পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের লক্ষ্য নিয়ে ঢাকা থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া তার যাত্রাপথে যতটা নেতাকর্মীদের উদ্দীপনা দেখলেন, চট্টগ্রামে এসে সেই ভালোবাসার আকার পেলো অভূতপূর্বে।
এর আগে যে তিনি চট্টগ্রাম আসেন নি তা নয়, তবে পাঁচ বছরের ব্যবধানে আবার এখানে এসে তিনি নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষের যে ঢল দেখলেন এবং তাকে এক নজর দেখতে রাস্তার দু’পাশে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাদের দাড়িয়ে থাকা নি:সন্দেহে দলটিকে বাড়তি প্রেরণা যোগাবে।
শনিবার রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে রাত্রিযাপন শেষে রোববার বেলা সোয়া ১২টার দিকে বিএনপি প্রধান যখন কক্সবাজারের উদ্দেশ্য বের হবেন তখন ওই এলাকা লোকে লোকারণ্য। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে গাড়ি বহর নিয়ে বের হওয়াই বড় সমস্যা হয়ে দাড়ায়। চট্টগ্রামের বিভিন্ন পথ পেরিয়ে কর্ণফুলী আমানতশাহ সেতু পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে হাজার হাজার মানুষ তাকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মানুষের চাপে ওইসব রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা যান চলাচল ব্যাহত হয়।
তবে খালেদা জিয়া সবচেয়ে বড় চমক দেখেছেন আমানত শাহ সেতুতে ওঠার আগ মুহূর্তে। মানুষের অভূতপূর্ব উপস্থিতিতে ওই এলাকা সমাবেশের রূপ পায়। উপস্থিতি এতোটাই প্রকট আকার ধারণ করে যে, পুরো এলাকার সবগুলো রাস্তায় অসংখ্য বাস, ট্রাকসহ যানবাহনের নীরবে জায়গায় দাড়িয়ে থাকা ছাড়া আর কোনো উপায় ছিলো না।
এছাড়াও খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে পটিয়া হাইওয়ে মোড়ে, বাইলা পাড়া ব্রিজ, শান্তিরহাট, মনোসা বাদামতল, শাহচার আউলিয়া মাজার গেট, চন্দনাশ থানার গাছবাড়িয়া কলেজ মার্কেট, হাসিমপুর বাগিচাসহ বিভিন্ন স্পটে প্রিয় নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে ফুল নিয়ে দাড়িয়ে ছিলেন নেতাকর্মীরা।
খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে ফুল, ধানের শীষ, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে নেতাকর্মীরা যেমন এসেছেন, তেমনি ব্যতিক্রম আয়োজনও ছিলো। এমনই এক আয়োজন নিয়েছেন চট্টগ্রাম বিএনপি দক্ষিণ শাখার সহ সভাপতি এনামুল হক এনাম। নগরের বাইলা পাড়া ব্রিজটি পুরোটাই ফুল দিয়ে ঢেকে দিয়েছেন তিনি। উৎসবের সাজে নারীদের সাজিয়ে খালেদা জিয়াকে শুভেচ্ছা জানাতে ফুল হাতে দাড় করিয়েছেন তিনি। ভিন্নধর্মী আয়োজনে বাড়তি রূপ দিতে এনেছেন হাতিও। অনেক স্থানে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানাতে স্কুল ড্রেস পড়া ছোট ছোট ছেলেমেয়ারাও ফুল নিয়ে দাঁড়িয়েছেন রাস্তায়। উদ্দেশ্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অভিনন্দন জানানো। নেতাকর্মীদের এই বাড়তি এই উন্মাদনায় খালেদা জিয়ার গাড়িবহর যাচ্ছে ধীর গতিতে।
বিএনপি নেতারা ধারনা করছেন, কক্সবাজার সার্কিট হাউজে পৌছাতে খালেদা জিয়ার নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে আরো দুই-আড়াই ঘণ্টা বেশি সময় লাগবে। সেক্ষেত্রে তিনি বিকেল ৪টার দিকে সেখানে পৌছাতে পারেন।
মিয়ানমারের নিধনযজ্ঞে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে দেখতে এবং তাদের ত্রাণ দিতে চারদিনের সফরে শনিবার সফরে ঢাকা ত্যাগ করেন খালেদা জিয়া। পথিমধ্যে ফেনী সার্কিট হাউজে যাত্রা বিরতি শেষে রাতে ৯টার দিকে চট্টগ্রামে পৌঁছান। চট্টগ্রামে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর চাপে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌঁছান সাড়ে ১০টার দিকে। চট্টগ্রামে রাত্রিযাপন শেষে কক্সবাজার সার্কিট হাউজের উদ্দেশ্যে রোববার বেলা সোয়া ১২ টার দিকে গাড়িবহর নিয়ে যাত্রা শুরু করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
রোববার কক্সবাজার সার্কিট হাউজে বিশ্রাম নিয়ে সোমবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়া যাবেন খালেদা জিয়া। কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালী, বোয়ালমারা ও জামতলী রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করবেন বিএনপি প্রধান।
বিএনপির মহাসচিব জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া তার এই সফরে প্রায় ১০ হাজার শরণার্থীকে ত্রাণ দেবেন।
খালেদা জিয়ার গাড়িবহর শনিবার বিকেলে ফেনীর দুটি এলাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কক্সবাজারগামী গাড়িবহরের নয়টি গাড়ি ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় সংবাদমাধ্যমের সাতটি গাড়িও ভাঙচুর করা হয়। এতে ২০-২৫ জন আহত হয়েছেন।
ওই ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে রোববার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময়ে বিএনপি মহাসচিব খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কথা বলেন।
“আশা করি, বাকি সফর শান্তিপূর্ণ হবে। প্রথম দিনে বলেছি এখনও বলছি। তিনি (খালেদা জিয়া) তিনবারের প্রধানমন্ত্রী দুইবারের বিরোধী দলীয় নেতা তার নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। একজন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দেওয়া ওতাদের দায়িত্ব। আমরা আশা করি যে ঘটনা ঘটেছে তার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সরকারি দলের কাছে আমরা এ আশা করি।”
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রশ্রয়ে দলটির নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। ভবিষ্যতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না প্রত্যাশা করে খালেদা জিয়ার বাকি সফরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।