পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নূরুল ইসলাম : সারাদেশে ইয়াবার ভয়াবহ বিস্তারে নারীর ব্যবহার আশংকাজনক হারে বাড়ছে। মাদক ব্যবসায়ীরা ইয়াবার আমদানি, সরবরাহ ও বেচাকেনার জন্য নিরাপদ হিসেবে নারীদের বেছে নিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে পুরুষরা পেরে উঠতে না পেরে তাদের স্ত্রী, মা-বোন, কন্যা-ভাতিজিদের নামাচ্ছে এ ব্যবসায়। এর সাথে বিভিন্ন এলাকার মাদক স¤্রাজ্ঞীরা তো আছেই। শুধু রাজধানীতেই প্রভাবশালী কোটি টাকার মালিক মাদক স¤্রাজ্ঞী আছে অর্ধশতাধিক। তাদের অধীনে কয়েকশ’ পুরুষ মাদক ব্যবসা করছে। নারীরা বেশি বেশি যুক্ত হওয়ায় ইয়াবা প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ও পুলিশ। তবে অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ যতটা না ইয়াবা প্রতিরোধ করে তার চেয়ে বেশি প্রশ্রয় দেয়। এমনকি ইয়াবার মাধ্যমে নিরীহ মানুষকে ফাঁসিয়ে উপরি আয়ের ধান্দা করেন কতিপয় অসাধু পুলিশ সদস্য। এ কাজে তাদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে সোর্স নামধারী সন্ত্রাসী ও মাদক বিক্রেতারা।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নারীর শারীরিক গঠনের সুযোগ নিয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা নারীদের ব্যবহার করছে। প্রথমে অন্যের হয়ে ব্যবসায় জড়িয়ে পরে অনেক নারী নিজেরাই জড়িয়ে পড়ছে এ ব্যবসায়। নি¤œআয়ের পরিবারের নারীরা আর্থ-সামাজিক কারণে মাদক ব্যবসায় জড়াচ্ছে। আবার বেশিরভাগ নারী মাদক ব্যবসায়ীরা একই পরিবারের পুরুষ সদস্যদের হাত ধরে এ ব্যবসায় জড়াচ্ছে। একজন কর্মকর্তা জানান, মাদকদ্রব্য উদ্ধার অভিযানে গিয়ে এইসব নারীকে নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। সব অভিযানে ও টহলে সব সময় নারী পুলিশ থাকে না। তাই নারীদের দেহ তল্লাশি করা যায় না। এই সুযোগ নিচ্ছে নারী মাদক ব্যবসায়ীরা। কিছুদিন যাবৎ নারীরা ইয়াবার বিশেষ ধরনের পোটলা গিলে পেটের মধ্যে বহন করছে। এটা শতভাগ নিরাপদ পন্থা। যদিও এরকম দুজনকে কিছুদিন আগে সন্দেহভাজন হিসাবে আটক করে ঢাকা মেট্রো উপ-অঞ্চলের কর্মকর্তারা। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে এক্সরে করে তাদের দুজনের পেটে ইয়াবা শনাক্ত করা হয়। মেট্রো উপ-অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মুকুল জ্যোতি চাকমা জানান, পরে ডাক্তার দিয়ে তাদের পেটের ভেতর থেকে ইয়াবার পোটলাগুলো বের করা হয়। তিনি জানান, পেটের মধ্যে ইয়াবার পোটলা লুকানোর কারণে দুই মহিলারই মৃত্যুর ঝুঁকি ছিল। সময়মতো ডাক্তাররা চিকিৎসা না করলে তাদের মৃত্যু ঘটতে পারত।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের মতে, বর্তমানে দেশে ইয়াবার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় নারী মাদক ব্যবসায়ীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এর অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে নারীরা একসঙ্গে অনেকগুলো ইয়াবা তাদের দেহের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অংশে সহজেই বহন করতে পারে। একজন নারী মাদক ব্যবসায়ী তার চুলের খোঁপায় প্রায় ৬০টি ইয়াবা বহন করতে পারে। এছাড়া সালোয়ার, কামিজ, ব্লাউজ, পেন্টি ও ব্রার ভিতরে সহজেই শত শত ইয়াবা বহন করতে পারে।
অন্যদিকে পারিবারিকভাবে মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়েছে এরকম বহু নারী ব্যবসায়ী আছে। এদের মধ্যে অনেকেই একাধিকবার গ্রেফতার হয়েছে। জামিনে বেরিয়ে এসে আবার তারা একই পেশায় যোগ দিয়েছে। সূত্রমতে, মাদক ব্যবসা করতে গিয়ে পুরুষ গ্রেফতার হলে স্ত্রী বা কন্যা মাদক ব্যবসার হাল ধরে। কারণ স্বামী বা বাবার মাদক ব্যবসার সব নেটওয়ার্ক তাদের পরিবারের নারী সদস্যদের জানা থাকে। এ কারণে ব্যবসা করতেও তাদের কোনো অসুবিধা হয় না। যেমন রাজধানীর মিরপুরে মাদক ব্যবসায়ী শহিদুলের হাত ধরেই তার স্ত্রী জেসমিন মাদক ব্যবসায় আসে। রামপুরায় রিয়াদ ও তার স্ত্রী শিলা দুজনেই নামকরা মাদক ব্যবসায়ী। বিয়ের আগে শিলা মাদক ব্যবসা সম্পর্কে কিছুই জানত না। স্বামীর হাত ধরেই তার এ পথে আসা।
অন্যদিকে ইয়াবার দাপটের আগেও নারীরা মাদক সা¤্রাজ্যে বেশ আলোচিত ছিল। যাত্রাবাড়ীর হোসনে আরার হেরোইন ব্যবসার কথা সবাই জানে। ’৯০-এর দশকে যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, মতিঝিল, ডেমরা, সূত্রাপুর, শ্যামপুর এলাকাজুড়ে বিশাল মাদক ব্যবসার নেটওয়ার্ক ছিল সিটি পল্লীর হক্কা মহাজনের মেয়ে হোসনে আরার। র্যাব প্রতিষ্ঠার পর হোসনে আরার এই নেটওয়ার্কে ফাটল ধরে। র্যাবের অভিযানে হোসনে আরার সিটি পল্লীর আস্তানা থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা, স্বর্ণালংকার উদ্ধার করা হয়। সেই থেকে হোসনে আরা উধাও হয়ে যায়। এখন হোসনে আরা না থাকলেও আছে অর্ধশতাধিক মাদক স¤্রাজ্ঞী। যারা রাজধানীতে দাপটের সঙ্গে মাদকের ব্যবসা করছে, রাজধানীকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে তারা বিস্তার করছে মাদক ব্যবসা। ফেরি করে বেড়াচ্ছে মরণনেশা ইয়াবা। ধ্বংস করছে তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ। রাজধানীর আলোচিত এসব মাদক স¤্রাজ্ঞীর মধ্যে রয়েছে-- মিরপুরে জেসমিন ও ফাতেমা, তেজগাঁওয়ের শাহীনবাগে পারভীন, গুলশানে মৌ, মহাখালীতে জাকিয়া ওরফে ইভা ও রওশন আরা বানু, মহাখালীর ৭তলা বস্তিতে সীমা, বনানীতে আইরিন ওরফে ইভা, কড়াইল বস্তিতে রীনা, বারিধারায় নাদিয়া ও যূথী, উত্তরায় গুলবাহার ও মুক্তা, বাড্ডায় সুমি, রামপুরায় সীমা ও শিলা, ভাটারায় পাতা বাবুর মা-ফুফু, লালবাগে মনোয়ারা, ইসলামবাগে ছাফি, জোছনা ও বিউটি, আনন্দবাজার বস্তিতে বানু, গণকটুলিতে মনেয়ারা বেগম ও নাছিমা, শ্যামপুরে ফজিলা, রানী বেগম ও পারুলী, শ্যামপুরের পাইন্না সর্দার বস্তিতে রেনু, নিমতলী বস্তিতে সাবিনা ও পারুল, হাজারীবাগে স্বপ্না, কলাবাগানে ফারহানা ইসলাম তুলি, শাজাহানপুরে মুক্তা ও চানখারপুলে পারুল অন্যতম। এরা প্রত্যেকেই পুলিশের তালিকাভুক্ত। বহুবার গ্রেফতারও হয়েছে, কিন্তু ব্যবসা ছাড়েনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।