পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কূটনৈতিক সংবাদদাতা : আফগানিস্তানে কর্মরত ব্র্যাকের দুই কর্মকর্তাকে অপহরণ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে আফগানিস্তানের কুন্দুজ এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্র্যাকের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা সাবেরা গুলরুখ। অপহৃতরা হলেন- আফগানিস্তানে কর্মরত ব্র্যাকের প্রধান প্রকৌশলী হাজী শওকত আলী (৫০) এবং প্রধান হিসাব কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম সুমন (৩৮)। সাবেরা গুলরুখ জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ফিল্ড ভিজিট শেষে প্রাইভেট কারে করে কুন্দুজ থেকে বাগলান শহরে যাওয়ার পথে ওই দুই কর্মকর্তাকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করা হয়। পরে স্থানীয় পুলিশ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দু’জনকে উদ্ধারের আশ্বাস দিয়েছে তারা। ইতিমধ্যে তাদের বহনকারী ওই গাড়িতে থাকা এক আফগান নাগরিক ও চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান সাবেরা গুলরুখ। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকায় ব্র্যাকের মিডিয়া ম্যানেজার মাহবুবুল আলম কবির জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে কুন্দুজ থেকে বাগলান যাওয়ার পথে ব্র্যাকের তিন কর্মকর্তাকে অপহরণ করে অস্ত্রধারীরা। তাদের মধ্যে দুইজন বাংলাদেশী এবং একজন আফগান। কিছু দূর যাওয়ার পর আফগান কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। তবে এর সঙ্গে তালেবান জঙ্গিরা জড়িত কি না- সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ব্র্যাকের স্থানীয় কার্যালয়ের পক্ষ থেকে স্থানীয় পুলিশ ও আফগান কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে এবং তাদের সাহায্য নেয়া হয়েছে।
এঁদের মধ্যে হাজি শওকতের বাড়ি পাবনা শহরে ও সিরাজুলের বাড়ি পাবনা সদর উপজেলার জুবলিয়া পুরাতপাড়া এলাকায়।
ঢাকায় ব্র্যাকের কমিউনিকেশন্স হেড রনি মির্জা জানান, শুক্র ও শনিবার আফগানিস্তানে সাপ্তাহিক ছুটি। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে নওরোজ বা নববর্ষের ছুটি। এ কারণে দেশটির সরকারি দপ্তরগুলো কার্যত বন্ধ রয়েছে। তবে আফগান পুলিশ ঘটনার পর থেকেই কাজ করে যাচ্ছে। রনি মির্জা আরো জানান, কাবুল থেকে ব্র্যাকের কর্মকর্তারা কুন্দুজের উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছেন। তারা সেখানে পৌঁছলে ঘটনা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানা যাবে। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও বিষয়টি জানানো হয়েছে, বলেন তিনি।
আমাদের পাবনা জেলা সংবাদদাতা জানান, অপহৃত সুমনের বাবা কেজেম উদ্দিন খান বলেন, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাবুল ব্র্যাক অফিস থেকে ফোনে ছেলের অপহরণের খবর তাকে জানানো হয়। এরপর থেকে বাড়িতে কান্নার রোল শুরু হয়েছে। ছেলেকে দ্রুত উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও বাংলাদেশ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সুমনের চাচাতো ভাই আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের পরিচালক আবদুল খালেক খান বলেন, গত ১০ বছর ধরে সুমন ব্র্যাকে কর্মরত। আফগানিস্তানে রয়েছে প্রায় ৪ বছর। সেখানে সে আঞ্চলিক হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত। তিনি আরো জানান, দুই বছর আগে পাবনা সরকারি মহিলা কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী লতা পারভীনকে (২২) বিয়ে করেন সুমন। তার অপহরণের সংবাদ পেয়ে মুষড়ে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক আফগানিস্তানে কাজ শুরু করে ২০০২ সালে। দেশটির ৩৪টি প্রদেশে ব্র্যাকের প্রায় ৪শ’ অফিসে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অবকাঠামো উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের কাজে রয়েছেন বাংলাদেশী কর্মীরা। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে পুনর্গঠনের কাজে থাকা ব্র্যাক কর্মীরা এর আগেও বেশ কয়েকবার আক্রান্ত হয়েছেন। ২০১২ সালের মে মাসে ঘোর প্রদেশে ব্র্যাকের একটি কার্যালয়ে ঢুকে এক কর্মকর্তাকে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। তার আগে ২০১০ সালের ডিসেম্বরে ব্র্যাকের এক প্রকৌশলীকে হত্যা করে অপহরণ করা হয় ৬ জনকে। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকধারীদের গুলিতে প্রাণ যায় আরেক ব্র্যাক কর্মকর্তার। ওই বছর নূরুল ইসলাম নামে এক ব্র্যাক কর্মকর্তা অপহৃত হওয়ার ৮৩ দিন পর মুক্তি পান। ২০০৮ সালের অক্টোবরে গজনি প্রদেশ থেকে অপহৃত হন দুইজন। ১০ দিন পর তাদের মুক্তি দেয়া হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।