পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বেরিয়ে স্বাধীনতার ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও স্বাধীন বাংলায় এখনো গরীব কেন এমন প্রশ্ন রেখে তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘আমাদেরকে এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে হবে’। তিনি বলেন, গত চার দশকেরও বেশি সময়ে দেশে দারিদ্র্যের হার কমেছে ঠিকই; কিন্তু বৈষম্য বেড়েছে। কিন্তু অর্থনীতির নিয়ম অনুযায়ী, শুধু দারিদ্র্য কমালেই হবে না। সঙ্গে আয় বৈষম্য কমাতে হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে হলে দারিদ্র্য যেমন কমাতে; তেমনি বৈষম্যও কমাতে হবে। দেশে রাজনৈতিক শান্তি বজায় রাখতে জঙ্গি, রাজাকার, ও তেঁতুল হুজুরদের কবরে পাঠাতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী। গতকাল সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ছয়দিনের উন্নয়ন মেলার দ্বিতীয় দিনে এসডিজি বাস্তবায়ন বিষয়ক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘স্বাধীন বাংলায় এখনো তেঁতুল হুজুর ও রাজাকাররা দাপিয়ে বেড়ায় কেন’। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নের পথে তেঁতুল হুজুর ও রাজাকাররা বড় অন্তরায় বলেও মন্তব্য করেন তথ্যমন্ত্রী।
‘গণমানুষের কণ্ঠস্বর: বাংলাদেশে এসডিজি বাস্তবায়ন শক্তিশালীকরণ’ শিরোনামের সেমিনারে পিকেএসএফ সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ এর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পিকেএসএফ ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল করিম, পিকেএসএফ-এর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ইউনিটের পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমেদ এবং বেসরকারি সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ ঘোষিত ১৫ বছর মেয়াদি এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে নিচু তলায় যারা বসবাস করে, তাদেরকে ক্ষমতায়ন করতে হবে। তাদের সম্পদ নিশ্চিত করতে হবে। একই সঙ্গে তাদের জন্য বাজার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। আপনি যতই ক্ষুদ্র ঋণ বিতরণ করেন; নিচের তলায় বসবাসরত গরিকদের ক্ষমতা ও বাজার ব্যবস্থায় তাদের প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করতে না পারলে লাভ হবে না। তথ্য মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার যখন ৩৬ কোটি বই বিনামূল্যে বিতরণ করছে, ২২ হাজার স্কুলে ল্যাব বসিয়েছে, তখন বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এটিকে অর্থনীতির জন্য ক্ষতিকর মনে করছে। তারা যাই মনে করুক, আমাদের অনেক লাভ হয়েছে।
তথ্য মন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন করতে হলে খাদ্য অধিকার ও সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা এই দুটো বিষয় সংবিধানে ঢুকাতে হবে। খাদ্য অধিকার ও সবার জন্য ইন্টারনেট সুবিধা দিতে না পারলে রাষ্ট্রকে জবাবদিহি করতে হবে। দারিদ্র্য থেকে ওপরে উঠতে হলে এই দুটির বিকল্প নেই। দেশে রাজনৈতিক শান্তি বজায় রাখতে হলে তেঁতুল হুজুর ও রাজাকারদের দেশ থেকে বিতাড়ন করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আর রাজাকার সমর্থিত সরকার আসতে পারবে না। তবে তিনি এ-ও মনে করেন, দেশে সমৃদ্ধি আনতে এবং বৈষম্য কমাতে দলবাজি, দুর্নীতি বন্ধ করা জরুরি। তিনি বলেন, আইনের ঊর্ধে কেউ নয়। আপনি চুরি করবেন, আর আদালতের বারান্দায় যাবেন না, তা হবে না। চুরি করলে দুর্নীতি করলে আপনাকে আদালতের বারান্দায় যেতেই হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে নীল সমুদ্র অর্থনীতিকে ব্যবহার করে এর সম্পদ আহরণ করে তা বিতরণ করার ওপর জোর দিতে বলেন তিনি। একই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের পর সভাপতির বক্তব্যে পিকেএসএফ সভাপতি কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, স্বাধীন বাংলায় যখন তেঁতুল হুজুর ও রাজাকাররা শক্তি সঞ্চার করেছিল, তখন আপনারা চুপ ছিলেন। সেজন্য তারা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। স্বাধীন বাংলায় এখনো গরীক কেন তথ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, দেশে এখনো ধান্দাবাজ আছে বলেই গরীব আছে। হলমার্ক কেলেঙ্কারির বিচার হয় না দেশে। ব্যাংকিং খাতে এতো কেলেঙ্কারি হলো, অথচ একটারও বিচার হয়নি। সে কারণে স্বাধীন বাংলায় এখনো গরীব বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আলোচনা পর্বে পিকেএসএফ-এর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন ইউনিটের পরিচালক ড. ফজলে রাব্বি ছাদেক আহমেদ অন্যান্য লক্ষ্য অর্জনের সঙ্গে সুপেয় পানি সরবরাহ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের সংকটের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। মহসিন আলী তার বক্তব্যে দারিদ্র্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। দেশের মাত্র ১০ ভাগ মানুষ সমগ্র দেশীয় সম্পদের ৩৮ ভাগ ভোগ করে। বিগত কয়েক বছরের দারিদ্র্যের হার কমলেও দেশে আয় বৈষম্য বেড়েছে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান পৃথিবীর বাজার অর্থনীতির বিশৃঙ্খলা থেকে সামাজিক অর্থনীতিতে রূপান্তরের একটি প্রক্রিয়া রয়েছে এই ভাবনার মধ্যে, যার মাধ্যমে ‘কাউকে বাদ দিয়ে নয়’ নীতিকে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।