Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের অগ্রগতি থামাতে পারবে না -প্রধানমন্ত্রী

| প্রকাশের সময় : ৭ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ কখনও কোন সমস্যা দেখে ভয় পায় না। নির্মম-নির্যাতনের মাধ্যমে তাড়িয়ে দেয়া কয়েক লাখ মিয়ানমারের নাগরিকের এই ¯্রােত সত্তে¡ও এদেশ এগিয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় অন্যান্য দেশের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ গত বৃহস্পতিবার তার হোটেল কক্ষে দেখা করতে আসলে তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে আমরা বাঙ্গালী জাতি যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করি। ফলে কোন সমস্যা দেখা দিলে আমরা কখনও ভয় পাই না। তিনি বলেন, আমরা বরং এই সমস্যা মোকাবেলা করার মাধ্যমে আরও এগিয়ে যেতে চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের একজন সিনিয়র প্রতিনিধির সা¤প্রতিক ঢাকা সফরের মাধ্যমে এ সংকট সমাধানে নেপিদোর সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে বাংলাদেশের জনগণ সব সময় মানবতায় বিশ্বাস করে। মানবিক দিক বিবেচনা করে মিয়ানমার ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হওয়া এসব লোকজনকে আশ্রয় দিতে আশ্রয় কেন্দ্রের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মানুষ মানুষের জন্য। ফলে আমরা তাদেরকে (মিয়ানমারের জনগণ) বঙ্গোপসাগরে ফেলে দিতে পারি না। আমরা ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারলে তাদের এই চরম দুঃসময়ে অতিরিক্ত ৫ থেকে ৭ লাখ লোককেও আমরা খাওয়াতে পারবো। এক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে আমরা দিনে এক বেলা খাবো এবং অপর বেলার খাবার চরম বিপদে পড়া এসব লোককে দেবো। আমরা ধনী না হলেও আমাদের হৃদয় অনেক বড় এবং আমাদের অবস্থান মানবতার পক্ষে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা দুর্ভাগা রোহিঙ্গাদের ভাসান চরে স্থানান্তর করা হবে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজারে বিভিন্ন রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন। তিনি মিয়ানমারের রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা নারী ও শিশুদের কাছ থেকে লোমহর্ষক অভিজ্ঞতার বর্ণনা শোনেন।
তিনি বলেন, জন প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ এবং তার দলের স্বেচ্ছাসেবকরা এসব লোকের ভোগান্তি দূর করতে কঠোর পরিশ্রম করছে। তিনি বলেন, কোন বৈদেশিক সাহায্যের অপেক্ষায় না থেকে আমরা সাধ্য অনুযায়ী তাদের থাকা, খাওয়া ও ঔষধের ব্যবস্থা করেছি। আন্তর্জাতিক স¤প্রদায় বাংলাদেশের জনগণের এ ধরণের বদান্যতা দেখে বিস্মিত হয়েছে। নিজের শরণার্থী জীবনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ও আমার বোন ছয় বছর ধরে এ ধরণের জীবনযাপন করায় শরণার্থী জীবনের ব্যাপারে আমরা ভাল জানি।
দেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা প্রমাণ করেছি, আমরা পারি। তিনি বলেন, মিথ্যা ও কাল্পনিক দুর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক এই সেতু নির্মাণে তাদের ঋণ প্রত্যাহার করে নেয়। এই প্রকল্পে নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তায়নের চ্যালেঞ্জে আমরা বিজয়ী হয়েছি।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বার্থান্বেষী মহল তার এবং তার পরিবারের ভাবমূর্তি ¤øান করতে অশুভ প্রচেষ্টা চালায়। তবে কানাডিয়ান ফেডারেল কোর্টে সকল অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। নিজের রাজনৈতিক লক্ষ্যের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা জনগণের জন্য রাজনীতি করি, জনগণের জন্য কাজ করি এবং প্রমাণ করেছি আমরা পারি।
শেখ হাসিনা বলেন, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে তখন দেশের উন্নয়ন প্রত্যক্ষ করা যায়। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশকে বিশ্বে একটি মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। আমরা ভিক্ষার হাত বাড়িয়ে দিতে চাই না। আমরা চাই আত্মমর্যাদা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন তার দুর্নীতি মামলায় আদালতে হাজিরার জন্য ১৪০ বার সময় নিয়েছেন এবং আদালত পরিবর্তনের জন্য ২৪ থেকে ২৫ বার আবেদন করেছেন।
শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রবাসী নেতাকর্মীদেরকে আগামী সাধারণ নির্বাচনে দলের বিজয়ের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহŸান জানান।
আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ইউকে চ্যাপ্টার আওয়ামী লীগ সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ, সহসভাপতি জালাল উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজেদুর রহমান এবং যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ