Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফটিকছড়িতে কিশোরী ধর্ষিত রফা-দফার চেষ্টা ব্যর্থ

| প্রকাশের সময় : ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

ফটিকছড়ি উপজেলা সংবাদদাতা : ফটিকছড়ির সুন্দরপুরে সতের বছরের এক কিশোরী আপন মামত ভাই কর্তৃক ধর্ষিত হয়েছে। এ ঘটনা সামাজিক ভাবে ধামাছাপা এবং টাকায় রফা-দফার প্রাণান্তকর চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে অবশেষে মামলায় গড়িয়েছে।
সূত্র জানায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর বেলা আড়াইটা নাগাদ সুন্দরপুর ইউপির দক্ষিণ আজিমপুর গ্রামের আলী হোসেন ফকির বাড়ীর জনৈক শফিউল আলমের স্ত্রী নুরবানু তার সতের বছরের কিশোরীকে ঘুমন্তাবস্থায় রেখে বসতঘরের বাইরে শিকল লাগিয়ে অর্ধ কিলোমিটার দুরত্বে অবস্থিত তার পিত্রালয় কাসেম আলী বাড়ীতে অসুস্থ ভাবী অনোয়ারা বেগমকে দেখতে যায়। এ সময় তার ভ্রাতুষ্পুত্র জাহেদুল হোসেন মানিক (২৪) মাকে দেখতে আসা ফুফির কন্যাকে একা রয়েছে বুঝতে পেরে মানিক ফুফাত বোনের মুখ চেপে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে দ্রæতই পালিয়ে যায়। পরে মেয়েটির মা নুরবানু ঘরে পৌঁছলে ঘটনা খুলে বলে। অসহায় মা নুরবানু ফের দ্রæত পিত্রালয়ে গিয়ে বড়ভাই শামসুল আলম ও তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে তাদের পুত্র কর্তৃক তার মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা বললে ধর্ষকের মা আনোয়ারা অসুস্থাবস্থায় তথায় গিয়ে ঘটনা কাউকে না জানানোর অনুরোধ করে এবং ৫০ হাজার টাকা দেবার ঘোষণা দেয়। এতে ক্ষুব্দ হয়ে মেয়ের মা নুরবানু ঘটনা সামাজিকভাবে বিচার দাবী করে। ওইদিন রাত ৯টায় স্থানীয় ইউপি মেম্বার মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে শালিশী বৈঠক শুরু হয়। এতে ধর্ষক মানিক উপস্থিত না হলে তার পিতাকে চাপ দিয়ে রাত ১২টায় তাকে উপস্থিত করানো হয়। ইউপি মেম্বার মুজিব জানান, জনসমক্ষে সে ধর্ষণ করেছে মর্মে ঘটনার স্বীকারোক্তি দেয়। যেহেতু ধর্ষক-ধর্ষিতা মামত-ফুফাত ভাই-বোন; সেহেতু ইউপি চেয়ারম্যানের পরমার্শে সামাজিক নেতৃবর্গ ‘বৈবাহিক’ ব্যবস্থা করা যায় কি-না শলা-পরামর্শ করার কোন এক ফাঁকে ধর্ষক মানিক পালিয়ে যায়। ফলে আর কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যায়নি। তবে ধর্ষক মানিককে পরদিন রাতে হাজির করার জন্য তার পিতা শামসুকে দায়িত্ব দেয়া হয়। পরদিন বৃহষ্পতিবার আমরা আবারো বৈঠকে বসি; কিন্তু ধর্ষকের পিতা পুত্রকে হাজির করতে পারেনি। ফলে আমরা কোন সুরাহা করতে পারিনি। তিনি জানান, ধর্ষক মানিক একজন লম্পট, ৫/৬ মাস পূর্বে সে বাড়ীর পাশর্^বর্তী এক মেয়েকে ধর্ষণ করে ৩০ হাজার টাকায় রফা-দফা করে পার পেয়ে যায়। তার কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত। তবে ধর্ষিতার পরিবারের দাবী- বৈঠকে ধর্ষকের পিতা শামসু ধর্ষিতাকে অন্যত্র বিয়ে দিতে ৩ লাখ টাকা ৫ মাসের মধ্যে দেবার প্রস্তাব দেয়; অনেকে এ টাকায় রফা-দফা করে ঘটনা ধামাছাপা দেবার চেষ্টা করে কিন্তু আমরা এতে রাজি হয়নি। আমরা চাই- ধর্ষকের সর্বোচ্চ শাস্তি। এ ব্যাপারে ধর্ষিতা নিজে বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে ফটিকছড়ি থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার আইও সাব-ইন্সপেক্টর মোহাম্মদ রিদুয়ানুল হক জানান, ভিকটিমের মেডিকেল পরীক্ষা করা হয়েছে। আসামীকে ধরার সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ