Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতিসংঘে পাকিস্তানের নিন্দা ও চীনের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করায় ভারতের সমালোচনা

| প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


ইউএনআই : পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয় বলে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসলামাবাদের নিন্দা করার পাশাপাশি চীনের প্রতি ঔদ্ধত্য প্রদর্শনের জন্য চীনের রাষ্ট্র পরিচালিত সংবাদ মাধ্যম ভারতের সমালোচনা করেছে। চীনা সরকারি সংবাদ মাধ্যম বলে, ভারতের এ ধরনের আচরণ তার বহুল ঘোষিত বিশ^শক্তি হওয়ার উচ্চাভিলাষের সাথে খাপ খায় না।
দি গেøাবাল টাইমস সম্প্রতি প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে ভারতের বোকামি ও কুৎসিততাকে তিরস্কার করে ভারতের ন্যায়বিচার ও মহত্তে¡র বড়াই করার জন্য ভারতের রাজনীতিকদের সমালোচনা করে। সম্পাদকীয়তে প্রকৌশলি ও ডাক্তার তৈরিতে ভারতের সক্ষমতার জন্য ভারতীয়দের অতি গর্বিত হিসেবে চিত্রিত করে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুুষমা স্বরাজের আচরণকে রাজনৈতিক ভাবে সঠিক নয় এবং একই সাথে ভারতের প্রতিবেশীদেরকে হীন চোখে দেখা বলে উল্লেখ করা হয়। সম্পাদকীয়তে বলা হয়, এ ভাবে অন্যদের খাটো করা হলে কোনো বিরোধে ঐকমত্যে পৌঁছা কঠিন হতে পারে।
পাকিস্তানে সন্ত্রাসী গ্রæপগুলো অবস্থান করছে এ সত্যতা স্বীকার করে চীনের কম্যুনিস্ট পার্টি পরিচালিত দৈনিকটি বলে, বস্তুত পাকিস্তানে সন্ত্রাস আছে। কিন্তু সন্ত্রাসকে সমর্থন করা কি দেশটির জাতীয় নীতি? সন্ত্রাস রফতানি করে পাকিস্তানের লাভ কি? ভারতের যখন দৃঢ়বিশ^াস যে পাকিস্তান একটি অশুভ দেশ সেখানে ভারত কি আসলেই প্রকৌশলি ও ডাক্তার তৈরিকারক একটি আইটি সুপার পাওয়ার?
পাকিস্তানের প্রতি ভারতের কট্টর মনোভাব প্রদর্শন করে যে পাকিস্তান সন্ত্রাসের জগত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য যে আত্মত্যাগ করেছে এবং ভারতের সাথে তাদের ঐতিহাসিক বিরোধে সন্ত্রাসকে মিশিয়ে না ফেলার যে সংযম প্রদর্শন করেছে ভারতের রাজনীতিকরা সে ব্যাপারে জ্ঞাত নন।
পাকিস্তানের সাথে চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত তার নিজস্ব মত ও যুক্তি আরোপ করে উল্লেখ করে এতে বলা হয়, ভারত চীনের কৌশলগত বৈরিতাকে নিজস্ব যুক্তিতে মূল্যায়ন করেঃ পাকিস্তানের সাথে চীনের বলিষ্ঠ সম্পর্ক ভারতকে মোকাবেলার জন্য। দোকলামে চীনের রাস্তা নির্মাণ ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের জন্য হুমকি এবং পাকিস্তান ও অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশের সাথে চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ হচ্ছে ভারতকে ঘিরে ফেলার লক্ষে। যে কোনো ঘটনাতেই ভারতের স্বার্থ এ যুক্তিকে কেন্দ্র করেই বিবেচনা করা হয়।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অর্থনীতি ও পররাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে মসৃণ উন্নয়নের ঘটনায় অহংকারী ভারত পাকিস্তানকে অবজ্ঞার চোখে দেখে এবং চীনের সাথে ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করে। সে মনে করে তার প্রতিবেশিদের তাকে ভয় করা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের তাকে তোয়াজ করে চলা উচিত। ভারত যথেষ্ট স্মার্ট হলে তার উচিত বিরোধকে আর ছড়িয়ে পড়তে না দিয়ে চীনের সাথে বন্ধুত্ব ও পাকিস্তানকে সম্মান করা। সুপ্রতিবেশী সুলভ সীমান্ত কূটনীতির অনুসারী হওয়ায় ভারতের সাথে বিরোধিতা করার ইচ্ছা চীনের নেই। বৈরিতা চীনের জন্য ভালো নয়।
সম্পাদকীয়তে পত্রিকাটি আরো বলে, অন্যদের সাথে বন্ধুত্বের নীতির ভিত্তিতে চীন মনে করে একুশ শতকের দেশগুলোর বিগত শতকটির হামলাকারীদের মত যুদ্ধ বা শত্রæতার পথ গ্রহণ করা সমীচীন নয়। বহু দেশের মধ্যেই এখনো ঐতিহাসিক বিরোধ রয়ে গেছে যা সহজে সমাধানযোগ্য নয়। কেউ যখন তার নিজের স্বার্থ রক্ষা করতে চায় তার উচিত অন্যের স্বার্থের কথা ভাবা।
সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের নিজের যুদ্ধের প্রতি সমর্থন জানিয়ে পত্রিকা বলে, পাকিস্তান সন্ত্রাস রফতানি করে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ভারতীয় এলিটদের জন্য রাজনৈতিক আহম্মকি ও অদূরদর্শিতা।
গেøাবাল টাইমস বলে, একটি শক্তিশালী ও সুসংগঠিত দেশ চীনকে তাচ্ছিল্য করার কোনো কারণ ভারতের নেই। বরং দোকলাম সংকট থেকে ভারতের শিক্ষা নেয়া এবং ধারণাতীত রকম আত্মতুষ্টি থেকে বের হয়ে আসা উচিত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ