Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গারা ‘বাঙালি’ মিয়ানমার সেনাপ্রধানের এ দাবি অসত্য -বাণিজ্যমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 স্টাফ রিপোর্টার : রাখাইন থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ দাবি করে তাদের সংখ্যা নিয়ে অতিরঞ্জন করার যে অভিযোগ মিয়ানমার সেনাপ্রধান তুলেছেন তাকে ভিত্তিহীন বলে খারিজ করে দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। সেই সাথে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের মাতৃভূমিতে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের প্রতি চাপ অব্যাহত রাখতে বিশ্ববাসীর প্রতি আহŸান জানান তিনি। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটিতে ‘শোকেস কোরিয়া ২০১৭’ এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা প্রায় দুই শতক আগ থেকেই রাখাইনে বসবাস করে আসছে। ১৮২৪ সালে বৃটিশ-বার্মা যুদ্ধে বার্মা পরাজিত হলে বৃটিশরা বার্মা দখল করেছিল। তার আগ থেকে রোহিঙ্গা মুসলিমরা আরাকান বা রাখাইন রাজ্যের তিনটি নদীর পাশে বসবাস করে আসছে। সেখানে একজন বার্মিজ রাজা ছিলেন। তিনি ছিলেন ধর্মনিরেপক্ষ, সেই রাজদরবারে উপবিষ্ট কবি আলাউল, দৌলত কাজী ছিলেন মুসলমান। আর মিয়ানমারের জেনারেল বলে দিলেন, ‘এরা বাংলাদেশি’। এটি মিথ্যা, অসত্য। মানুষ বলতো মগের মুল্লুক, আসলেই তাই।
বুধবার ইয়াঙ্গুনে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত স্কট মারসিয়েলের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন মিয়ানমার সেনাপ্রধান হ্লাইং। রাখাইন পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদমাধ্যমে সঠিক তথ্য আসছে না দাবি করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে যাওয়া বাঙালির সংখ্যা নিয়ে অতিরঞ্জন করা হচ্ছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, এর মধ্যে ৫ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আগে থেকেই ৫ লাখের মতো ছিল। সব মিলে ১০ লাখ হয়েছে। বাকি যারা আছে তাদেরও বিতাড়িত করছে, সেখানে তারা শিল্পাঞ্চল করবে, ইপিজেড করবে।
‘রোহিঙ্গারা বাঙালি’ মিয়ানমার সেনাপ্রধানের এই দাবি খন্ডন করে তোফায়েল বলেন, আগে মিয়ানমার বলেছিল, ১৯৪৮ সালে বার্মা স্বাধীন হওয়ার আগে যারা ছিল তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এখন তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে ১৮২৪ সালের আগে রাখাইন রাজ্যে ছিল তাদেরকে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। ১৮২৪ সালের কারও হাড়ও পাওয়া যাবে না। দাম্ভিকতার সাথে অমানবিকভাবে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান বলে দিলেন ওরা বাংলাদেশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে; মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তারপরও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী দেশের উপর বাড়তি চাপ।মিয়ানমার সরকার তাদের সেখান থেকে বিতাড়িত করতে জঘন্য অত্যাচার চালাচ্ছে; ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে।
এরপর কোরিয়ার পণ্য প্রদর্শনী ‘শোকেস কোরিয়া ২০১৭’ উদ্বোধন করেন তিনি। বাংলাদেশে নিযুক্ত দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত আন সিয়ং-ডু, কোরিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অ্যান্ড কমার্স ইন্ডাস্ট্রির (কেবিসিসিআই) সিডেন্ট মোস্তফা কামাল, ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহাব উদ্দিন খান ও এলজি ইলেকট্রনিক্স বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাডওয়ার্ড কিম এসময় উপস্থিত ছিলেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ