Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাঙামাটির লংগদুতে অগ্নিকান্ড ফিরতে শুরু করেছেন ক্ষতিগ্রস্তরা

| প্রকাশের সময় : ১৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


সাখাওয়াত হোসেন : স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসছে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায়। অনেক পরিবার ফিরে আসছেন এরই মধ্যে। ফলে বর্ষার শেষে দীর্ঘ সাড়ে ৪ মাস পর শান্তির সুবাতাস বইছে রাঙামাটির লংগদু উপজেলায়। আগের মতোই চলছেন পাহাড়ে বসবাসরত পাহাড়ি-বাঙালীরা। তাই স্থানীয় পাহাড়ি-বাঙালীদের মধ্যে সা¤প্রদায়িক স¤প্রীতির মিল বন্ধন রচনা করতে খুব বেশি সময় লাগবে না বলে মনে করছে স্থানীয় প্রশাসন। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন নিরলসভাবে এ জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। নিরাপত্তায় এখন সক্রিয় রয়েছে সেনা বাহিনীর টহল। ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার সাড়ে ৪মাসের অধিক সময় পর পাহাড়িরা ব্যক্তিগত উদ্যোগ ও স্থানীয়দের সার্বিক সহযোগিতায় ছোট পরিষরে ঘর তুলছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লংগদু উপজেলায় অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিকারগুলো পুর্নবাসনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে নেয়া বিশেষ প্রকল্পের কাজ খুব শীঘ্্রই পুরোদমে শুরু করা হবে। সেই প্রকল্পের আওতায় নতুন বাড়ি-ঘর নির্মাণে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেয়া হবে। আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে লংগদু উপজেলার তিন গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর বাড়ি-ঘর নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারবে। এছাড়া এক বছর পর্যন্ত সরকারিভাবে ২২৪টি পরিবারকে ৩০ কেজি চাল ও ত্রাণ সহায়তা দেয়া হবে। স্থানীয় বাসিন্দা মহিবুল গত রাতে দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সেনা বাহিনী ও পুলিশসহ আইনÑশৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনীর সক্রিয়তায় গভীর পাহাড়ে বা বিভিন্ন জায়গায় আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলো এরই মধ্যে ফিরে আসছে। সরকারী সহযোগিতায় খুব শীঘ্্রই পাহাড়িদের পুনর্বাসন কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানানো হয়েছে। লংগদু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোসাদ্দেক মেহ্দী ইমাম সাংবাদিকদের জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য ৪২৬ বান্ডেল টিন ও ১২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। কয়েকদিনের মধ্যে এগুলো বিতরণ করা হবে। সরকারি পর্যাপ্ত বরাদ্দ রয়েছে, আসতে একটু সময় প্রয়োজন বলে তিনি মন্তব্য করেন। লংগদু আটারকছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঙ্গল কুমার চাকমা সাংবাদিকদের জানান, গৃহহীন মানুষগুলো এখনো মানবেতর জীবনযাপন করছে। শীত মৌসুমে এ অবস্থায় থাকলে তাদের অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে। তাই সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর বাড়ি-ঘর দ্রæত নির্মাণ কাজ শুরু করা হলে, শীত মৌসুমে এসব মানুষগুলো একটু স্বস্তিতে বসবাস করতে পারবে। লংগদুর মানিকজোড় এলাকার বাসিন্দা সুমন চাকমা(২৫) দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, নিরাপত্তা নিয়ে এখন কোন সমস্যা নেই। নিজেদের চেষ্টায় কিছু এলাকায় টং বা ছোট ঘর তৈরি করে পাহাড়ী পরিবারগুলো ফিরে আসছে। কোন আতংক নেই। আমরা চাই সরকারী সাহায্য দ্রæত আসুক। অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, পাহাড়ীদের রাজনীতি সুদুর প্রসারী। আর বাঙালীরা সেখানে নানা গ্রæপে বিভক্ত। পাহাড়ীদের মধ্যে প্রকাশে তিনটি গ্রæপ কাজ করলেও নিজেদের ইস্যুতে সবাই এক। কিন্তু বাঙালীরা নিজেদের ইস্যুতে এক থাকতে পারে না। জেএসএস, ইউপিডিএফ আর রিফরমিস্ট জেএসএস তিন গ্রæপই এখানে জম্মু ল্যান্ড গড়ার কাজটি করে যাচ্ছে। লেকের পানি নিরবে নিভৃত্তে বয়ে চলেছে আর কালো পাহাড় গুলো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে নানা ঘটনার স্বাক্ষী হয়ে। বার বার এখানে দাঙ্গার নির্মম নিষ্ঠুর ঘটনাগুলো কাপ্তাই লেকও যেমন, দেখে আসছে পাহাড়ও। গত ১ জুন লংগদু উপজেলার সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালক নুরুল ইসলাম নয়নের লাশ দীঘিনালার চারমাইল এলাকায় পাওয়া যায়। পরে ২ জুন সকালে একটি প্রতিবাদ মিছিল থেকে স্থানীয় পাহাড়িদের দোকান, বসত ঘরসহ চারটি গ্রামের দু’শতাধিক বাড়িঘরে আগুন দেয়া হয়।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ