Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো উৎপাদন ইউনিট একই সময়ে বন্ধ

আবারো জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রীড বিপর্যয়

| প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম
একমাসের মধ্যে পুনরায় গ্রীড বিপর্যয়ের কবলে পড়ল সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল। আশি^নের ভ্যাপসা গরমে চরম দুর্ভোগের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় কোটি মানুষ। গতকাল বুধবার দুপুর ১২টা ৫৫মিনিটে আকষ্মিকভাবেই ফ্রিকোয়েন্সি ফল করে জাতীয় গ্রীড বিপর্যয়ের কবলে পড়ে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো গ্রীড সাব-স্টেশন। ফলে বরিশালে ১১০ মেগাওয়াটের সামিট পাওয়ার স্টেশন এবং ভোলার ২২৫ মেগাওয়াটের ক¤বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার স্টেশন সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো উৎপাদন ইউনিটই একযোগ বন্ধ হয়ে যায়। একই সাথে বরিশাল ও ঝালকাঠী সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবারহও বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলের বেশীরভাগ এলাকাতেই বিদ্যুৎ সরবারহ স্বাভাবিক হয়নি। বেশীরভাগ এলাকায় প্রতি ঘণ্টায় লোডশেডিং করে সরবারহ স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা চলছিল। তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোলার ২২৫ মেগাওয়াটের ক¤বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার স্টেশনটি সচল করা সম্ভব হয়নি। রাতের মধ্যেই দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত এ বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিটটি চালু করা সম্ভব হবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
গতকাল দুপুর ১২টা ৫৫মিনিটে বরিশালÑভোলা ২২৫কেভী সঞ্চালন লাইনটি ট্রিপ করার সাথে বরিশালÑমাদারীপুরÑফরিদপুরÑভেড়ামাড়া ১৩২কেভী ডবল সার্কিট লাইনের ১নম্বর সার্কিটটিও ট্রিপ করার সাথেই দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো পাওয়ার স্টেশন সহ এ অঞ্চলে বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ হয়ে যায়। পিজিসিবি’র গ্রীড সাব-স্টেশনের প্রকৌশলীগন ‘অপারেশন বøাক আউট’ পদ্ধতিতে পরিস্থিতি উত্তরনে সব মেধা নিয়োজিত করে ১৫মিনিটের মাথায়ই জাতীয় গ্রীড থেকে স্টেশন লোড সংগ্রহ কওে সাব-স্টেশনগুলো সচল করতে সক্ষম হন। এরই ধারাবাহিকতায় দুপুর দেড়টার দিকে প্রায় ১শ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরিতে বরিশাল ৩৩কেভী সাব-স্টেশনকে মাত্র ২০মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবারহ শুরু করা হয় জাতীয় গ্রীড থেকে। দুপুর ৩টার দিকে সামিট পাওয়ারের ছোট ছোট কয়েকটি ইউনিট চালু করে ক্রমান্বয়ে বিদ্যুৎ সরবারহ কিছুটা বৃদ্ধি করা হয়। তবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বরিশালে ৪০মেগাওয়াট সহ দক্ষিণাঞ্চলে সর্বোচ্চ সরবারহ ছিল ৬০মেগাওয়াটের মত। অথচ তখন চাহিদা ছিল ১২০মেগাওয়াটেরও বেশী।
গতকালের এ ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবনে চরম সঙ্কট নেমে আসে। এমনকি বরিশাল ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলা ও উপজেলা হাসপাতালের রোগীরাও চরম দুর্ভোগে পরেন।বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো পৌর এলাকাতে পানি সরবারহে পর্যন্ত চরম সঙ্কট সৃষ্টি হয়।
গত কয়েক মাস ধরেই দক্ষিণাঞ্চলে ঘন ঘন গ্রীড বিপর্যয়ে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে আসছে। মাস কয়েক আগে টর্ণেডোতে বিদ্যুতের ইষ্টার্ণ জোনে কয়েকটি ট্রান্সমিশন টাওয়ার বিধ্বস্ত হবার ফলে ইষ্ট-ওয়েষ্ট ইন্টার কানেক্টরের মাধ্যমে পশ্চিম জোনে বিদ্যুৎ সরবারহে ঘন ঘন বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। চলতি মাসের মধ্যে বিধ্বস্ত টাওয়ারগুলোর স্থলে নতুন টাওয়ার স্থাপন করে জাতীয় গ্রীড থেকে পশ্চিম জোনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও সরবারহ ব্যবস্থার উন্নতি আশা করছেন দায়িত্বশীল মহল।
তবে এ ব্যাপারে গতকালও পিজিসিবি’র পশ্চিম জেনে ডিজিএম-এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে পাওয়া যায়নি। ওজোপাডিকো’র পরিচালক কারিগরি জানান ‘গ্রীড ট্রান্সমিশন লাইনে ফ্রিকোয়েন্সী নেমে যাবার কারনে গ্রীড ট্রিপ করে বিদ্যুৎ সরবারহ বন্ধ হয়ে যায়। তার মতে আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থা আরো সমৃদ্ধ হলে এ পরিস্থিতি উত্তরন সম্ভব হবে। চলতি মাসেই ইষ্ট-ওয়েষ্ট ইনন্টার কানক্টরের মাধ্যমে পশ্চিম জোনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন ব্যবস্থার উন্নতি হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ