পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘ তিন মাসের চিকিৎসা শেষে আজ দেশে ফিরছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল (মঙ্গলবার) রাতে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে এমিরেটস এয়ারলাইন্স এর একটি বিমানে করে দেশের উদ্দেশ্যে লন্ডন ত্যাগ করেছেন তিনি। আজ বিকেল সাড়ে ৫টায় হযরত শাহজালাল (রহ:) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌছানোর কথা রয়েছে বেগম খালেদা জিয়ার। দলীয় প্রধানের দেশে ফেরাকে কেন্দ্র করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। চেয়ারপারসনের দেশে ফেরার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তারা। বিমানবন্দরে পৌছার পর তাকে অভ্যর্থনা জানাতে ব্যাপক প্রস্তুতিও গ্রহণ করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো। রাজধানী ছাড়াও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত হবেন। বিমানবন্দর থেকে গুলশানে চেয়ারপারসনের বাসভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে অভ্যর্থনা জানিয়ে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার নিয়ে দাঁড়াবেন দলের নেতাকর্মীরা। তাদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও স্বত:স্ফূর্তভাবে তাদের সাথে যোগ দিবেন বলে মনে করছেন তারা।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, দলের চেয়ারপারসন দেশে ফেরার পর তাকে স্বাগত জানানোর জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো। বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী নিয়ে এদিন বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, মহিলা দলসহ সকল অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তাদের সাথে যোগ দিবেন গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জসহ ঢাকার আশপাশের জেলা থেকে আসা বিপুল সংখ্যক বিএনপি নেতাকর্মী। এজন্য গত শনিবার এসব জেলার নেতৃবৃন্দের সাথে কয়েকদফা বৈঠকও করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এছাড়া অভ্যর্থনা জানানো এবং ব্যাপক লোক সমাগমের লক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা সেরেছে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল ও মহিলা দলও।
দলটি সূত্রে জানা যায়, বিমানবন্দরে বিএনপি চেয়ারপারসনকে স্বাগত জানানোর জন্য দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। এদের সাথে থাকবেন বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, শিক্ষক ও শিল্পী এবং বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতারা। অন্যদিকে বিমানবন্দর থেকে গুলশান-২ খালেদা জিয়ার বাসভবন ফিরোজা পর্যন্ত রাস্তার পাশে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ দলটির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানানোর প্রস্তুতি চলছে। নেতাকর্মীদের মধ্যেও উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে। খালেদা জিয়ার অভ্যর্থনা উপলক্ষে বিভিন্ন ধরনের প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার তৈরি করছেন বিএনপি ও দলটির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের। স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু বলেন, আমরা নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানানোর ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ডের নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছি। আশা করছি, সংগঠনের পক্ষ থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত উপস্থিত থাকবে। তিনি বলেন, দেশে ফেরা উপলক্ষে নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি ব্যানার, ফেস্টুনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে থাকা মামলা প্রত্যাহারেরও দাবি জানানো হবে। এ অভ্যর্থনা থেকে খালেদা জিয়াকে ‘গণতন্ত্রের সৈনিক’ উপাধি দেওয়া হবে।
রাজধানীর আশপাশের বিএনপির কয়েকটি জেলা শাখা সূত্রে জানা যায়, দলীয় প্রধানের আগমনে নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়ে ওঠেছেন। গত কয়েকদিনেই এসব এলাকার দলীয় কার্যালয়গুলো নেতাকর্মীদের আনাগোনা ও উপস্থিতিতে সরগরম হয়ে ওঠেছে। এদিকে বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানানোর জন্যও তারা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। কিছু কিছু নেতাকর্মী গতকালই রাজধানীতে এসে উপস্থিত হয়েছেন। গাজীপুর জেলার অন্তত দুই লাখ নেতাকর্মী গতকাল উত্তরার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন বলে কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য জেলার নেতাকর্মীরাও ঢাকায় এসে উপস্থিত হয়েছেন। এছাড়া আজ সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী বিমানবন্দর এলাকায় উপস্থিত হবেন বলে জানা গেছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ফিরে আসার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। তিনি দেশে ফিরে আসলে দলের নেতাকর্মীরা তাকে অভ্যর্থনা জানাবে। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিমানবন্দরে বিপুল সংখ্যক মানুষের ঢল নামবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে গত সোমবার যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালিক ও সাধারণ সম্পাদক এম কয়ছর আহমদ বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জটিল চক্ষু চিকিৎসার কারণে দীর্ঘ সময় লেগেছে। চিকিৎসা শেষে আরও বিশ্রামের প্রয়োজন থাকলেও দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির কারণে তিনি দ্রুত দেশে ফিরে যাচ্ছেন। খালেদা জিয়া দেশে ফিরবেন না সরকারি দলের এমন প্রচারণার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে নেতৃবৃন্দ জানান, খালেদা জিয়া ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। তিনি বাংলাদেশের মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে আগামীতে সরকার গঠন করবেন। অতীতে চরম প্রতিকূল অবস্থায়ও তিনি দেশ ছেড়ে যান নাই । আর কখনো দেশ ছাড়বেনও না। কারণ দেশের বাহিরে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কোনো ঠিকানা নেই। আপসহীন নেত্রী মৃত্যুকে পরোয়া করেন না, সেখানে গ্রেফতারি পরোয়ানা তো কিছুই না। তাছাড়া, প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাকে অসুস্থ বানিয়ে বিচারকার্য থেকে সরিয়ে রাখা সহ বিভিন্ন কারণে দেশে গুরুতর অস্থিরতা চলছে। দেশের এমন ক্রান্তিকালে খালেদা জিয়ার দ্রæত দেশে ফেরা উচিত বলে মনে করেন তারা।
গত ১৫ জুলাই চোখ ও হাটুর চিকিৎসার জন্য লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে তিনি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন। সেখানে তিনি পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে একান্তে সময় কাটান। তার এই সফর চিকিৎসার জন্য হলেও দল পুনর্গঠন, আন্দোলন-সংগ্রাম ও আগামী নির্বাচনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই দেখছে দলীয় নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক মহল। বিশেষ করে দেশে ফিরেই তার নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকারের রূপরেখা ঘোষণাসহ আরও বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।