পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুই মামলার পরবর্তী শুনানি ৯ নভেম্বর : স্থায়ী জামিন আবেদন নামঞ্জুর
বিএনপির চেয়ারপাসন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, শেখ হাসিনার কাছে জাদুর কাঠি আছে। সেই জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি-অনিয়ম-চাঁদাবাজিসহ সব মামলা সরকারে আসার পর উঠে গেছে অথবা খারিজ হয়ে গেছে। আমাদের কারো হাতেই তেমন কোনো জাদুর কাঠি নেই। কাজেই আমাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলো সচল হয়েছে এবং আরো নতুন নতুন মামলা হয়েছে।
অথচ দেশে কত গুরুত্বপূর্ণ মামলা বছরের পর বছর ঝুলছে। শুধু আমার বিরুদ্ধে মামলাগুলো রকেটের গতিতে ছুটে চলছে। যেন কেউ পেছন থেকে তাড়া করছে শিগগির শেষ কর, একটি রায় দাও। অনেক মন্ত্রীদের বলতে শুনেছি, আমাকে দন্ড দিয়ে কাশিমপুর কারাগারে পাঠাবে’ যোগ করেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আদালতে গতকাল বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর আগে গত ২৬ অক্টোবর রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতে দ্বিতীয় দিনের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এর পর আদালত মামলার শুনানির জন্য এ দিন ধার্য করেন। খালেদা জিয়া বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বকশীবাজারের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের বিশেষ আদালতে পৌঁছান। আদালতে হাজিরা দেয়ার পর তাঁর আইনজীবীরা স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। পরে এই আবেদনের ওপর শুনানি শুরু হয়। শেষে বিচারক স্থায়ী জামিনের আবেদন নাকচ করে দিয়ে মামলার আগামী শুনানির দিন ৯ নভেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন।
খালেদা জিয়ার হাজিরা উপলক্ষে এদিন আদালতে উপস্থিত হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সিনিয়ার যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন, সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার, জিয়া উদ্দিন জিয়া, এম হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী এদুটি মামলার নয়জনের পুনজেরা দুজনের জেরা-সংক্রান্ত এবং মামলাটি স্থগিত চেয়ে করা আবেদন হাইকোর্টের আপিল বিভাগে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে বলে আদালতকে অবহিত করেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের আবেদনের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশেষ আদালতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখার আবেদন করা হয়।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, খালেদা জিয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির নেত্রী। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ, বয়স্ক। এই বিবেচনায় তিনি স্থায়ী জামিন পেতে পারেন। দুদকের পক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধিতা করা হয়। দুদকের আইনজীবী বলেন, খালেদা জিয়া জামিনের অপব্যবহার করেছেন। কাজেই তাঁকে স্থায়ী জামিন দেয়া উচিত নয়। এসময় আদালত বলেছেন, ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) যেভাবে আছেন সেভাবেই থাকবেন। পরবর্তী শুনানির জন্য ৯ নভেম্বর দিন ধার্য করেন বিচারক।
এ ছাড়া খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এই আদালতের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে তা পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে করা আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম মুলতবি রাখার আবেদন করেন। আদালত তা নাকচ করে দিয়েছেন।
এরপর দুপুর ১টার দিকে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন শুরু করেন। তিনি ১৫ মিনিটের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেয়ার পর মুলতবি প্রার্থনা করেন।
আত্মপক্ষ সমর্থনের সময় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আরো বলেন, আত্মপ্রচারের জন্য আমি এই বক্তব্য দিচ্ছি না। বাড়তি কোনো সুবিধা ও মার্যাদা দাবি আদায়ের কোনো অভিপ্রায়ও অমার নেই। আমি শুধু বলতে চাই, একই মামলায় অভিযুক্ত হয়ে আরেকজন নেত্রী যে সুবিধা ভোগ করছেন, আমি কখনো আদালতের কাছে তেমন সুবিধা দাবি করিনি। দেশের সাধারণ সিনিয়র সিটিজেন হিসেবে অধিকার পেলেই আমি খুশী।
খালেদা জিয়া বলেন, ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতারা হুমকি দিচ্ছে, আমাকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিদায় করে দেয়া হবে। অসৎ উদ্দেশ্যে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সরাতে আমাকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার নীলনকশা প্রণয়ন করছে ক্ষমতাসীনরা। তিনি আরো বলেন, মাননীয় আদালত, প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের অনেক সদস্য এবং শাসক দলের অনেক নেতা আমাকে দোষী সাব্যস্ত করে বক্তব্য দিয়েছেন। আমাকে অভিযুক্ত করে বিরূপ প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁরা এসব মামলার রায় কী হবে, তা আগাম জানেন। অনেকে তাঁদের বক্তব্যে মামলায় আদালতকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। আমাকে রাজনীতি থেকে বিদায় করে দেয়া হবে বলে হুমকি দিচ্ছেন। সে বিষয়ে এরই মধ্যে সংবাদমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। সরকারের উচ্চ মহলে তৎপরতায় বক্তব্য ও বিবৃতি থেকে এসব স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়। সেসব কারণে দেশবাসীর কাছে গুরুতর সন্দেহ রয়েছে, আমার বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ন্যায়বিচার হবে না। বক্তব্য দিয়ে কিছু সময় থেমে খালেদা জিয়া বলেন, আমার বক্তব্য কিন্তু শেষ হল না। আগামী তারিখে আমি আরও কথা বলব। এখন আমি ক্লান্ত ও অসুস্থ।
এর আগে গত ২৬ অক্টোবর দ্বিতীয় দিনের মতো আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। গত ১৯ অক্টোবর দুই মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বিশেষ আদালতে প্রথম বক্তব্য উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়া। ওই দিন জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিশেষ আদালতে আত্মসমর্পণ করে এক লাখ টাকার মুচলেকায় জামিন পান সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।