পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গত দুইদিনে দেশের বিভিন্নস্থানে হামলা, সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনায় আহত হয়েছে ৩০ জন। গতকাল শরণখোলার খোন্তাকাট ইউপিতে বিএনপির দুই প্রার্থীর গাড়ীতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুরের অভিযোগ করা হয়েছে। চরফ্যাশন আ’লীগ-বিএনপির নির্বাচনী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত হয়েছে ৮ জন। বাউফলে গণসংযোগ চলাকালীন সময়ে হামলায় এক চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ আহত হয়েছেন ১০ জন।
মনিরামপুরে চালুয়াহাটি ও মথিমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিসে আগুন, ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ী ভাংচুর করা হয়েছে।
সীতাকুন্ডে প্রতিপক্ষের হামলায় বিএনপি প্রার্থীর ২ কর্মী আহত হয়েছে। রাজাপুরে আ’লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীর মোটর সাইকেলের বহরে হামলা চালানো হয়েছে। মঠবাড়িয়ায় ইউপি নির্বাচনী সহিংসতায় আহত হয়েছে ১০ জন, নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ৮ বিএনপি প্রার্থী সমর্থকদের গ্রেফতারসহ নানাবিধ হয়রানির অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
বাগেরহাট জেলা ও শরণখোলা উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বাগেরহাটের শরণখোলার খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি দলীয় প্রার্থী মতিয়ার রহমান খান ও মোরেলগঞ্জের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের প্রার্থী খুরশিদ আলম কলির বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর চালিয়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকেরা। বৃহস্পতিবার বিএনপি দলীয় ওই দুই প্রার্থীর বাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। তাদেরকে নির্বাচন থেকে সরে দাড়াতে তার প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীরা জীবননাশের হুমকি দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
এঘটনার পর শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহম্মদ অতুল মন্ডল খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি দলীয় প্রার্থী মতিয়ার রহমান খান বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। বিকেলে বিএনপি দলীয় প্রার্থীর বাড়িতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
এদিকে, মোরেলগঞ্জের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে বিএনপি দলীয় প্রার্থী খুরশিদ আলম কলির বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর চালিয়েছে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকেরা। এখবর পেয়ে পোলের ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি দলীয় প্রার্থী মতিয়ার রহমান খান অভিযোগ করেন, বিকেল তিনটার দিকে আমার প্রতিদ্বন্দ্বি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাকির হোসেন খান ওরফে মহিউদ্দিনের সমর্থকরা ১০/১২টি মোটরসাইকেলযোগে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করতে করতে বাড়িতে ঢোকে। তারা বাড়িতে ঢুকে রাম দা, হকিস্টিক, লোহার রড় ও লাঠিসোটা দিয়ে তার ঘরের দরজা ও জানালায় পেটাতে থাকে। ঘরের দরজা জানালায় পেটানোর শব্দ পেয়ে আমি ফোনে ইউএনও এবং ওসিকে ঘটনাটি জানাই। পরে আমি দরজা খুলে বাইরে এসে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করলে তারা আমাকে নির্বাচন থেকে সরে দাড়ানোর হুমকি দেয়। আমি যদি এই নির্বাচন থেকে সরে না দাড়াই তাহলে তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পালিয়ে যায়।
মোরেলগঞ্জের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নে বিএনপি দলীয় প্রার্থী খুরশিদ আলম কলি অভিযোগ করেন, সকালে আমি ও আমার স্ত্রী নির্বাচনী প্রচারণার কাজে বাইরে গেলে নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা বাড়িতে প্রবেশ করে দরজা ভেঙ্গে ঘরের মালামাল লুট করে নেয়। নির্বাচনে অংশ নেয়ার পর থেকে আমার প্রতিদ্বন্দ্বি আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী মিজানুর রহমান বাবুল আমাকে সরে দাড়ানোর জন্য হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।
বিএনপির দুই প্রার্থী আরও বলেন, নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর থেকে তারা ভয়ভীতি দিয়ে আসছে। যার কারনে আমরা নির্বাচনী প্রচারপ্রচারণা চালাতে পারছিনা। আমরা নিরাপত্তা চেয়ে নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি। কিন্তু কোনো কিছুতেই কোনো ফল হচ্ছেনা বলে অসহায়াত্ম প্রকাশ করেছেন বিএনপির ওই দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তার আগেই লোকজন চলে যায়। আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য কিছু লোক সেখানে মহড়া দিয়েছে।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) তারক বিশ^াস বলেন, যারা ওই হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় জড়িত তাদের সনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ অতুল মন্ডল জানান, বিএনপি প্রার্থীর বাড়িতে হামলার খবর শুনে সেখানে গিয়েছিলাম। এই ঘটনায় যারা জড়িত তাদের ধরতে পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী জাকির হোসেন খান ওরফে মহিউদ্দিন ও মিজানুর রহমান বাবুল তাদের করা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আসন্ন নির্বাচনে তাদের পরাজয় হবে বুঝতে পেরে আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
চরফ্যাশন উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আ’লীগ-বিএনপির ইউপি’র সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে ৮ জন আহত হয়েছে। তাদেরকে চরফ্যাশন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার সময় উপজেলা রসূলপুর ইউনিয়নের আ’লীগ সমর্থিত ৩নং ওয়ার্ড ইউপির সদস্য প্রার্থী জামাল উদ্দিন গংরা বিএনপির প্রার্থী ছালাউদ্দিনসহ ৮ জন আহত হয়। আহতরা হলেন, ছালাউদ্দিন মেম্বার প্রার্থী (৪৫), প্রভাষক কামরুল হাসান শিশির (৩৭), জাকির হোসেন (৪৩), আক্তার হোসেন (৪০), মাইনুদ্দিন হাজারী (৩২), কামাল হোসেন (৫০),স্কুল মাষ্টার শাজাহান (৩৮)কে আহত করেছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বাউফল উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কাছিপাড়া ইউনিয়নের পাকডাল গ্রামের বুধবার রাত ১১টার দিকে আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমানের গনসংযোগে হামলার অভিযোগ পাওয়াগেছে। হাফিজুর রহমানের অভিযোগ, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক ও নৌকা মার্কার কর্মী রিয়াজ সিকদারের নেতৃত্ব এ হামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় আনারস মার্কার প্রার্থী সার্জেন্ট হাফিজুর রহমান ও তার ছোট ভাই আফজাল হোসেন, শানু মৃধা, বাদল মৃধাসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে আফজাল হোসেনকে আশংকাজনক অবস্থায় বরিশাল শেরে-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। হামলার অভিযোগ অস্বিকার করেছেন ছাত্রলীগ নেতা।
অপর দিকে একই দিন দিবাগত রাত দেরটার দিকে কালিশুরী বাজারে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঘোড়া মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুর রহমানের সমর্থক ইয়াকুব তালুকদারের বসত ঘড়ে হামলার অভিযোগ পাওয়াগেছে। ইয়াকুব তালুকদারের অভিযোগ নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিনের সমর্থকরা তার বসত ঘরে হামলা করে। এ বিষয়ে অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন বলেন, আমার কর্মীরা এ ধরনের হামলার সাথে সম্পৃক্ত না। নিজের বাড়িতে নিজেরা হামলা চালিয়ে নৌকা মার্কার সমর্থকদের ওপর চালিয়ে দিচ্ছে।
ওই দিন রাতেই ধুলিয়া ইউনিয়নের নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিচুর রহমান রবের একটি নির্বাচনী অফিসে হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবিসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করা হয়েছে। এ হামলার জন্য ধানের শীষ মার্কার কর্মী সমর্থকদের দায়ী করা হলেও ওই মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী আবদুল জব্বার তা অস্বীকার করেছেন।
আওয়ামীলীগ অফিসে হামলা চালিয়ে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাংচুরের প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার ধুলিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই সন্ত্রাসী ঘটনার সাথে জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক যথাক্রমে জোবায়দুল হক রাসেল, আবদুল্লাহ আল মামুন, বাউফল উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি হারুন অর রশিদ খান ও চেয়ারম্যান প্রার্থী আনিচুর রহমান রব প্রমুখ। এ বিষয়ে বাউফল থানার ওসি আ জ মো মাসুদ্দুজামান বলেন, লিখেত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
যশোর ব্যুরো জানায়, নির্বাচনী সহিংসতা হয়েছে মণিরামপুরে। বুধবার রাতে উপজেলার চালুয়াহাটি ও মশ্মিমনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী অফিস অগ্নিসংযোগ এবং ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়ী ভাংচুর হয়েছে। এসব ঘটনায় পৃথকভাবে থানায় ৪টি মামলা হয়েছে।
আমাদের উপজেলা সংবাদদাতা জানান, বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী আবুল ইসলামের নেংগুড়াহাট বাজারে নির্বাচনী অফিসে হামলা চালায় একই দলের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হামিদ সরদারের কর্মী-সমর্থকরা। আ’লীগ প্রার্থী আবুল ইসলামের। অভিযোগ, বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হামিদের কর্মীরা ভাংচুরসহ অগ্নিসংযোগ করে। এসময় তারা ৯/১০টি বোমার বিস্ফোরণও ঘটে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমানসহ ১৯ জনের নামে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযোগ অস্বীকার করেন বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল হামিদ সরদার। তার পক্ষ থেকেও ইউনিয়নের আওয়ামীলীগ নেতা আব্দুল হাইসহ কয়েকজনের নামে পাল্টা মামলা হয়েছে।
একই রাতে মশ্মিমনগর ইউনিয়নে বিএনপি দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী এ্যাড. আব্দুল গফুরের ৪টি নির্বাচনী অফিস অগ্নিসংযোগ করে আওয়ামীলীগ প্রার্থী আবুল হোসেনের কর্মী সমর্থকরা। এ সময় চাপাতলা বাজারে তান্ডব চালিয়ে ডাক্তার আব্দুর সাত্তারের চেম্বর, আব্দুল মাজেদ ও ইসহাকের চায়ের দোকান, আনছারের সারের দোকান, মুনছুর মোড়লের ভূষি মালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মোতালেব হোসেনের সাইকেল পার্টসের দোকানসহ ৮টি দোকান ভাংচুর করে।
সীতাকু- (চট্টগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, সীতাকু-ের কুমিরায় প্রতিপক্ষের হামলায় বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হেলাল উদ্দিনের ২ কর্মী আহত হয়েছে। তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এছাড়া একই প্রার্থীর আরো এক সমর্থককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নির্বাচনের মুখে এসব ঘটনায় বিএনপি নেতৃবৃন্দের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগে জানা গেছে, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নে বিএনপি প্রার্থীদের উপর নানাভাবে নির্যাতন চলছে। হামলা-মামলাসহ নানা উপায়ে প্রার্থী ও তার সমর্থকদের মনোবল দুর্বল করা হচ্ছে। ঐ এলাকার বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী হেলাল উদ্দিন অভিযোগ করে জানান, তিনি ও তার সমর্থকদের উপরে নানাভাবে অত্যাচার চলছে। গতকাল তার কয়েকজন সমর্থক লতিফা ছিদ্দিকী ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন এলাকায় পোস্টার লাগানোর সময় তাদের উপর ২০/২৫জন সরকার দলীয় ক্যাডার অতর্কিতে হামলা চালায়। এতে ৩নং ওয়ার্ড ছাত্রদলের সেক্রেটারি ইউসুফ আলী (২৫) ও ঐ ওয়ার্ডের প্রচার সম্পাদক আলমগীর হোসেন রুবেল (২২) আহত হন। এছাড়া ওয়ার্ড ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হায়ছাম ছিদ্দিকী জনি (২৭) কে মারধর করে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়। এর আগে প্রার্থী হেলালসহ কয়েকজন নেতার বাড়িতেও পুলিশ অভিযান চালিয়ে হয়রানির চেষ্টা করেছে। এভাবে নানামুখি তৎপরতায় তাদেরকে কোনঠাসা করে রাখার চেষ্টা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন, প্রার্থী হেলাল উদ্দিনসহ কুমিরা ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তারা আরো বলেন, কিছুদিন আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বিএনপি প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন জনিকে। তারা এসব ঘটনার জন্য সরকার দলীয় প্রার্থী মোর্শেদুল আলম চৌধুরীর ভাই আলমগীর ও সমর্থকদের দায়ী করেন। ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাচন অফিসসহ বিভিন্ন দপ্তরে এসব ঘটনা অবহিত করে অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোন প্রতিকার মিলছে না। এদিকে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কুমিরা ইউনিয়নের আ’লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী মোর্শেদুল আলম চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বিএনপির কাজই হলো মিথ্যা অপপ্রচার করা। আমার পাশের দোকান হলো ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি যদি বিনা বাধায় দোকানে বসে ব্যবসা করতে পারেন তাহলে অন্যদের উপর হামলা হবে কেন ? এখানে তার ভাই বা সরকার দলীয় কোন সমর্থক বিএনপির উপর কোন হামলা করেনি। তার পোস্টার ছেঁড়া বা বিভিন্ন ভাবে চাপ প্রয়োগের কথাও একেবারে বানোয়াট। পুলিশ যাদের গ্রেপ্তার করেছে তারা নাশকতার মামলার আসামি। এখানে আমার কি করার আছে? বিএনপি প্রার্থীর সমর্থক বা কর্মী গ্রেপ্তারের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে সীতাকু- থানার এস.আই ইকবাল তা অস্বীকার করে বলেন, তাকে প্রার্থীর সমর্থক হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তার বিরুদ্ধে ৩টি নাশকতার মামলা আছে। এর মধ্যে একটির ওয়ারেন্টও আছে। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রাজাপুর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠির রাজাপুরে ইউপি নির্বাচনে মঠবাড়ি ইউপির আ’লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা কামাল সিকদারের মোটর সাইকেল বহরে হামলা চালিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী আঃ রবের নেতৃত্বে তার কর্মী বাহিনী। বুধবার রাতে উপজেলার নাপিতের হাট গ্রামের এ ঘটনা ঘটে। এসময় হামলাকারীরা ৫ টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভোররাতে আ’লীগের মনোনিত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা কামাল সিকদারের সমর্থক উপজেলা ছাত্রলীগের সহ সভাপতি আতিকুর রহমান সিকদার বাদি হয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আঃ রবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখপূবক আরও অজ্ঞাত ৪০/৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পুলিশ মামলার আসামী পূর্ব ইন্দ্রপাশা গ্রামের মামুন হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। হামলায় আহতরা হল- বাগড়ি গ্রামের সালাম সিকদারের ছেলে মঠবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শফিকুল ইসলাম ডিমন সিকদার (২৯), হামেদ তালুকদারের ছেলে দুলাল তালুকদার (৩৫) ও উপজেলার ডহরশঙ্কর গ্রামের মৃত মতিউর রহমানের ছেলে আ’লীগ নেতা আব্দুল আজিজ হাওলাদার (৫৮), রাজ্জাক, মন্টি, পারভেজ বাবু, তৌহিদ ও রিয়াজসহ আ’লীগের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ডিমন, আজিজ, দুলাল ও রাজ্জাকসহ ৬ জনকে রাজাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্র ও মঠবাড়ি ইউপির আ’লীগের মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা আ’লীগের ত্রান ও সামজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা কামাল সিকদার অভিযোগ করে জানান, নাপিতের হাট এলাকায় নির্বাচনী উঠান বৈঠক শেষে রাজাপুরে ফেরার পথিমধ্যে নাপিতেরহাট এলাকায় পূর্ব পরিকল্পতিভাবে ওত পেতে থাকা আ’লীগ থেকে বহিষ্কৃত চেয়ারম্যান প্রার্থী আঃ রব ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের মোটর সাইকেল বহরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে অন্তত ১৫ নেতাকর্মীকে আহত করে। এ সময় হামলাকারীরা ৪টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে খালে ফেলে দেয়। তবে আঃ রব এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস ও ওসি তদন্ত হারুর অর রশিদ জানান, এ ঘটনায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আঃ রবসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখপূবক আরও অজ্ঞাত ৪০/৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। পুলিশ রাতেই মামলার আসামী পূর্ব ইন্দ্রপাশা গ্রামের মামুন হোসেনকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে উপজেলার বলাইবাড়ি এলাকায় সদর ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রচারনাকালে গিয়াস উদ্দিন নামে এক কর্মীকে প্রতিপক্ষের লোকজন পিটিয়ে আহত করেছে।
মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, মঠবাড়িয়ার সাফা বাজারে গতকাল (বৃহস্পতিবার) স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের ছয় সমর্থককে পিটিয়ে আহত করেছে আ’লীগ চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকেরা। এ সময় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর ছয়টি মোটরসাইকেলও ভাংচুর করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে সাফা বাজার এলাকায় স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী রফিকুল ইসলামের চশমা প্রতীকের সমর্থকেরা প্রচারণা চালানোর সময় আ’লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুন অর রশিদের নৌকার সমর্থকেরা হামলা চালায়। এতে আবদুল বারেক (৫৫), এমাদুল আকন (৪০), আবদুল মালেক মোল্লা (৪০), শাহীন শরীফ (৩৫), মো. সানাউল হক (২৩) ও মাসুম হাওলাদার (২৫) আহত হন। এ সময় আহতদের ছয়টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ খবর পেয়ে রফিকুল ইসলামের বিক্ষুব্ধ সমর্থকরা স্থানীয় আলগী বাজারে আ’লীগ অফিস ভাংচুর করে। অপরদিকে গতকাল বুধবার বিকেলে উপজেলার ৬নং টিকিকাটা ইউনিয়নের স্থানীয় কুমিরমারা গ্রামে আ’লীগ সমর্থিত রফিকুল ইসলাম রিপনের নৌকা প্রতীকের পোস্টার লাগানোর সময় স্বপন বেপারী (৩৫) কে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হোসেন মোশারফ সাকুর সমর্থকরা বাধা দেয়। এরপর স্বপনকে একটি গাছের সাথে বেধে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে। গুরুতর আহত স্বপনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এছাড়াও গতকাল বুধবার রাতে গণসংযোগ শেষে বাড়ি ফেরার পথে বেতমোর রাজপাড়া ইউপির ৩নং সংরক্ষিত আসনের মহিলা প্রার্থী রাশিদা বেগমের অনার্স পড়–য়া পুত্র মামুন খানের (২২) ওপর হামলা চালায়। গুরুতর আহত মামুন মঠবাড়িয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধিন। এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ফরিদ উদ্দিন, মঠবাড়িয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান সাফা বাজার ও আলগী বাজার দুটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
নোয়াখালী ব্যুরো জানায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীদের প্রচারণায় বাধা প্রদান, নির্বাচন থেকে সরে যাবার হুমকি ও সমর্থকদের গ্রেফতারসহ নানাবিধ হয়রানীর অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছে ৮টি ইউনিয়নের বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীগণ। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করে আগামী ২২ মার্চ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবী জানান প্রার্থীরা।
এ সময় ৮টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে ৬জন প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন। তারা হলো, চরজুবলীর ইউপি চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজাম উদ্দিন ফারুক, চরওয়াপদার জামাল উদ্দিন, চরক্লার্কের বশির আহমেদ, চরজব্বারের মো. আবদুল্লাহ্, চর আমান উল্যাহ্ আবুল কাশেম ও মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের খায়রুল আলম সেলিম। এছাড়াও সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট এবিএম জাকারিয়াসহ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে লিখিত ও স্ব স্ব প্রার্থীদের বক্তব্যে অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীরা নানা প্রতিকূলতার শিকার হচ্ছে। আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী, সমর্থক ও তাদের নেতাকর্মীরা বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থীদের উপর হামলা, প্রচার কাজে বাধাপ্রদান, প্রচারপত্র ছিনিয়ে নেয়া, মামলা না থাকা সত্বেও পুলিশ দিয়ে কর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতার, নির্বাচন থেকে সরে যাবার জন্য হুমকিসহ নানাবিধ হয়রানী করা হচ্ছে এমনকি নির্বাচনে ১০ শতাংশ ভোট পেলেই আ.লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে যাবে এবং ভোটের দিন সকাল ১০টার মধ্যে ভোট কেন্দ্র দখল করে ফলাফল নিজেদের অনুকূলে নেয়া হবে বলেও নির্বাচনী মাঠে রটানো হচ্ছে। এতে ভোটারদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও আতংক ছড়িয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের যথাযথ কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান প্রার্থীরা।
উল্লেখ্য, আগামী ২২ মার্চ সুবর্ণচর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে প্রথম দফায় দলীয় প্রতীকে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে আ.লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন ও স্বতন্ত্রসহ ২৮জন চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৮৩ এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩০০ জন প্রার্থী প্রতিদন্দ্বিতা করবেন। এ উপজেলায় নারী ও পুরুষ মিলিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ৬২ হাজার ৫’শ ৩৮জন। উপজেলায় মোট ৭৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঢাকার কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কানারচর এলাকায় গতকাল (বৃহস্পতিবার) সকালে হযরতপুর ইউনিয়ন বিএনপির চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুর হক রিপনের গনসংযোগে হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের হামলায় ধানের শীষের প্রার্থী নুরুল হক রিপন, তার ভাগ্নে ইমতিয়াজ হোসেন রনি ও হযরতপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সাফায়েত হোসেন গুরুতর আহত হয়েছে। আহত সাফায়েত হোসেনের অবস্থা গুরুতর। তাকে চিকিৎসার জন্য সাভার থানার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত বিএনপির প্রার্থী নুরুল হক রিপন বলেন, সকালে হযরতপুর ইউনিয়নের কানারচর এলাকায় ধানের শীষের গনসংযোগ চলছিল। এসময় পরিকল্পিতভাবে ১০-১৫টি মটরসাইকেল যোগে একদল যুবক তাদের উপড় অতর্কিত মামলা চালায়। তাদের হামলায় কমপক্ষে ৫জন আহত হয়েছে। এই ঘটনায় হযরতপুর ইউনিয়নে ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হযরতপুরে আরও সহিংসতা হতে পারে বলে তাদের আশঙ্কা। কলাতিয়া পুলিশ ফাঁড়ির দারোগা মনিরুজ্জামান বলেন, বিএনপির প্রার্থীর গণসংযোগ চলছিল। তাদের উপড় কারা হামলা করেছে সেই বিষয়ে তারা কোন অভিযোগ পায়নি। ঘটনার পর থেকে কানারচর এলাকায় পুলিশ দেয়া হয়েছে
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।