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নে ছোট ছোট অ্যাম্বুলেন্স তৈরি করার পদক্ষপেও নেওয়া হয়েছে।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার আ : সামাদ জানান, বিশ^বিদ্যালয়ে না পড়েও একজন অশিক্ষিত লোক বেশ কিছু নতুন জিনিস আবিস্কার করে রীতিমত সাড়া ফেলেছে। আমরা তাকে উৎসাহিত করেছি। সে ডিজিটাল মেলাসহ জাতীয় পর্যায়ে বেশ কয়েকটি পুুরস্কার পেয়েছে।
২০১৭ সালে পরিবেশে বান্ধবযন্ত্র আবিষ্কারে বিশ্ব পরিবেশ পদক নির্ধারিত হওয়ায় আগামী ৫ জুন মিজানকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদক দেয় পরিবেশে অধিদপ্তর। মিজান জানান, তার স্বপ্ন দেশ ও জাতীর কল্যাণে কাজ করা। তার র্বতমান উদ্ভাবন গবষেণা চলছে দুষতি বায়ু শোধন যন্ত্র আবিস্কারের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।