সরকার পচা গমের পর এবার পচা চাল আমদানি করছে বলে অভিযোগ করেছেন
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব
রুহুল কবির রিজভী। এ ঘটনার পেছনে সরকারের রাঘব বোয়ালরা জড়িত। তবে বর্তমানে ভয়াবহ খাদ্য সঙ্কটের পাশাপাশি সীমাহীন বেকারত্ব যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে কোনোভাবে দুর্ভিক্ষ ঠেকানো যাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
তিনি বলেন, সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। কিন্তু খাদ্যের অনুপযোগী চাল বা গম সরবরাহ করা সংবিধান পরিপন্থী। এর মাধ্যমে সরকার শুধু সংবিধান বিরোধী কাজই করেনি, মানবতাবিরোধী কাজ করছে, জনগণের ক্ষুধাকে নিয়ে তামাশা করছে।
এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও বাড়িতে তল্লাশি এবং পুলিশী হামলা চলছে জানিয়ে এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
এসময়
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে
রুহুল কবির রিজভী বলেন, থাইল্যান্ড থেকে দরপত্রের মাধ্যমে আমদানি করা প্রায় ৩২ হাজার ১৪০ টন চাল নিয়ে দুটি জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। এরমধ্যে এমভি থাই বিন বে নামের একটি জাহাজ ১২ হাজার ২৯০ টন চাল নিয়ে ৩১শে আগস্ট এবং এমভি ডায়মন্ড-এ নামের অপর চালবাহী জাহাজ আসে চলতি মাসের ১ তারিখ। এতে ১৯ হাজার ৮৫০ টন চাল রয়েছে।
গত দুদিন আগে ফাঁস হয় পচা চালের গোমর। চালগুলো একবারেই খাওয়ার অনুপযোগী এবং অত্যান্ত নিম্মমানের। ব্যবসায়ীরা এ কথা বললেও খাদ্য বিভাগ বলছে অত্যন্ত নিম্নমানের। খাদ্য বিভাগ চালগুলো ফিরিয়ে নিতেও বলেছে থাইল্যান্ডের এ জাহাজ দুটিকে। কিন্তু জাহাজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা চাল ফেরত না নিয়ে চালগুলো বেসরকারিভাবে হলেও বিক্রি করে যাবেন।
গত মঙ্গলবার থেকে তারা যোগাযোগ করেন চট্টগ্রামসহ দেশের বেশ কয়েকটি চাল ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। এরপর থেকে পচা চাল নিয়ে তোলপাড় শুরু হয় চট্টগ্রামজুড়ে। প্রায় এক মাস আগে থাইল্যান্ড থেকে পচা গমের চালান আসার পরও এখনো জাহাজ দুটি চট্টগ্রাম বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় থাকায় একটি জিনিস পরিস্কার যে, এর পেছনে সরকারের রাঘব বোয়ালরা জড়িত।
রিজভী বলেন, গত ২০ দিন ধরে পচা চাল খালাসের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ নিয়ে যেন কোনো বুমেরাং না হয় তাই সরকারের খাদ্য বিভাগ ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ অনেকটা গোপনে কাজ করে গেছেন। কোনো কারণে ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন তা হজম করতে পারছেনা।
তাই বেসরকারিভাবে হলেও চাল বিক্রির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিদেশি দুটি জাহাজের সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু প্রশ্ন হলো সরকারিভাবে আমদানি করা চাল বেসরকারিভাবে বিক্রির চেষ্টা কেন? এখানেই খটকা। হাওরে বন্যার অজুহাতে চালের সঙ্কট দেখিয়ে সরকার থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশ থেকে চাল আমদানি শুরু করে।
১৩ই জুলাই থেকে এ পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি খাতে আমদানি করা চালবাহী ১৬টি জাহাজ বন্দরে এসেছে। এসব জাহাজে আনা হয়েছে ৩ লাখ ৬৪ হাজার টন চাল। এর মধ্যে থাইল্যান্ডের পচা চালবাহী জাহাজ দুটিও রয়েছে। পচা চালের খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে পুর্বের আমদানি করা চালগুলোও নিম্নমানের কী না ?