Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নানা কৌশলে নিষিদ্ধ সিআরটি পিকচার টিউব আমদানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : | প্রকাশের সময় : ৪ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

পানগাঁ পোর্টে আটক ২ শতাধিক কন্টেইনার
ক্ষতিগ্রস্ত দেশীয় উদ্যোক্তারা
পুরনো ও ব্যবহৃত সিআরটি টিভির পিকচার টিউব আমদানি নিষিদ্ধ করা হয় ২০১৫ সালে। কিন্তু তার পরেও থেমে নেই আমদানি। স¤প্রতি পানগাঁ পোর্টে আটক করা হয়েছে ২ শতাধিক কন্টেইনার আমদানি নিষিদ্ধ সিআরটি পিকচার টিউব। মিথ্যা ঘোষণা আর ওভার ইনভয়েসিং করে আমদানি করা এসব পিকচার টিউব ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্রান্ডের নকল লোগো লাগিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। ফলে নামি দামি এবং ব্র্যান্ডের টিভি কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা। আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এই খাতের দেশিয় শিল্পোদ্যোক্তারা। একই সঙ্গে পুরনো পিকচার টিউবে থাকা এক ধরনের বিষাক্ত গামা রশ্মি দেহ ও চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
সূত্র মতে, কিছু দিন আগে ২ শতাধিক কন্টেইনার আমদানি নিষিদ্ধ পিকচার টিউব আটক করেছে শুল্কগোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন শুল্কগোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান। তিনি বলেন, আমদানি নিষিদ্ধ অনেকগুলো কন্টেইনার জব্দ করা হয়েছে। আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, এসব পিকচার টিউব ব্যবহার উপযোগী কি না তা পরীক্ষা করার জন্য ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বিশেষজ্ঞ দলের কাছে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, আমদানিনীতি আদেশ ২০১২-১৫ এর অন্তর্ভুক্ত আমদানিনিষিদ্ধ পণ্য তালিকার ফুটনোট (৪)-এ পুরনো ও ব্যবহৃত পিকচার টিউব আমদানি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ধরনের কার্যক্রম কাস্টমস অ্যাক্ট ১৯৬৯-এর ১৫, ১৬ ও ৩২ ধারার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে উল্লেখ রয়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, কাস্টমস আইন অনুযায়ী জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এসব পুরনো পিকচার টিউব নিলামে বিক্রি করারও সুযোগ নেই। এগুলো বাধ্য হয়ে ধ্বংস করতে হয়। ধ্বংস করাও কঠিন বিষয়।
জানা গেছে, নতুন পিকচার টিউব কিনতে হয় প্রতিটি ২৯ ইউএস ডলার বা তার চেয়েও বেশি দামে। অন্যদিকে পুরনো পিকচার টিউবের দাম ১০ ডলারেরও কম। বর্তমানে পিকচার টিউব আমদানিতে ৩৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। যেহেতু পুরনো ও ব্যবহৃত পিকচার টিউব আমদানি নিষিদ্ধ, তাই সেগুলো নতুনগুলোর সমান দাম দেখিয়েই বন্দর থেকে ছাড় করাতে হয়। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা বাকি টাকা ওভার ইনভয়েসিং করে বিদেশে টাকা পাচার করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরনো পিকচার টিউব হলো এক ধরনের বিষাক্ত পদার্থ। এসব দিয়ে তৈরি করা টেলিভিশন থেকে নির্গত গামা রশ্মি দেহ ও চোখের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। অন্যদিকে পুরনো পিকচার টিউবের অতিবেগুনি রশ্মি ওজন স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে পরিবেশ বিপর্যয়ে ভ‚মিকা রাখে।
ব্যবসায়ীরা জানান, এই পিকচার টিউব ব্যবহৃত হয় শুধু সিআরটি (ক্যাথড রে টিউব) টেলিভিশন তৈরিতে। আগে বিভিন্ন দেশে এই পিকচার টিউব তৈরি হলেও বর্তমানে কেবল চীনের একটি প্রতিষ্ঠান টিজিডিসি এটি তৈরি করছে। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার আশায় স্বল্পমূল্যে পুরনো ও ব্যবহৃত পিকচার টিউব আমদানি করছেন। এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন প্রকৃত টিভি উৎপাদন ও সংযোজনকারী দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ