Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১ আশ্বিন ১৪৩১, ২২ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

৪ লেন রক্ষায় নতুন প্রকল্পের সুপারিশ

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক : পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন

| প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 নূরুল ইসলাম

অত্যাধিক ওভারলোডের কারনে বছর না ঘুরতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চার লেন। ইকোনোমিক লাইফ লাইন খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়কটির কিছু অংশ বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য এটি রক্ষায় নতুৃন প্রকল্প গ্রহণের সুপারিশ করেছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। প্রকল্প শেষ হওয়ার পর সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরে পিসিআর জমা দেয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ভারতের কনসালটিং ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস ও বাংলাদেশের ডেভ কনসালট্যান্ট লিমিটেড।
পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে বলা হয়, মহাসড়কটির নকশা প্রণয়নে সম্মিলিত আদর্শ এক্সেল (ভারবহন ক্ষমতা) বা ইএসএ ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৮০ লাখ, যা ২০২৩ সালে অতিক্রম করার কথা রয়েছে। তবে গত বছর চার লেনটিতে ট্রাফিক সমীক্ষা ও এক্সেল লোড সমীক্ষা পরিচালনা করা হয়। এতে দেখা যায়, ২০১৬ সালেই আংশিকভাবে সম্মিলিত আদর্শ এক্সেল অতিক্রম করেছে। চলতি বছরও একই চিত্র দেখা যায়। এতে পুরোনো দুই লেনে দৈনিক ৫২ হাজার যান চলাচল ঝুঁকি তৈরি করছে। এতে করে আগামী তিন বছর সড়কটির উপরিভাগ (পেভমেন্ট) ঠিক রাখা কঠিন হবে। সওজের গাইড লাইন অনুযায়ী, মাঝারি ও ভারি ট্রাকের ভেহিকল ড্যামেজ ফ্যাক্টর (যান চলাচলে ক্ষতির পরিমাপক) বা ভিডিএফ যথাক্রমে চার দশমিক ৬২ ও চার দশমিক ৮০। তবে মহাসড়কটিতে এত বেশি ওভারলোডেড গাড়ি চলাচল করছে যে মাঝারি ও ভারী ট্রাকের ভেহিকল ড্যামেজ ফ্যাক্টর দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৫ দশমিক ৫৯ ও ১৯ দশমিক ২৭। এতে মহাসড়কটির ডিজাইন লাইফ (আয়ুষ্কাল) দ্রæত কমে যাচ্ছে। এক-দুই বছরের মধ্যে এর পেভমেন্টটি নতুন করে ওভারলে করতে হবে। সওজ সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে বৃষ্টি ও বর্ষায় মহাসড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত বছর এবং তার আগের বছর বর্ষায় এর পেভমেন্ট কয়েক দফা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া মহাসড়কটিতে গড়ে ২৫ হাজার যানবাহন চলাচল করে, যার ৮-১২ হাজারই ট্রাক। এগুলোর অধিকাংশই থাকে অত্যধিক ওভারলোডেড। এতে করে পাঁচ-ছয় মাস বর্ষায় সড়কটি বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া মহাসড়কটির বিভিন্ন স্থানে প্রায় পাঁচ মিটার প্রশস্ত সড়ক বিভাজক (মিডিয়ান) রাখা হয়েছে। এগুলোতে বৃষ্টির পানি জমে থেকে মূল সড়ককে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়কটির ক্ষতি কমিয়ে আনতে সওজের উচিত দ্রæতই মহাসড়কটির অবস্থা পর্যালোচনায় বিস্তারিত সমীক্ষা চালানো। পাশাপাশি উদ্বোধনের প্রথম বছর থেকেই এটির মেরামতে যথেষ্ট বরাদ্দ দিতে হবে। এদিকে মহাসড়কটির বিভিন্ন পয়েন্টে দ্রæত গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে। এতে ইন্টারসেকশনগুলো (মোড়) যানজটপূর্ণ হয়ে উঠবে। তাই এর অন্তত দুটি পয়েন্টে ফ্লাইওভার নির্মাণে পৃথক উপ-প্রকল্প নেওয়া উচিত। পয়েন্টগুলো হলোÑ ময়নামতি ও বারৈইয়ারহাট। মহাসড়কটির নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারেও কিছু ত্রæটি ছিল বলে মন্তব্য করা হয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে। এতে বলা হয়, চার লেন প্রকল্পটিতে নকশা অনুযায়ী ৫০/৭০ গ্রেডের বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। এর সঙ্গে সিলেট থেকে আনা পাথরের সংমিশ্রণ খুব একটা টেকসই ছিল না। এতে বিটুমিন উঠে গিয়ে কিছু অংশের সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। অথচ রাবারাইজড বিটুমিন বা পলিমার ব্যবহার করলে মহাসড়কটির পেভমেন্টের আয়ুষ্কাল আরও বেশি স্থায়ী হতো। জানতে চাইলে সওজের একজন কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেনের পাশে থাকা বাজার এলাকাগুলোয় ফ্লাইওভার নির্মাণে এরই মধ্যে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য শিগগিরই পৃথক একটি সমীক্ষা পরিচালনা করা হবে।
উল্লেখ্য, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০০৬ সালে। মহাসড়কের মূল অংশ চার লেন নির্মাণ শেষ হয়েছে গত বছর। এটির ভারবহন ক্ষমতা ২০২৩ পর্যন্ত ধরা আছে। তবে ২০১৬ সালেই তা আংশিকভাবে পেরিয়ে গেছে। আর অত্যধিক ওভারলোডিংয়ের কারণে এখনই ঝুঁকিতে পড়েছে চার লেনের এ মহাসড়ক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ