Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ডিসেম্বরেই শুরু হবে ড্রয়িং ডিজাইনের কাজ

বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দরের স্থান নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়

| প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

উমর ফারুক আলহাদী : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণের জন্য মাদারীপুরের শিবচরের চরজানাজাতেই স্থান নির্ধারণ করার হচ্ছে। এখন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চূড়ান্ত অনুমোদনের অপেক্ষায়। স্থান নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই আগামী ডিসেম্বরে শুরু হবে ড্রয়িং ডিজাইনের কাজ। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন সিভিল এভিয়েশন ও জাপানি পরামর্শক দলের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীরা। সিভিল এভিয়েশন বলছে, ড্রয়িং ডিজাইন তৈরিসহ আনুসাঙ্গিক কাজসম্পন্ন করতে প্রায় দুই বছর সময় লাগতে পারে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্থান নির্ধারণ চূড়ান্ত করা একান্ত প্রয়োজন। নকশা অনুমোদনের পরই শুরু হবে বিমানবন্দর নির্মাণের কাজ। প্রায় ৮ হাজার একর খাস জমির ওপর পদ্মাসেতুর দক্ষিণ প্রান্তে মাদারীপুরের শিবচরের চরজানাজাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ হবে। এমনটিই জানিয়েছেন সিভিল এভিয়েশনের সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক।
২০১৯ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু করার আশাবাদ করছেন সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম নাইম হাসান।
চেয়ারম্যান নাইম ইনকিলাবকে বলেন, একটি অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর স্থাপন করা সময় সাপেক্ষ। কমপক্ষে ১০ বছর লাগবে পুরোপুরি কাজ শেষ করতে। তবে ২০১৯ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারলে ৫ থেকে ৬ বছরের মধ্যে প্রাখমিকভাবে বিমানবন্দরটি চালু করা যেতে পারে।
চেয়ারম্যান আরো নাইম হাসান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ এখন সময়ের দাবি। এ বিমানবন্দর নির্মাণ হলে পর্যটন ও অর্থনৈতিক খাতে দেশের আয় বেড়ে যাবে। তিনি বলেন, আমি মাত্র যোগদান করেছি, এরই মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এ প্রকল্পটির কাজ যাতে দ্রæত শুরু করা যায় সেদিকেই গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা আশা করছি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ড্রয়িং ডিজাইনের কাজ শুরু করতে পারব। আমরা প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নে সর্বাধিক নজর দিচ্ছি।
সিভিল এভিয়েশন জানায়, পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে মাদারীপুরের শিবচরের চরজানাজাতে প্রয়োজনী জমি পাওয়া গেছে। প্রায় ৮ হাজার একরের বেশি খাস জমি রয়েছে ওই এলাকায়। ফলে সরকারকে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে জমি কেনার কোন প্রয়োজন হবে না। এতে করে সরকারের অনেক টাকা সাশ্রয় হবে। এছাড়া একটি অত্যাধুনিক আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর স্থাপন ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরির জন্য ওই স্থানই উপযুক্ত বলে বিশেষজ্ঞ পরামর্শক দল জানিয়েছে।
সিভিল এভিয়েশনের তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী শহীদুল আফরোজ গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্প একটি মেগা প্রকল্প। এধরনের বড় প্রকল্পের নির্মাণ কাজ দেশে ইতিপূর্বে আর হয়নি। এটি সিভিল এভিয়েশনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আমরা এ চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নের জন্য দিনরাত কাজ করছি। দেশবাসীকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রæতি বাস্তবায়নের জন্য সিভিল এভিয়েশন বিশ্বের অন্যতম সেরা জাপানি বিশেষজ্ঞ দলের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। স্থান নির্ধারণ ও যাছাই বাছাই কাজ প্রায় শেষ পর্যায়। পদ্ম সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে যে স্থানটি প্রাধমিকভাবে জাপানি বিশেষজ্ঞরা বাছাই করেছেন প্রধানমন্ত্রীর তার চূড়ান্ত অনুমোদন দিলেই আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ড্রয়িং ডিজাইনের কার্যক্রম শুরু করা যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্থান নির্ধারণে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর প্রকল্পের বিস্তারিত সম্ভাব্যতা সমীক্ষা’ শীর্ষক প্রকল্পটি মাদারীপুরের শিবচরের চরজানাজাতে স্থাপনের জন্য সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। বর্তমানে ওই স্থানে নানা সমীক্ষার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন জাপানি পরামর্শক বিশেষজ্ঞরা। স্থান চূড়ান্ত হলে শুরু হবে ড্রয়িং ডিজাইনের কাজ। আগামী বছরের শেষে কিংবা ২০১৯ সালের প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের কাজ শুরু কথা রয়েছে।
সিভিল এভিয়েশন জানায়, পদ্মার ওপারে বঙ্গবন্ধুর নামে দেশের বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে খুব শীঘ্রই। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চারটি স্থানে প্রাক সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাইয়ের কাজ শেষে পদ্মা সেতুর দক্ষিণ প্রান্তে এ বিমানবন্দরটি স্থাপনের সিদ্ধান্ত অনেকটা চূড়ান্ত।
বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় জানায়, ভৌগোলিক অবস্থান বিবেচনায় বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যতগুলো আন্তর্জাতিক বিমানের রুট রয়েছে, তার সবগুলো দক্ষিণাঞ্চলের ওপর দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। দূরত্বের বিবেচনায়ও আন্তর্জাতিক বিমানসমূহের অবতরণের জন্যও পদ্মার দক্ষিণ প্রান্ত উপযুক্ত স্থান। এখানে বিমানবন্দর স্থাপিত হলে এর পাশে এক লাখ একর খাস জমিতে একটি স্যাটেলাইট সিটি নির্মাণ সম্ভব হবে এবং এর দক্ষিণ-পূর্ব পাশে নরিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক নৌ-কন্টেইনার টার্মিনাল স্থাপন করার সুযোগ থাকবে। মূলত এ সব সুবিধা বিবেচনায় রেখেই জাপানের নিপ্পন কোম্পানীর পরামর্শক বিশেষজ্ঞ দল কাজ করছেন।
জানা যায়, ১২০ কোটি টাকার সমীক্ষায় কাজ করছেন নিপ্পনের দু’ডজন বিশেষজ্ঞ। এদের মধ্যে রয়েছে অর্থনীতিবিদ, ভূ-তত্ত¡¡বিদ, নদী গবেষক, এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট, রাডার আইকাও মনোনীত এভিয়েশান, রানওয়ে ও স্থাপত্যবিদসহ ১৭ ক্যাটাগরির বিশেষজ্ঞ। বর্তমানে তারা একযোগে নিজ নিজ এসাইনমেন্ট নিয়ে ব্যস্ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ