পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জনপ্রতিনিধি ও দলের নেতৃত্বশীল প্রতিনিধিরাও যেন ভাবলেশহীন
চরম পর্যায়ে সিলেটের রাস্তাঘাট। সড়ক-আঞ্চলিক সড়কের অবস্থা একই। পিচ-ঢালা রাস্তাঘাট, এখন বিপদজনক। সরকারদলীয় স্থানীয় এমপি তথা দলের নেতৃত্বে যারা আছেন, তারও অবস্থা উত্তরণে যেন ভালেশহীন। যে কারনে সরকারের ব্যাপক নানাবিধ উন্নয়ন ফিরিস্তি ও বাস্তবতা, জনদূর্ভোগে চাপা পড়ে যাচ্ছে। ভোক্তভোগী মানুষ হচ্ছেন ক্ষুব্ধ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন তারা। এতে করে সরকার তথা আ’লীগের জনপ্রিয়তা আটকে যাচ্ছে রাস্তা ঘাটের আবর্তে। রাস্তাঘাটের করুণ অবস্থা, জনদূর্ভোগ নিজ চোখে কিঞ্চিৎ হলেও আঁচ করতে পেরেছেন বাংলাদেশ আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। শনিবার সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে জেলা ও মহানগর আ’লীগের উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে রাস্তাঘাটের দুরবস্তা নিয়ে মন্তব্য করেছেন তিনি। তার মন্তব্য সাধারন মানুষকে আশাজাগানিয়া দিলেও দলের স্থানীয় এমপি ও দলের নেতৃত্বশীল প্রতিনিধিরা জনগনের পাশে থেকে দূর্ভোগ লাগবে উল্লেখযোগ্য কোন ভূমিকা রাখেননি। যাতে করে জনগন বুঝতে পারে, দূর্ভোগে পাশে আ’লীগ তথা সরকার। সেজন্য চাপা সমালোচনায় পড়ছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তার ধাক্কা সরকার পর্যন্ত গড়াচ্ছে। সেতুমন্ত্রী বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়ন শিগগিরই শুরু হবে এমন কথাও বলেছেন। কিন্তু রাস্তার উন্নয়ন হলেও টেকসই উন্নয়ন দেখতে চায় জনগন, সেই সাথে রাস্তা ব্যবহার উপযোগী রাখার নিশ্চয়তা। প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেট, সেই সাথে দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান, নয়াভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্ভার থাকার কারনে, পর্যটকদের ভিড় সিলেটে। কিন্তু সেই বাস্তবতা বিচারে, রাস্তাঘাটের কোনো ডিজিটাল উন্নয়ন বা সংস্কার আলামত নেই। অতীতের মতো রাস্তা উন্নয়ন এর বরাদ্দ থাকলেও ডিজিটাল রাস্তা উন্নয়ন চায় সিলেটবাসী। রক্ষানাবেক্ষন ও সংস্কারে চায় দ্রæত পদক্ষেপ। রাস্তাঘাটের শৃংখলা ও দৃশ্যমান সৃষ্ট ব্যবস্থাপনা দেখতে পারলে জনপ্রিয়তার বিপুলতা পেত আ’লীগ। কারন তৃণমুল মানুষের বিড়ম্বনা নিরসনের মধ্যে নির্ভর করছে জনপ্রিয়তার পারদ। তার বদলে রাস্তাঘাট কেন্দ্রিয় দূর্দশায় বিপর্যস্ত গোটা সিলেটবাসী। দেশ-বিদেশে বসবাসরত সিলেটিরাও রাস্তা ঘাটের করুণ অবস্থায়, দু:খিত। দেশে ঘুরতে আসার পথে বাধা হয়ে যাচ্ছে রাস্তা ঘাটের বেহাল দৃশ্যমান চিত্র। বিগত সময়ে আইন শৃংখলা সহ নিরাপত্তা প্রশ্নে প্রবাসীরা দেশে আসায় বিমুখ হলেও বর্তমানে তারা সরকারে উপর আস্থাশীল। কিন্তু এখন রাস্তা ঘাট প্রশ্নে তারা দ্বিধামগ্ন। ইস্ট লন্ডন যুবলীগ এর সহ-সভাপতি রাজা মিয়া বলেন, সরকারের মন্ত্রী, এমপি, কেন্দ্রিয় ও স্থানীয় নেতারা দেশ বিদেশ ঘুরেন। কিন্তু তারা রাস্তা ঘাটের সংস্কার ও উন্নয়ন ব্যবস্থা, চিত্র ও জ্ঞান যদি, দেশের রাস্তার কাজে লাগাতে পারতেন, কমপক্ষে হলেও রাস্তা ঘাটের আমূল পবির্তন ঘটতো। আমাদের সরকারের জনপ্রিয়তা অবিশ্বাস্য ভাবে বেড়ে যেতো। কিন্তু তারা পথ দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছেন, এমনটিই মনে করছেন ভোক্তভোগী জনগন। অবস্থা যদি এই হয়, তাহলে জনপ্রিয়তা আশা, দুরাশা বৈ-কিছু নয়। ভোক্তভোগী মানুষ মনে করছেন, আবহ্ওায়া, পরিবেশ-পরিস্থিতি পর্যালোচনা পূর্বক রাস্তা উন্নয়ন ও সংস্কারে মনোযোগী হওয়ার বিকল্প নেই। এমন বিষয় তারা জোরালো ভাবেই বলেছেন, কারন সরকার দেশকে ডিজিটাল করার প্রত্যয়ে অঙ্গিকারবদ্ধ। সেই ডিজিটিাল দেশে গড়তে হলে ডিজিটাল সড়ক উন্নয়ন একটি অন্যতম খাত। কিন্তু সেই খাতে বৈপ্লবিক যে পরিবর্তন নেই, হচ্ছে না, সিলেটের রাস্তাঘাট তার বড় প্রমান।
সুশাসনের জন্য সুনাগরিক ( সুজন) সিলেট এর সভাপতি ফারুক মাহমুদ বলেন, সড়ক এর উন্নয়ন হয়, কিন্তু টোটাল সড়ক পথের উন্নয়ন নিয়ে পরিকল্পনা না থাকায় সড়ক ব্যবস্থা ব্যবহার উপযোগী থাকছে না। যেকারনে রাস্তা বছরের ২ মাস ভালো থাকলে, ১০ মাস ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। তার কারনে পরিস্থিতি হয়ে উঠে নাজুক। তিনি বলেন, রাস্তা সংস্কারে দ্রæত নেই পদক্ষেপ। অবস্থা একেবারে করুন হলে তখন টনক নড়ে। অথচ রাস্তা গুলো ভূ-প্রকৃতি আমলে নিয়ে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে সংস্কার ও উন্নয়ন করলে, রাস্তা উন্নয়ন টেকসই হতো। সাধারন মানুষ বিশ্বাস করতো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথা সরকার রাস্তা ঘাট ডিজিটাল করে তুলেছে। ডিজিটালের নমূনা যদি দোরগোড়ায় না থাকে তাহলে বিষয়টি শ্লোগানেই আটকে থাকবে।
সিলেট বিভাগ গণদাবী ফোরামের পক্ষ থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগের উন্নয়নে নানা প্রকল্প গৃহিত ও বাস্তবায়িত সহ ন্যায্য ২৫টি দাবী সম্বলিত স্মারকলিপি সেতু মন্ত্রীর হাতে তুলে দিয়েছেন। ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট চৌধুরী আতাউর রহমান আজাদ বলেন, রাস্তা ঘাটের উন্নয়ন ও সংরক্ষনে ডিজিটাল পরিকল্পনা গ্রহন জরুরী। রাস্তা উন্নয়ন হবে, কিন্তু সংস্কার বা ব্যবহার উপযোগী থাকবে না, তাহলে রাস্তার উন্নয়ন দরকার কি। বিষয়টি তো যেই-সেই থেকে গেল। বর্তমান সরকার আমাদের ডিজিটাল দুনিয়ার সাথে পরিচিত করে তুলেছেন। সেই দুনিয়া গুলোর রাস্তাঘাট দেখে নিজের রাস্তাঘাটের তুলনা করলে, লজ্জা ছাড়া আর কিছূ থাকে না। তাই আমাদের দাবী রাস্তা ঘাট নিয়ে সার্বিক পরিকল্পনা পূবর্ক উন্নয়ন ও দ্রæত সংস্কার ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। যাতে করে রাস্তা গুলোর পানি দ্রæত নিস্কাষণ হয়। বৃষ্টি পানিতে রাস্তা ডেমেইজ বা ব্যবহার অনুপযোগী না হয়। সংস্কার ব্যবস্থা শুরু থেকে পরিকল্পনা মোতাবেক চালিয়ে য্ওায়া গেলে কোনো রাস্তাই ক্ষতিগ্রস্থ হতো না। সেই দিক বিবেচনায় নিয়ে রাস্তা রক্ষানাবেক্ষন ও উন্নয়ন কাজ টেকসইভাবে সম্পূর্ন করা দরকার। কমপক্ষে রাস্তা উন্নয়ন কাজে দুর্নীতি বিতাড়িত করতে হবে। কারন গোটা জনগোষ্টির দৃষ্টি এখন রাস্তাঘাটের দূর্দশা কেন্দ্রিক। এই রাস্তাঘাট-ই তাদের বিপর্যস্ত করে তোলেছে। তাই জনপ্রিয়তার দাবী, আশা, এমনতিই বাস্তবায়ন হয়ে যাবে সরকার যদি ডিজিটাল রাস্তার বাস্তবতা দেশ বাসীর মতো সিলেট বাসীকে দেখাতে পারেন। তিনি বলেন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সহ দলের নেতৃত্বশীল প্রতিনিধিরা এক্ষেত্রে জনবান্ধব ভূমিকা রেখে সরকারের উন্নয়নগাথাঁ স্থায়ী করতে পারতেন। কিন্ত তাদের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। যেন তারা স্বাক্ষী গোপাল। সরকার, দলের ও জনগনের কেউ না।
সড়কপথে সিলেটে এসে ঢাকা-সিলেট সড়কের অবস্থা নিয়ে শনিবার কথা বলেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। এই সড়ক ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন সড়কের দুরবস্থা নিয়ে মন্তব্য করেছেন সেতুমন্ত্রী। সিলেটের সড়ক যোগাযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন- সড়ক পথে সিলেট এসে খুব কষ্ট পেয়েছি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিভিন্ন যায়গার অবস্থা খুবই খারাপ। সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবশ্যই চারলেনে উন্নিত করা হবে। চায়না হারবারের সাথে সমঝোতা না হলে প্রয়োজনে নিজস্ব অর্থায়নে এই সড়কের কাজ হবে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পেরেছি, এটাও করতে পারবো। সিলেট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের কাজ চলছে। সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের টেন্ডার হয়ে গেছে। জাফলং সড়কের কাজও হয়ে যাবে। সিলেট আমাদের যা দেয়, আমরাও সিলেটকে সে রকম দিতে হবে। বাজেটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ আসে এই সিলেট থেকেই। বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে সিলেটকে বাঁচাতে অবে। সিলেটের উন্নয়ন রাস্তাঘাটের উন্নয়নের উপর নির্ভরশীল। এখানে পর্যটন খাতের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে রাস্তাঘাটের উন্নয়ন করতে হবে। সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন- আমি কোন অজুহাত শুনতে চাই না। এ মাসের ৩০ তারিখের মধ্যে সিলেটের রাস্তাঘাট চলাচলের উপযোগি করতে হবে। না হলে মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্টদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শুধুমাত্র ৯টা-৫টা অফিস করলে চলবে না, মাতৃভূমিকে ভালবাসতে হবে। শনিবার সকালে সিলেটের ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন কর্মসূচীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে তিনি এসব কথা বলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।