পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চিন্তা-ভাবনা ও পড়াশোনা করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন সেটা হচ্ছে, বুঝে-শুনে, লেখাপড়া করে, সব কিছু বিচার করে বিনিয়োগ করবেন। বিনিয়োগ শিক্ষা একটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয়। এর দিকে নজর রাখা উচিত। তা না হলে দুর্দশায় পতিত হতে হয়।’
গতকাল সোমবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব ইউনুসুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন করেন বিএসইসির চেয়ারম্যান ড. এম খায়রুল হোসেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘নব্বইয়ের দশকে এবং ২০১০ সালে শেয়ারবাজার ধস নামে। এ ধস হয় আইন-কানুন, নীতিমালা দুর্বলতার কারণে। এরপর বিএসইসি (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ এন্ড কমিশন) পুনর্গঠন করা হয়। তাড়াহুড়ো না করে আস্তে আস্তে শেয়ারবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রশাসনিক সংস্কার এবং আইন-কানুন, নীতিমালার সংস্কার করা হয়। ফলশ্রæতিতে ২০১৩ সালে পুজিবাজার ভালো অবস্থানে পৌঁছে, যা এখনো স্থিতিশীল আছে।’
নিজের জীবনের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী জানান, ১৯৬৪ সালে পাকিস্তানে করাচিতে চাকরিরত থাকা অবস্থায় বিনিয়োগের দিকে আকৃষ্ট হই। তখন পাকিস্তানে স্থিতিশীল স্টক মার্কেট ছিল। সেখানে বিনিয়োগ করি এবং লাভবানও হই। পরবর্তীতে বিনিয়োগ দেখাশোনার জন্য ১৯৬৯ সালে আইসিপিতে (ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব পাকিস্তান) কাগজপত্র জমা বিদেশে পাড়ি দেই। এর মধ্যে দেশ ভাগ হওয়ায় বিনিয়োগের অর্থ ফেরত পাইনি। তখন ৩৩ হাজার টাকার মতো বিনিয়োগ ছিল। এ অভিজ্ঞতার পর বিনিয়োগ থেকে কয়েক মাইল দূরে থাকি। এরপর নব্বইয়ের দশকে বিনিয়োগ করলেও ২০০২ সালের পর থেকে ব্যক্তিগত কারণে আর বিনিয়োগ করিনি।
বর্তমান বিনিয়োগ পরিস্থিতি তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগে খুব চিৎকার করে বলেছি, দেশে বিনিয়োগের প্রয়োজন আছে। এখন বিনিয়োগের জন্য একটি প্রতিষ্ঠিত ফ্রেমওয়ার্ক আছে। এখন সহজেই বিনিয়োগ বাড়ানো যায়।
বিএসইসি’র শুভেচ্ছা দূত বিশ্বসেরা ক্রিকেট অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বলেন, লন্ডনে খেলার সময় অবসরে দেখতাম খেলোয়াড়রা পড়াশোনা করছে। কী বিষয়ে পড়াশোনা করছে জানতে চাইলে তারা বলতো, স্টক মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য পড়াশোনা করছে। একইভাবে দেশের বিনিয়োগকারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের আগে পড়াশোনার করা উচিত।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব ইউনুসুর রহমান নিজ জীবনের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বলেন, খুলনার বিভাগীয় কমিশনার থাকাবস্থায় সম্পর্কে মামা শ্বশুড় তাকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য তাগাদা দিতেন। বলতেন, পুঁজিবাজারে ১০-২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলে ৩-৪ মাসের মাথায় ২০-৩০ হাজার টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। তখন আর বিনিয়োগ করা হয়নি। এরপর তিনি মারা যান। পরিবারের সবাই মনে করে, শেয়ারবাজার ধসের কারণে তার বিনিয়োগ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিনি মারা গেছেন।
তিনি আরো বলেন, ২০১০ সালের পর শেয়ার বাজার ধসের পর আইন-কানুন, নীতিমালা সংশোধন করা হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে আইনী কাঠামোর দিক থেকে বিএসইসি অনেক বেশি শক্তিশালী। আন্তর্জাতিক অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশনসের (আইওএসসিও) রেটিংয়ে বিএসইসি ‘এ’ ক্যাটাগরিতে স্থান পেয়েছে। এখন বিনিয়োগকারীদের শিক্ষিত করতে পারলে শক্তিশালী পুঁজিবাজার গড়ে তোলা সম্ভব। এ জন্য পাঠ্যপুস্তকে বিনিয়োগ শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
বিএসইসি’র চেয়ারম্যান খায়রুল হোসেন বলেন, বিশ্বের ৮১ দেশে একযোগে বিশ্ব বিনিয়োগকারী সপ্তাহ পালিত হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। এ সপ্তাহ পালন শেষে আইওএসসিও প্রতিবেদন পাঠানো হবে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর প্রতিবেদন থেকে বিএসইসি অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারে।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনের তথ্য মতে, দেশে ১ শতাংশ উচ্চ শিক্ষিতের সংখ্যা বাড়লে জিডিপি ৩ শতাংশ বাড়ে। সম্প্রতি ভারত পাঠ্যক্রমে বিনিয়োগ শিক্ষা চালু করেছে, শ্রীলঙ্কায় ৮ম শ্রেণী থেকে বিনিয়োগ শিক্ষা দেয়া হয়। তেমনি বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম শক্তিশালী হলে পুঁজিবাজার শক্তিশালী হবে, কারণ বিনিয়োগকারীরাই পুঁজিবাজারের মূল চালিকাশক্তি। পুঁজিবাজার শক্তিশালী হলে দেশ বিদেশি সহায়তা, ব্যাংক ঋণ নির্ভরতা ছাড়াই অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব হবে। এ জন্য পাঠ্যক্রমে বিনিয়োগ শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি। তিনি জানান, আগে সপ্তাহে দুই দিন বিনিয়োগ শিক্ষা দেয়া হতো। আগামী থেকে সপ্তাহে ৫ দিন বিনিয়োগ শিক্ষা দেয়া হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে একটি র্যালি বের হয়। র্যালিটি মৎস ভবন থেকে প্রেসক্লাব হয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে এসে শেষ হয়। বিভাগীয় শহরগুলোতেও র্যালি হওয়ার কথা রয়েছে।
##
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।