পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোট নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, মানবিক কারণেই রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। তবে রোহিঙ্গাদেরকে বাংলাদেশে বেশিদিন আশ্রয় দেয়া সম্ভব নয়। নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত নিয়ে তাদেরকে নাগরিকত্ব ও তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি আহবান জানান খালেদা জিয়া। বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদেরকে নিজ দেশে পাঠাতে সরকারের তৎপরতা যথেষ্ট নয় এবং এব্যাপারে সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। গতকাল (সোমবার) দুপুরে উখিয়ার পালংখালী শফিউল্লাহকাটা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের মাঝে ত্রাণ বিতরণকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, রোহিঙ্গাদের ফেরাতে যাদের সঙ্গে কথা বলে সমন্বয় করা দরকার বিএনপির পক্ষ থেকে সেই উদ্যোগ নেয়া হবে। এজন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের মাধ্যমে মিয়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে। মিয়ানমারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে তিনি আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়ের প্রতি আহবান জানান। পাশাপাশি এবিষয়ে তিনি সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন। কক্সবাজার থেকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পর্যন্ত হাজার হাজার নেতা-কর্মীদের ব্যাপক শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও ফুলেল শুভ্চ্ছোয় সিক্ত হয়ে উখিয়ার রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পে পৌঁেছছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
তিনি গতকাল সকাল সাড়ে ১১ টায় কক্সাবজার হিলটপ সার্কিট হাউজ থেকে গাড়িবহর নিয়ে উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। গত রাত ৮টায় বেগম জিয়া সড়কপথে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পৌঁছান। তিনি চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের পথে পথে হাজার হাজার নেতা কর্মীদের শ্রদ্ধা-ভালবাসা ও ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিসিক্ত হন। কক্সবাজার থেকে উখিয়া পথে পথেও বেগম জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে রাস্তার দু’পাশে দাঁিড়য়েছেন হাজার হাজার নেতা-কর্মী। গতকাল সোমবার বেলা ১ টার দিকে উখিয়ার শফি উল্লাহকাটা শরনার্থী ক্যাম্পে ত্রাণ বিতরণ করেন। এর আগে বিশাল গাড়ীর বহর নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছেন তিনি। শফি উল্লাহকাটা ক্যাম্পের পরে বালুখালী-২ তে ত্রাণ দেন খালেদা জিয়া।এর আগে বিএনপির ৪৫ ট্রাক ত্রাণ সেনা বাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। উখিয়া কলেজে নির্মিত সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্পে ১‘শ সাড়ে সাত টন ত্রাণ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেন বিএনপির স্থায়ী কমিরি সদস্য মির্জা আব্বাস।
ত্রাণ বিতরণ শেষে বালুখালি পান বাজারে অবস্থিত ড্যাবের মেডিকেল ক্যাম্প পরিদর্শন ও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন খালেদা জিয়া। ক্যাম্পে সন্তান সম্ভাবা পাঁচ হাজার নারীকে প্রয়োজনীয় সামগ্রী, পাঁচ হাজার শিশুকে শিশুখাদ্য বিতরণ করবেন তিনি।
গত ১২ আগস্ট থেকে ড্যাবের ওই ক্যাম্পে এ পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গাকে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে। ড্যাব মহাসচিব ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের নেতৃত্বে পরিচালিত ক্যাম্পে দক্ষ মেডিকেল টীম সার্বক্ষণিক নিয়োজিত রয়েছে।
উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ হাতে ত্রাণ দিতে সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে হিলটপ সার্কিট হাউজ থেকে বের হন বিএনপি চেয়ারপারসন গাড়ি বহর নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌছাঁন।
উখিয়ার ত্রাণ কার্যক্রম তদারক করছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি সরওয়ার জাহান চৌধুরী। ত্রাণ বিতরণ শেষে বিকেল তিনটার দিকে বেগম জিয়া চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে হন।
রবিবার রাত ৮টার দিকে কক্সবাজার হিলটপ সার্কিট হাউজে পৌঁছেন খালেদা জিয়া। এসময় বিশাল একটি মিছিলও তার গাড়িবহরের সঙ্গে কক্সবাজার সার্কিট হাউস পর্যন্ত আসে।
এদিন দুপুর সোয়া বারোটার দিকে কক্সবাজারের উদ্দেশে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউস ছাড়েন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এর আগে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের উদ্দেশ্যে শনিবার ঢাকা ছাড়েন তিনি।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর বেগম জিয়ার আগমণকে ঘিরে পুরো শহরে উৎসবের আমেজ তৈরী হয়। নেত্রীকে কাছ পেয়ে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সফরে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ডঃ খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শামসুজ্জামান দুদুসহ আরও অনেক নেতা রয়েছেন।
সব কিছু সমন্বয় করছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি লুৎফুর রহমান কাজল ও জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক হুইফ শাহজাহান চৌধুরী।
এদিকে বেগম খালেদা জিয়ার এই সফরটি রোহিঙ্গাদের প্রতি মানবিক কারণে হলেও কক্সবাজারের সর্বস্তরের জনসাধারণের কাছে ব্যাপক সাড়াঁ পড়েছে এই সফর। বেগম জিয়ার এই সফরে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা যেমন উজ্জীবিত হয়েছে, তেমনি ভাবে সর্বস্তরের মানুষের মাঝেও প্রভাব পড়েছে ব্যাপক।
চট্টগ্রামে ফেরার পথেও খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর ঘিরে নেতাকর্মীদের ভিড়
চট্টগ্রাম ব্যুরো জানান, রোহিঙ্গা শিবিরে ত্রাণ বিতরণ শেষে চট্টগ্রামে ফেরার পথেও খালেদা জিয়ার গাড়ির বহরে ছিল নেতাকর্মীদের ভিড়। গতকাল (সোমবার) সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে কক্সবাজার সার্কিট হাউস থেকে সড়ক পথে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তার গাড়ির বহর কক্সবাজারের চকরিয়া অতিক্রম করছিল। তাকে দেখতে মহাসড়কের দুইপাশে দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়। অনেক এলাকায় গভীর রাত পর্যন্ত লোকজন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকেন। কক্সবাজারের চকরিয়া, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, দোহাজারী, চন্দনাইশ, পটিয়া, কর্ণফুলীসহ বিভিন্ন এলাকায় দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদায় জানাতে নেতাকর্মীরা অপেক্ষা করছিলেন। চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রবেশ পথ কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউস এলাকায় অসংখ্য নেতাকর্মী বেগম জিয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।
উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে ত্রাণ বিতরণ শেষে কক্সবাজার সার্কিট হাউসে ফিরে এসে কক্সবাজার জেলা বিএনপি নেতাদের সাথে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে পৌঁছে চট্টগ্রামের নেতাদের সাথে তার অনুরূপ বৈঠক করার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে রাত্রিযাপন শেষে আজ (মঙ্গলবার) বেলা ১১টায় সড়ক পথে বেগম খালেদা জিয়ার ঢাকায় ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে। # র ই সেলিম ৩০/১০/১৭ইং
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।