Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

আনন্দ ও আশায় নেতাকর্মীরা

বিএনপির কাউন্সিল কাল

প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আফজাল বারী : বর্ণিল সাজে সেজেছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। আনন্দের জোয়ারে ভাসছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা। এ জোয়ার দলের কাক্সিক্ষত কাউন্সিল ঘিরে। বিশেষ করে নতুন নেতৃত্বের অপেক্ষায় আছেন সবাই। দলের ত্যাগী, পরীক্ষিত ও দক্ষ নেতাদের জায়গা হবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে এমন আশায় বুক বেঁধেছে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা।
আগামীকাল হচ্ছে বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সকাল ১০টায় কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। কাউন্সিল সফল করতে নেতাকর্মীসহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
গত কয়েকদিন ধরে নয়া পল্টন কার্যালয়ে অনেকটা ঈদের আমেজ বিরাজ করছে। বিদেশ ফেরত স্বজনদের সাথে সাক্ষাৎ হলে যে দৃশ্যের অবতারণা হয় ঠিক সেই দৃশ্য লক্ষ্য করা গেছে এই কার্যালয়ের ভেতরে-বাইরে। নেতায় নেতায় করমর্দন, বুক মেলানোসহ জেল-জুলুমের কষ্টের কথা বিনিময় করছেন তারা। গ্রহণ করছে কাউন্সিলর ও ডেলিগেট-এর কার্ডসহ নানান সামগ্রী।  
পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে কাার্যলয়ের আশপাশ। কারাবন্দি ও সিনিয়র নেতারা ছবি দিয়ে কাউন্সিল স্বাগত জানিয়ে বিশাল ব্যানার টানিয়েছেন। ৫ তলা বিশিষ্ট কার্যালয় ঢেকে দেয়া হয়েছে কাউন্সিলের বিশাল ব্যানারে। এতে লেখা রয়েছে, এবারের কাউন্সিলের মূল প্রতিপাদ্য ‘মুক্ত করবোই গণতন্ত্র।’ এছাড়া ব্যানারে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছোট প্রতিকৃতিও স্থান পেয়েছে। কার্যালয়ের তৃতীয় তলা থেকে বিতরণ করা হচ্ছে কাউন্সিলর কার্ড।
কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বরাদ্দের চাইতে বেশি ডেলিগেট কার্ড সংগ্রহের জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা এবং বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা হন্যে হয়ে দৌড়ঝাঁপ করছেন।
গতকাল কাউন্সিল ভেন্যুতে গিয়ে দেখা গেছে, পুরোদমে চলছে মঞ্চ ও আগতদের বসার স্থান তৈরির কাজ। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের ভিতরের চত্বরে কেবল কাউন্সিলর ও আমন্ত্রিত অতিথিদের বসার জায়গা করা হচ্ছে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভিতরে বসবেন ডেলিগেটরা। গতকাল দুপুরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া কথা জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কাউন্সিল ব্যবস্থা উপ-কমিটির আহ্বায়ক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।   
আলাপকালে দলটির নেতারা জানিয়েছেন, অব্যাহত নির্যাতন-নিপীড়নের যন্ত্রণা ভুলে যাওয়া এবং সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর মহৌষধ এই কাউন্সিল। কাউন্সিলের উদ্বোধন করবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। অনুষ্ঠানে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্যও দেবেন। তার বক্তব্যে নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে দল সুসংগঠিত করার প্রসঙ্গ যেমনি থাকবে, তেমনি চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী দিনে দলীয় অবস্থানও তুলে ধরবেন তিনি।  
সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটি ও ১১টি উপ-কমিটি নিজ নিজ দায়িত্ব শেষ করেছে। কাউন্সিলর কার্ড ও ডেলিগেট কার্ড বিতরণ চলছে। প্রায় ৩ হাজার কাউন্সিলর থাকছেন অনুষ্ঠানে। কাউন্সিলর, ডেলিগেট, আমন্ত্রিত অতিথি ও উৎসুক নেতা-কর্মী সব মিলিয়ে উপস্থিতির সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন দলটির নেতারা।
সকাল ১০টায় শুরু হওয়া কউন্সিলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষ হবে মধ্যহ্নভোজের মধ্য দিয়ে। এরপর বিকাল তিনটা থেকে শুরু হবে রুদ্ধদ্বার কাউন্সিল। এতে আলোচ্যসূচিতে রয়েছে-  শোক প্রস্তাব উপস্থাপন, দলের চেয়ারম্যান ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচনে গঠিত নির্বাচন পরিচালনা কমিটির রিপোর্ট পেশ, মহাসচিবের সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা, দলের ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র সংশোধন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার বক্তব্য ছাড়াও লন্ডন থেকে ভিডিওর মাধ্যমে বক্তব্য দেবেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপির কাউন্সিলের এবারের মূল শ্লোগান-‘দুর্নীতি দুঃশাসন হবেই শেষ, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ।’ কাউন্সিল উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় তৈরি হয়েছে লোগো, ওয়েবসাইট ও থিম সং। যুব দল- ‘তারুণ্যে যারা অকুতোভয়, তারাই আনবে সুর্যোদয়’, কৃষক দল- ‘ফলাবো ফসল, গড়বো দেশ, গণতন্ত্রে বাংলাদেশ’, মুক্তিযোদ্ধা দল- ‘মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র, মুক্ত করো গণতন্ত্র’, শ্রমিক দল- ‘শ্রম দিয়ে শিল্প গড়বো, দেশের আঁধার ঘুচিয়ে দেবো’, মহিলা দল- ‘চেতনায় নারী, বিপ্লবে নারী, গণতন্ত্র ফেরাতে আমরাই পারি’, ছাত্র দল- ‘বাঁচতে চাই, পড়তে চাই, দুর্নীতি মুক্ত দেশ চাই’, স্বেচ্ছাসেবক দল- ‘আলোর দিন দূরে নয়, করতে হবে আঁধার জয়’, জাসাস-‘গাইবো মোরা গণতন্ত্রের গান, দুঃশাসনের হবেই অবসান,’ তাঁতী দল- ‘শক্ত হতে বাঁধো তাঁত, কাটাতে হবে আঁধার রাত’, মৎস্যজীবী দল-‘জালের টানে ঘুচবে আঁধার, বাংলাদেশ সবার’ এবং উলামা দল- ‘জিয়ার আর্দশে দেশ গড়বো, ধর্মীয় স্বাধীনতা বজায় রাখবো’।
সর্বশেষ ২০০৯ সালে ৮ ডিসেম্বর বিএনপির পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল হয়েছিলো বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আনন্দ ও আশায় নেতাকর্মীরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ