Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অর্থ চুরির ঘটনায় সরকারের পদত্যাগ চায় বিএনপি : রাষ্ট্রের কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশ আছে -হান্নান শাহ

প্রকাশের সময় : ১৬ মার্চ, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪১ পিএম, ১৫ মার্চ, ২০১৬

স্টাফ রিপোর্টার : রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় কেবল বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের পদত্যাগই যথেষ্ট নয়, এর দায় নিয়ে সরকারেরও পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহ বলেন, ক্ষমতাসীন দলের উচ্চ পর্যায়ের কর্তাব্যক্তিদের যোগসাজশেই এই লুটের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিএনপির ষষ্ঠ কাউন্সিলের জন্য বরাদ্দ পাওয়া রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বর পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে হান্নান শাহ এ কথা বলেন। এ সময় কাউন্সিলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সার্বিক বিষয়ে উপকমিটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন হান্নান শাহ। তিনি অভিযোগ করেন, ‘কাউন্সিলে আসা বিপুল মানুষের জন্য এ স্থান যথেষ্ট নয়।
এদিকে বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেন, গভর্নরের পদত্যাগের মধ্য দিয়ে এটা প্রমাণিত যে, এই চুরির সাথে শুধু তিনিই (গভর্নর) দায়ী নন, সরকারের উচ্চমহলও জড়িত। আর্থিক খাতে ভয়াবহ লুটপাটের দায় এড়ানোর জন্য শুধু গভর্নরের পদত্যাগই যথেষ্ট নয়। চুরির দায় প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীসহ গোটা সরকারের। তারা এর দায় এড়াতে পারেন না। গভর্নরের পদত্যাগ প্রমাণ করে এর পেছনে আরো বড় শক্তি, আরো বড় ক্ষমতাশালী ব্যক্তিরা জড়িত। আমি আবারো অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের পদত্যাগ দাবি করছি।
তিনি বলেন, ভোটারবিহীন এই সরকার পদত্যাগের মধ্য দিয়েই সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। নির্বাচনকালীন যদি একটি নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা হয়, তাহলে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে এবং জনগণ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবে। জনগণের ভোটে যারা বিজয়ী হয়ে যে সরকার গঠন করবেন, তারা জনগণের কাছে জবাবদিহি থাকবে। জনগণের কাছে যারা জবাবদিহি থাকেন, তারা চুরি-চামারির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকেন না।
রিজভী সমালোচনা করে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে অর্থ লোপাটের ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা ও অনেক নাটকীয়তার পর গভর্নর ড. আতিউর রহমান পদত্যাগ করেছেন। নিজে করেছেন স্বেচ্ছায়, না বাধ্য করা হয়েছে, সেটা বলা মুশকিল। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আতিউর রহমান সততার বিল দৃষ্টান্ত। আমরা এদেশে অতীতেও দেখেছি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বের বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান যাকে দুর্নীতির কথা বলেছেন, তাকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দেশপ্রেমিক। এরকম তিনি বলেই থাকেন।
তিনি বলেন, এই ঘটনার সাথে রাঘব-বোয়ালরা জড়িত। আসলে সেই রাঘব-বোয়াল কারা তা তদন্ত না হওয়ার আগেই যে সার্টিফিকেট বা সনদ দেয়া হলো বিদায়ী গভর্নর সাহেবকে। তাতেই মনে হয় যে ব্যাপারটা একেবারে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকেই বিষয়গুলো ঘটছে বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।
বিএনপির এই যুগ্ম মহাসচিব বলেন, অবস্থাদৃষ্টে ও পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে আমাদের মনে হয়, যে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ জায়গা থেকে একটা মদদ আছে বা তারা জানেন। কারণ ঘোড়ার আগে গাড়ি জুড়ে দেন, তাহলে এটা চলবে না। তদন্তের আগেই আপনি সার্টিফিকেট দিয়ে দিচ্ছেন। এসব কথাই সন্দেহ দানা বাঁধছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশে আর্থিক খাতসহ সারাদেশে যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে, এটা একটা বড় ঝড়ের সংকেত বহন করে।
সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা বিএনপির মনোনীত প্রার্থীদের বাড়িঘরে হামলা ও প্রচার-প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
ঝিনাইদহের বিভিন্ন ইউনিয়নের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের মিথ্যা অভিযোগে ব্যাপকভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তারা প্রচারণা চালাতে পারছে না। গ্রেফতার আতঙ্কে কর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে আব্দুস সালাম, খায়রুল কবীর খোকন, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সানাউল্লাহ মিয়া, মুস্তাফিজুর রহমান বাবুল, আব্দুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ