Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

খুলনার কয়রা পাউবোর বেড়িবাঁধ হুমকির মুখে

মোস্তফা শফিক, কয়রা (খুলনা) থেকে : | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

এফসিডি আই প্রকল্পের নামে এসও খয়রুল কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা
কয়রার দুটি পাউবোর পোল্ডার হুমকির মুখে, লাপাত্তা হয়েছেন এ পোল্ডাবের এসও খয়রুল আলম। অভিযোগ উঠেছে, এফসিডি আই প্রকল্প দেওয়ার নামে হাতিয়ে নিয়েছেন কয়েক লাখ টাকা। বিপাকে পড়েছেন সাতক্ষীরা নির্বাহী প্রকৌশালী-২ মি: অপূর্ব কুমার। সরোজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার ১৩Ñ১৪/২এবং১৪/১ এ দুটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ীবাধ মারাত্মক হুমকির মুখে। অর্ধশত স্থানে ভাঙনের ফলে যে কোন মহূর্তে আবারও নোনাপানিতে ডুবে যেতে পারে। ফলে দায়িত্ব প্রাপ্ত এসও খয়রুল অত্র এলাকার মানুষের নিকট থেকে এফসিডি আূই প্রকল্প (একসনা ডিসি আর) দেয়ার নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গত ২০ সেপ্টেবর কয়রা উপজেলার ১৩-১৪/২ পোল্ডার ঘুরে দেখা গেছে কপোতাক্ষ নদীর স্রোতে প্রবল স্রোতে গাববুনিয়ার সানা পাড়া এলাকার ১কি:মি:বেড়ীবাধ, পুটিঘেরী গাজী পাড়ার দেড় কি:মি:, হরিণ খোলার ৮শ মিটার, মদিনাবাদ ও লোকার ৯শ মিটার, দশালিয়া এলাকার দেড় কি:মি:, ঘোলায় -৭শ মিটার , কালিবাড়ীর ৫শ মিটার, চৌকুনি এলাকায় দেড় কি: মিটার, মটের কোনায় ২কি:মি:, মাঠবাড়ী লঞ্চ ঘাট হতে ক্লোজার পর্যন্ত ১ কি:মি:, ৪নং কয়রা রহিম হাজীর বাড়ী থেকে ক্লোজার পর্যন্ত ১কি:মি এবং কাটকাটায় ৭ শ মিটার বেড়ী মারাত্মক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে । এছাড়া-১৪/১ পোল্ডারে হরিহরপুর বেড়ীবাধ ৩শ মিটার, গাতির ঘেরীতে ৫শ মিটার, বীনাপানি ২শ মিটার, জোড়শিং বাজারের উত্তর ও দক্ষিনের বেড়ীবাধের ১কি. মি., আংটিহারায় ৭শ মিটার, ছোট আটিংহারায় ৫শ মিটার, মাটিয়াভাঙ্গায় ৭ মিটার, ঘড়িলাল বাজার হতে মেদেরচর পর্যন্ত ৪কি:মি:, পাতাখালী গেট থেকে চরামুখা পর্যন্ত ২ কি:মি: এবং শাকবাড়ীয়া হতে গাববুনিয়া পর্যন্ত দেড় কি: মিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ী বাধ জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করার প্রয়োজন। এসব বেড়ীবাধ মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় ঐ এলাকার হাজার হাজার মানুষ আতংকে রয়েছে।
উল্লেখ্য আইলা ও শিডরের আঘাতে এ দুটি পোল্ডার দীর্ঘ ৪/৫ বছর নোনাপানিতে ডুবে ছিল। যত্র তত্র পাউবোর বেড়ীবাধ গুলিতে প্রাথমিক সংস্কার করা হলেও স্থায়ী (বন্টনের মাধ্যমে) বাধ নির্মান খুবেই জরুরী। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরা পাউবোর আওতাধীন কয়রার এ দুুটি পোল্ডারের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন এসও খায়রুল ইসলাম। তিনি পাউবোর বেড়ীবাধের দিকে নজর না দিয়ে চর ভরাট স্থান গুলিতে - এফসিডি আই প্রকল্প করে দেওয়ার নামে অত্র এলাকার বহু মানুষে নিকট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে কোরবানীর ঈদের দু’দিন আগে থেকে আজ পর্যন্ত লাপাত্তা হওয়ায় এ সব মানুষেরা পড়েছেন বিপাকে। এ ব্যাপারে এসও খায়রুলের সাথে যোগাযোগ করলে তার মোবাইল নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়। বিষয়টি নিয়ে কথা হয় সাতক্ষীরা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশালী-২ মি: অপূর্ব কুমারের সাথে। তিনি বলেন, ঈদের দু’দিন আগে থেকে ১৩-১৪/২এবং ১৪/১ এ দু’টি পোল্ডারের দায়ীত্ব প্রাপ্ত সেকশন কর্মকর্তা এসও খায়রুলকে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আর ও বলেন, আইলা কবলিত দু’টি পোউবোর পোল্ডারের ভয়াবহ স্থান গুলি মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় এ মূহর্তে তার প্রয়োজন ছিল। কিন্তু তার কোন খবর না পেয়ে উক্ত পোল্ডার গুলিতে আমি ও এস.ডি.ই. নিজেই পরিদর্শন করেছি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, এসও খায়রুল স্থানীয় কয়েক জন দালালের মাধ্যমে এফসিডি আই প্রকল্প দেওয়ার নাম করে ৩/৪ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে ঈদের দু’দিন আগে থেকে উধাও হওয়ায় চলছে আলোচনা ও সমালোচনা। তবে গোপন সূত্রে জানা গেছে, তিনি নাকি একাধীক বিয়েও করছেন, যার ফলে আত্ম গোপনে রয়েছেন। সদ্য যোগদান করা এই সেকশন কর্মকর্তার পাউবো সর্ম্পকে তেমন কোন ধারনা না থাকলেও সহায় সম্বলহীন মানুষের নিকট থেকে কি করে টাকা হাতিয়ে নিতে হয় সে বিষয় না কি ওস্তাদ বলে মন্তব্য করেছেন কিছু ভূক্তভোগী মানুষেরা।
ও দিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সাতক্ষীরা দপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, অনভিজ্ঞ সেকশন কর্মকর্তা খায়রুল আলম যোগদান করার পর থেকে লোকালয়ের মানুষেরা ভাল নেই। তারা অভিযোগ করেছেন এসও খায়রুল ইসলাম তার দুটি পোল্ডারের কোন খোজ খবর রাখেনা। তবে তারই বিশ্বস্ত ও সহকর্মী নাম ধারী একজন এ সংবাদদাতাকে বলেন, ঈদের পর এসও সাহেবকে পাওয়া যাচ্ছেনা বলেই তো সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী ও এসডিই সাহেব কয়েক বার এ দুটি এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা যারা পাউবোর অধীনে কাজ করি তারাও জনগণের কাছে বেইজ্জতী হচ্ছি? সে কারণে সমগ্র কয়রা জুড়ে সকলকে সাথে নিয়ে উক্ত পাউবোতে নিয়োজিত কর্তা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে স্বারক লিপি প্রদান করার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাউবো


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ