Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলছে বৃক্ষনিধন

বগুড়ায় কৌশলী টেন্ডার প্রক্রিয়া

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে : | প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

একটি ‘কোটারি চক্র’ নিয়মিত ভাবে গাছ কেটে সাবাড় করছে, আর ওই সাবাড় প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে বগুড়ার বিভাগীয় বন কর্মকর্তারা লভ্যাংশ নিয়ে সন্তষ্ট থাকছেন। গাছ কেটে সাবাড় বা বৃক্ষ উজাড়ের মধ্যেই যেন সার্থকতা বগুড়া বন বিভাগের।
বগুড়ার বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নের রাস্তাঘাটে লাগানো সামাজিক বনায়নের সারি সারি গাছ, কিংবা বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভিতরে লাগানো বিভন্ন ফলজ, বনজ ও ভেষজ গাছের বাগানগুলো এখন আর নিরাপদ নয়। নাটোরের উত্তরা গণভবনের আদলে সম্প্রতি বগুড়ার সরকারি আজিজুল কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতরের অন্তত ৮৫টি গাছ কেটে সাবাড় হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি নাটোরের মতো মিডিয়া ফোকাস না হওয়ায় মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান আকন্দ নামের ক্ষুব্ধ এক ফেসবুক ইউজার তার ফেসবুকের ওয়ালে লিখেছেন ‘আমি গত ২৩ আগষ্ট ২০১৭ ইং তারিখে আমার ফেসবুক আইডিতে ‘কেটে ফেলা হয়েছে গাছ, প্রশাসন জানেনা’ শিরোনামে একটি লেখা পোষ্ট করেছিলাম এবং ভেবেছিলাম উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ সরকারি আজিজুল হক কলেজ, বগুড়া -এর গাছ চোর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে জেগে উঠবে ছাত্র সমাজ কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে ৪৫ দিনেও এর কোন প্রতিবাদ হয়নি। সেই কারণে আমি আব্দুল মান্নান আকন্দ আমার বিবেকের তাড়নায় এই জঘন্য কাজটির প্রতিবাদ করছি এবং আমি এই জঘন্য কাজটির বিচার না হওয়া পর্যন্ত প্রতিবাদ করে যাব।’ তিনি এ প্রসঙ্গে তার আরেকটি ফেসবুক পোষ্টে সংবাদ কর্মিরা কেন সরব নন, দুঃখ করে তা’ জানতেও চেয়েছেন। শুধু তাই তিনি কাটা গাছের ছবি সহ প্রতিবাদ মুলক পোষ্টার দিয়ে বগুড়া শহরের দেওয়াল গুলো ভরিয়ে ফেলেছেন ।
কিন্তু তাতে বগুড়ার বিভাগীয় বন কর্মকর্তাদের ইচ্ছাকৃত দিবা নিদ্রা ভঙ্গ হয়েছে মর্মে কোন আলামত মিলেনি। বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজের ক্যাম্পাসসহ বগুড়ার নন্দিগ্রাম, বগুড়া সা›Íাহার সড়ক সহ বেশ কিছু সামাজিক বনায়নের লাগানো গাছ কাটা ও বিক্রি নামকা ওয়াস্তে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিক্রির নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে ইনকিলাবের পক্ষ থেকে একাধিকবার বনবিভাগের ডিএফও মোল্লা মিজানের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি কখনও ফাইল দেখে বলতে হবে, কখনও কেন বলবো এসব, কখনো আপনি এসব জানার কে, মিডিয়ায় লিখে কি হবে, কেউ আমার কিছু করতে পারবেনা ইত্যাদী বলে প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।অতি সম্প্রতি বগুড়ার নামুজা –বুড়িগঞ্জ সড়কের ‘ছাতড়া নুরুলের চাতাল হতে বুড়িগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত এলাকার রাস্তার দুই পাশের ৫শ’ ৮৫টি ইউক্যলিপটাস গাছকে চিন্নিত করে তথাকথিত ‘কৌশলী ওপেন টেন্ডার প্রক্রিয়া’ শেষ করে একটি চক্র। গাছগুলির আনুমানিক ৭লাখ ৬৯ হাজার টাকা মুল্য ধরে ইবাদ আলী নামের এক ব্যক্তিকে ৮ লাখ ১ হাজার টাকা মুল্য ধরে বিক্রি করে দিয়েছে এ সংক্রান্ত বিক্রি কমিটি। দৃশ্যত কাগজপত্রে এবং ইউনিয়ন পরিষদের রেজুলেশনে টেন্ডার প্রক্রিয়া দেখানো হলেও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহন কারীদের জন্য বনবিভাগের রেজিষ্ট্রার্ড ছ’ মিল মালিক হওয়া বাধ্যতা মুলক হলেও ইবাদ আলী ও তার সাপোর্টে যাদের নামে ওপেন টেন্ডার ড্রপ দেখানো হয়েছে তারা কেউই বন বিভাগের রেজিষ্টার্ড ছ’ মিল মালিক নন। এছাড়াও যে ৫শ’ ৮৫টি গাছ বিক্রির জন্য গঠিত কমিটি নির্দিষ্ট করেছে, সেগুলোর বাজার মূল্য হবে ২৫ লাখ টাকা। এছাড়াও নির্দিষ্ট গাছ গুলোর বাইরেও বহু সংখ্যক গাছ কাটা হয়েছে ও হচ্ছে, কিন্তু এসব দেখার যেন কেউ নেই, বলে জানালেন টেন্ডারে অংশগ্রহনে ইচ্ছুক অথচ কৌশলী বাধায় টেন্ডারে অংশ নিতে পারেননি এমন অনেকের মধ্যে আনোয়ার হোসেন ও সোহেল ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বৃক্ষনিধন

৩০ অক্টোবর, ২০১৭
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ