Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আইসিটি বিশেষজ্ঞ নিখোঁজ রহস্য

রিজার্ভ চুরির ঘটনা

প্রকাশের সময় : ১৭ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫১ পিএম, ১৭ মার্চ, ২০১৬

পরিবারের দাবি, অপহৃত : থানা জিডি নেয়নি  জোহা হয়তো গ্রেফতার হতে পারেন : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী  আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বক্তব্য : তারা কিছু জানে না  এফবিআইয়ের সাথে সিআইডি’র বৈঠক আজ  বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ
স্টাফ রিপোর্টার : রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের তদন্ত সংশ্লিষ্ট তথ্য-প্রযুক্তিবিদ তানভির হাসান জোহার সন্ধান পাচ্ছে না তার পরিবার। নিখোঁজের প্রায় ৩৬ ঘণ্টা পরও জোহার কোন খোঁজ-খবর পায়নি তার পরিবার। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন এ ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না। অন্যদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্তকারী সিআইডির কর্মকর্তারা গতকাল ছুটির দিনও ব্যাংকে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলেছেন। ব্যাংক থেকে বেশ কিছু আলামতও সংগ্রহ করেছেন। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন সন্দেহভাজন কর্মকর্তাদের। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন সিআইডির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আজ শুক্রবার মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাথে সিআডি কর্মকর্তাদের বৈঠক করার কথা রয়েছে।
এদিকে তানভীরের কোন সন্ধান না পেয়ে চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা। জোহার স্ত্রী ডা: কামরুন্নাহার চৌধুরী বলছেন, তার স্বামীকে অপহরণ করা হযেছে। তিনি অভিযোগ করেন, গতকাল দিনভর কাফরুল, ক্যান্টেনমেন্ট কলাবাগান ভাসানটেক থানায় দফায় দফায় গিয়ে থানায় জিডি করতে চাইলে কোন থানাই জিডি নেয়নি। রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকা থেকে বুধবার দিনগত রাত ১২টার দিকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছেন। তবে থানা পুলিশ তা অস্বীকার করেছেন। কাফরুল থানার ওসি জানান, তার এলাকায় এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। তাই থানায় জিডি নেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্বরাষ্টমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, জোহা হয়তো গ্রেফতার হতে পারেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আরো বলেন, তদন্তের স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী প্রযুক্তিবিদ তানভীর হাসান জোহাকে গ্রেফতার করতে পারে, তবে আমি নিশ্চিত নই।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানের আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
নিখোঁজ তানভীর হাসান জোহার স্ত্রী কামরুন্নাহার চৌধুরী গতকাল রাতে ইনকিলাবকে বলেন, আমি ভয়ভীতির মধ্যে আছি। আমার স্বামীকে অপহরণ করা হয়েছে। আমরাও নিরাপত্তাহীনতায় আছি। তিনি বলেন, এটা কেমন কথা, একটা লোক নিখোঁজ হয়েছেন, তাকে তো খোঁজে বের করার দায়িত্ব আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর। অথচ থানায় কোন জিডিই নিচ্ছে না।
তানভীর হাসানের শ্যালক মাহাবুব জানান, গতকাল তানভীর হাসানের এক চাচাসহ আমি কলাবাগান ও কাফরুল থানায় গিয়ে জিডি করতে চাইলে ওসি জিডি নেননি। কাফরুল থানার পুলিশ প্রথমে বলে ঘটনাস্থ তাদের থানা এলাকায় নয়, পরে ঘটনাস্থলে নিয়ে গেলে স্থানটি পরিদর্শন করে পুলিশ থানায় পিরে যায়। পরবর্তীতে জিডি করার জন্য আবার থানায় গেলে ওসি বলেনে, তারা এলাকায় এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।
তানভীরে শ্যালক মাহাবুব আরো জানান, তানভীরের সাথে তার একজন বন্ধুও ছিলেন তারা সিএনজি অটোরিক্সায় বাসায় ফিরছিলেন। কচুক্ষেত এলাকায় আসার পর ওই রাতে তিনটি জীপ গাড়ি তাদের সিএনজিটি ঘেরাও করে। তারপর তাদের দুইজনকে একটি জীপ গাড়িতে জোর করে তোলে নেয়। এসময় উভয়ের চোখ মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলা হয়। তারপর তানভীরের বন্ধুকে সংসদ ভবন এলাকায় মানিক মিয়া এ্যাভিনিয়ের কাছে রাত দেড়টার দিকে নামিয়ে দেয়া হয়। নিরাপত্তার কারণে তার বন্ধুর নাম প্রকাশ করা হযনি।  
এদিকে গতকাল র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসান জিয়া ইনকিলাবকে বলেন, এ ধরনের কোন ঘটনা আমার জানানি। র‌্যাব তানভীর হাসান নামে কাউকে গ্রেফতার বা আটক করেনি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, র‌্যাবের সাথে তো অনেকেই কাজ করেন। অনেকেই বিভিন্ন সময় র‌্যাবকে সহযোগিতা করেন। তবে আইটি বিশেষজ্ঞ তানভীর হাসান র‌্যাবের সাথে কোন কাজ করেননি। নিখোঁজের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরাও শুনেছি, কিন্তু এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বিশেষজ্ঞ মতামত দেয়া সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের স্থগিত থাকা প্রকল্প সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের ডিরেক্টর (অপারেশন) তথ্য-প্রযুক্তিবিদ তানভীর হাসান জোহা নিখোঁজ হওয়ার পর চরম-হতাশা নেমে এসেছে তার পরিবারে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ডলার লুটের ঘটনা তদন্তে সংশ্লিষ্ট তথ্য-প্রযুক্তিবিদ তানভির হাসান জোহা বুধবার রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রীর পক্ষ থেকে রাজধানীর তিন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) বা অভিযোগ দাখিল করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেছেন নিখোঁজ জোহার পরিবারের সদস্যরা।
এর আগে বুধবার রাত ১টায় রাজধানীর কচুক্ষেত এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয় বলে দাবি করেছেন জোহার স্ত্রী ডাঃ কামরুন্নাহার।
কামরুন্নাহার বলেন, গতকাল (বুধবার) রাত থেকে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট, কাফরুল ও কলাবাগান থানায় জোহার অপহরণ-নিখোঁজের জন্য জিডি করতে গেলে পুলিশ তা নেয়নি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল বলেন, ‘কে বলেছে জিডি বা মামলা করতে এসেছে? তাদের সঙ্গে দেখাও হয়নি কথাও হয়নি। থানায় আসলে জিডি কেন নেব না?
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি নিয়ে প্রকৃত তথ্য সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রকাশ করায় একটি মহল তার ওপর ক্ষুব্ধ বলে এর আগে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন জোহা। ওই মহলটি রিজার্ভ কেলেঙ্কারির তদন্ত থেকে তাকে সরিয়ে দিতে ষড়যন্ত্র করছে বলেও অভিযোগ ছিলো অপহৃত জোহার।
জোহা বলেছিলেন, তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তদন্ত সহায়তা থেকে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইছে। কারণ আমি অনেক বিষয়েই প্রশ্ন তুলেছি। তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছি।
এছাড়া রিজার্ভ কেলেঙ্কারি তদন্তে ভারতীয় বিশেষজ্ঞ রাকেশ আস্থানার দেয়া অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্যের সঙ্গেও দ্বিমত পোষণ করেছিলেন জোহা।
সূত্র জানায়, জোহার সঙ্গে প্রথম থেকেই তথ্য ও উপাত্ত নিয়ে অমিল হয় বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি কনসালটেন্ট রাকেশ আস্থানার সঙ্গে। এসময় জোহার অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি রাকেশ আস্থানা।
জোহার পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার অফিস থেকে বাসায় ফেরার আগে স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয় তার। এর আগে দু’দিন তিনি বাসায় ফেরেননি। এর কারণ অবশ্য জানে না তার পরিবার। অফিস থেকে বের হওয়ার পর সিএনজিতে ওঠেন জোহা। কচুক্ষেত এলাকায় দুই-তিনটি গাড়ি তার সিএনজিকে ঘিরে ধরে। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে আইসিটি মন্ত্রণালয়ের জন-সংযোগ কর্মকর্তা মোঃ আবু নাছের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, তানভির হাসান জোহা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) মন্ত্রণালয়ের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের ডিরেক্টর (অপারেশন)। তবে এই প্রকল্পটি গত দুই মাস ধরে স্থগিত আছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির বিষয়ে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে এ বিষয়ে বক্তব্য দিলে আইসিটি মন্ত্রণালয় প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গণমাধ্যমকে জানায় সাইবার বিশেষজ্ঞ জোহার সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
এরপর গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি নিয়ে প্রকৃত তথ্য সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রকাশ করায় একটি মহল আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়েছে। তাই তারা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তারা তদন্ত সহায়তা থেকে আমাকে সরিয়ে দিতে চাইছে। কারণ আমি অনেক বিষয়েই প্রশ্ন তুলেছি। তথ্যর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছি।
তিনি বলেন, এর আগে সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার আমন্ত্রণে আমি জঙ্গি তৎপরতাসহ সাইবার অপরাধের বড় বড় ঘটনা তদন্তে সহায়তা করেছি। তখন কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। এখন একটি মহলের স্বার্থে আঘাত লাগায় তারা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় প্রথমে বাংলাদেশ ব্যাংক অনানুষ্ঠানিকভাবে জোহার সহযোগিতা নেয়। পরবর্তীতে র‌্যাব আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত শুরু করার সময়েও সাইবার বিশেষজ্ঞ জোহার সহযোগিতা নেয়।
তাকে নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংকের আইটি বিভাগ ও ব্যাংক অফিস পরিদর্শন করে। সার্ভার কম্পিউটারের বিভিন্ন দিক খুঁটিয়ে দেখে।
আইসিটি মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেড়ারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কের ‘বাংলাদেশ ব্যাংক’-এর একাউন্ট থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাচার করা হয়েছে মর্মে প্রচার মাধ্যমে (প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক্স ও অনলাইন মিডিয়া) সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। এই ঘটনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে প্রকাশিত ও প্রচারিত কিছু সংবাদ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের গোচরীভূত হয়েছে যাতে তানভীর জোহা, তানভীর হাসান জোহা নামক এক ব্যক্তিকে আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তা বলে অভিহিত করা হচ্ছে। সরকারের আইসিটি বিভাগ এই ঘটনাকে খুবই উদ্বেগজনক হিসেবে বিবেচনা করছে এবং এ বিষয়ে আইসিটি বিভাগ সংশ্লিষ্ট সকলকে সঠিক ও অর্থবহ তথ্য প্রদান করা যুক্তি-সঙ্গত বলে মনে করছে।
প্রকৃতপক্ষে, এই অর্থ-পাচার-হ্যাকিং-এর ঘটনা অনুসন্ধানে আইসিটি বিভাগ কর্তৃক কোন তদন্ত কমিটি গঠিত হয়নি, এমনকি কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবেও আইসিটি বিভাগ কোন অনুসন্ধান কার্যক্রমে জড়িত নয়। তানভীর জোহা-তানভীর হাসান জোহা নামের কোন ব্যক্তির সাথে আইসিটি বিভাগের কোন ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই এবং আইসিটি বিভাগের সাইবার সিকিউরিটি স্পেশালিস্ট বা সাইবার সিকিউরিটি ফোকাল পয়েন্ট বা সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের ডাইরেক্টর (অপারেশন) হিসেবেও কর্মরত নন। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই বিষয়ে সকলকে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও সচেতনতা অবলম্বনের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ সনির্বন্ধ অনুরোধ জানানো হচ্ছে।
আইসিটি মন্ত্রণালয়ের এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তানভীর জোহা সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তখন সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলন, একটি মহল চায় না প্রকৃত রহস্য বের হোক। তিনি তখন জোর দিয়ে বলেছিলেন, সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থাকে তিনি বিভিন্ন সময় স্পর্শকাতর মামলার তদন্তে সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি জানিয়েছিলেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থার সাতে তিনি আইটি বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজ করেছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা চুরির ঘটনার পরে তিনি গোয়েন্দাদের সাথে তদন্তে সহযোগিতার কথাও জানিয়েছিলেন।
আজ সিআইডির সাথে বৈঠক মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনার আজ মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাথে সিআডি কর্মকর্তাদের বৈঠকের কথা রয়েছে। আজ শুক্রবার আলোচনায় বসবে এ মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ছাড়া ইন্টারপোলের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করবে তদন্ত সংস্থাটি। গতকাল বৃহস্পতিবার সিআইডির উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সাইফুল ইসলাম এসব কথা জানান।
রিজার্ভের অর্থ চুরি যাওয়ার ৪০ দিন পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনে ওই মামলা করা হয়। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ বা সিআইডি মামলাটির তদন্ত করছে। পাশাপাশি আর্থিক লেনদেনের বার্তা আদান-প্রদানকারী আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সুইফটের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারণা নেয়। গতকালও সিআইডির দলটি বাংলাদেশ ব্যাংকে যায়।
এরপরই সিআইডির উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। সাংবাদিক এ সময় তিনি বলেন, ফরেন এক্সচেঞ্জ এবং সিকিউরিটি সার্ভিল্যান্স ইকুইপমেন্ট আমরা জব্দ করেছি।
ডিআইজি সাইফুল ইসলাম আরো বলেন, এফবিআইয়ের সঙ্গে আমরা আলোচনা চালাব। এফবিআইয়ের বাংলাদেশ কার্যালয়ের যিনি প্রধান তার সঙ্গে কাল আলোচনায় বসবো। এ ছাড়া ইন্টারপোলের সঙ্গেও এ ব্যাপারে আলোচনা চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সদ্য সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না, সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে সাইফুল ইসলাম বলেন, তদন্তের স্বার্থে আতিউর রহমানকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।
এদিকে অর্থ চুরির মামলার এজাহারে বলা হয়, ৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিলিং রুমের (যেখান থেকে লেনদেনের পরামর্শ আদান-প্রদান করা হয়) সুইফট সিস্টেমের ত্রুটি ধরা পড়ে। তবে প্রথমে সেটিকে স্বাভাবিক সমস্যা হিসেবে মনে করা হয়। ৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকল্প পদ্ধতিতে সুইফট সফটওয়্যার চালু করে কিছু অননুমোদিত বার্তার বিষয়টি নিশ্চিত হন ডিলিং রুমের কর্মকর্তারা। ওই দিন দুপুরেই ই-মেইল ও ফ্যাক্সের মাধ্যমে অননুমোদিত লেনদেনগুলো স্থগিত রাখার অনুরোধ পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাংকের কাছে। পরে ৮ ফেব্রুয়ারি ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনসহ মোট ছয়টি ব্যাংকের কাছে ‘স্টপ পেমেন্ট বা অর্থ পরিশোধ বন্ধ’ অনুরোধ বার্তা পাঠানো হয়।
তানভীর জোহার স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন
তানভীর জোহার স্ত্রী গতকাল তার কলাবাগানের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সাংবাদিকদের তিনি বলেন, আমার স্বামী কোথায় জানতে চাই। তিনি বলেন, জোহা সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকে দেশের জন্য কাজ করেছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার কাছে তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ে যখনই কোনও সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে, তখনই সে তাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছে। জোহা যাতে নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারেন, সেজন্য তিনি প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
জোহার স্ত্রী ডা. কামরুন নাহার চৌধুরী জানান, বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে জোহার সঙ্গে মোবাইল ফোনে তার সর্বশেষ কথা হয়। জোহা তাকে জানিয়েছিলেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশা করে এক বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে বাসায় ফিরছেন। ওই সময় তিনি ক্যান্টনমেন্টের পার্শ্ববর্তী কচুক্ষেত এলাকায় তাদের অবস্থান বলেও জানান। জোহার সঙ্গে থাকা বন্ধুর নাম ইয়ামিন আহমেদ। রাত দেড়টার দিকে ওই বন্ধু তাদের ফোনে জানান, জোহা অপহৃত হয়েছেন। এরপরই তারা কলাবাগান থানায় যান জোহার অপহৃত হওয়ার বিষয়টি অবহিত করে সাধারণ ডায়েরি করতে। কিন্তু থানা কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, যেহেতু তিনি সর্বশেষ কচুক্ষেত এলাকা থেকে কথা বলেছেন, এজন্য কাফরুল থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে হবে। বৃহস্পতিবার সকালে জোহার চাচা মাহবুবুল আলম সাধারণ ডায়েরি করতে কাফরুল থানায় যান। কাফরুল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে তাদের জানান, এটি ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় পড়েছে। সেখান থেকে ক্যান্টমেন্ট থানায় যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, ঘটনাস্থল ভাষানটেক থানায় পড়েছে। পরে ওই থানায়ও যোগাযোগ করেন মাহবুবুল আলম। সেখান থেকেও বলা হয় ঘটনাস্থল তাদের এলাকায় পড়েনি।



 

Show all comments
  • Habib ১৮ মার্চ, ২০১৬, ৮:৩৩ এএম says : 0
    This is the reality of Bangladesh...shotti kotha bolban to nikhoj hoiya jaban
    Total Reply(0) Reply
  • arif ১৮ মার্চ, ২০১৬, ৯:৫১ এএম says : 0
    এই ................ দেশটাকে শেষ. করে দিচ্ছে। দেশের অর্থনীতি, দেশের মেধাকে, দেশের নিরাপত্তা শেষ. করে দিচ্ছে। আর সহ্য করিবনা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আইসিটি বিশেষজ্ঞ নিখোঁজ রহস্য
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ