পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, মহান আল্লাহ তা’য়ালার পবিত্র ৯৯টি নামের কোনোটির সঙ্গেই হিংসার কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলামের আসল অর্থ হলো শান্তি। গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে বিশ্ব সুফি ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। চার দিনের অনুষ্ঠানের সূচনায় সন্ত্রাসবাদের তীব্র সমালোচনাও করেছেন মোদি। একই সঙ্গে মোদি বলেন, ইসলামের বৈচিত্র্য হলো ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। ওই অনুষ্ঠানে দুইশ’ জনেরও বেশি ধর্মীয় নেতা এবং শিক্ষাজগতের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
অল ইন্ডিয়া উলামা অ্যান্ড মাসাইক বোর্ডের তরফে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি দিল্লির সুফি দরগায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রসঙ্গত, গরুর গোশত আর মুসলিমবিদ্বেষ নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী বিজেপি সরকার। ভারতের ভেতর থেকেই এর প্রবল প্রতিবাদ এসেছে। প্রতিবাদস্বরূপ দেশের প্রথম সারির লেখক-লেখিকা থেকে শুরু করে বলিউডের অভিনেতা, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ অনেকেই পুরস্কার ও খেতাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। কেউ আবার সরাসরি দাবি করে বলেছেন, এ দেশে মুসলিমদের থাকার মতো পরিস্থিতিই নেই। মুসলিম-বিরোধী মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দলের প্রভাবশালী একাধিক নেতা-মন্ত্রী। কিন্তু মোদি নীরব থেকে কার্যত তাতে সমর্থন জুগিয়েছেন। খবরে বলা হয়, বিজেপির একাধিক মন্ত্রী বহুবার বলেছেন, ইসলাম মানেই সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর। কেউ গরুর গোশত খেতে চাইলে তিনি যেন পাকিস্তানে চলে যান, এমন হুমকিও এসেছে কারও কারও কাছ থেকে। আবার অনেককে অন্য দেশে চলে যাওয়ার কথাও বলেছেন। তবে মোদি বললেন, সন্ত্রাসের নানা উদ্দেশ্য থাকে, যার পেছনে কোনো যুক্তিই খাটে না। আর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ কোনো বিশেষ ধর্মের বিরুদ্ধে যুদ্ধ নয় কিন্তু। তা কখনওই হতেই পারে না। শুধু ইসলামই নয়, সুফি সম্মেলনে এসে সর্বধর্ম সমন্বয় নিয়ে কথা বলেছেন মোদি। তিনি বলেছেন, হিন্দু, মুসলিম, খ্রিস্টান, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পারসি, আস্তিক, নাস্তিক Ñ সবাই ভারতের অংশ। এর পরেই পবিত্র কোরআনের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কোরআনেই বলা আছে, কেউ যদি একজন মানুষকে হত্যা করে, তা হলে তা গোটা মানবতাকে হত্যা করার শামিল। তাছাড়া আল্লাহর ৯৯ নামের মধ্যে কোনোটিই হিংসার পরিচায়ক নয়। মূলত ইসলাম হচ্ছে শান্তির ধর্ম। মোদির মতে, বর্তমান বিশ্বেমানবতাই সঙ্কটের মুখে। সুফি সম্মেলনের প্রশংসা করে মোদি বলেন, বিশ্বে যে দর্শনের অবদান সবচেয়ে মহান তা হলো সুফিবাদ। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদ শুধু বিভাজিত করে আর ধ্বংস করে। সন্ত্রাসবাদের কারণে এই মুহূর্তে বিশ্ব কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এমন সময়ে সুফিবাদের তত্ত্ব সমগ্র বিশ্বে খুবই প্রাসঙ্গিক।
মোদি জানান, গত বছরে ৯০টি দেশ সন্ত্রাসবাদের খপ্পরে পড়েছে এবং সিরিয়ার যুদ্ধক্ষেত্রে শতাধিক দেশের পিতামাতা সন্ত্রাসবাদের কারণে তাদের সন্তানদের হারাচ্ছেন। যদিও সন্ত্রাসবাদ বিশ্বসমাজের সর্বত্র ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে দাবি করেছেন ভারতের প্রশাসনিক প্রধান। সেইসঙ্গে তিনি বলেছেন যে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই কোনো ধর্মের বিরুদ্ধে লড়াই নয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই মানে মানবিকতার গুরুত্বের সঙ্গে অমানবিকতার প্রভাবের লড়াই। ভারত মাতা কি জয় নিয়ে চলতে থাকা বিতর্ক নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের দেশে বহু ধর্মের মানুষ বাস করেন। অনেকে আছেন যারা ধর্মে বিশ্বাসী নন। সবাইকে নিয়েই আমাদের দেশ। এটাই আমাদের ঐতিহ্য ও সমাজের মূল ভিত্তি। কোনোভাবেই এটাকে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না। ভারতের এই বৈচিত্র্যময় বৈশিষ্ট্য গঠনে সুফিবাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলেও জানিয়েছেন মোদি। এনডিটিভি, হিন্দুস্তান টাইমস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।