Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোহিঙ্গা সঙ্কটে ট্রাম্পের কাছে সহযোগিতা পাওয়ার আশা করি না -প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপ দিতে হবে : সু চিকে মানতে হবে যে, এই মানুষগুলো তার দেশের এবং মিয়ানমারই তাদের দেশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার কথা হয়েছে, কিন্তু এ বিষয়ে তার কাছ থেকে কোনো সাহায্য পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন না। কারণ শরণার্থী বিষয়ে নিজের ভাবনার কথা ট্রাম্প আগেই স্পষ্ট করেছেন। শেখ হাসিনা মন্তব্য করেন, শরণার্থীদের বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবস্থান পরিষ্কার। সেজন্য রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের বিষয়ে ট্রাম্পের সহায়তা চেয়ে কোনও কাজ হবে না। আমেরিকা ঘোষণা করেছে যে তারা শরণার্থীদের গ্রহণ করবে না। আমি তার কাছ থেকে কী আশা করতে পারি? বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে। তিনি এরই মধ্যে তার মনোভাব প্রকাশ করেছেন। সুতরাং আমি তাকে কেন জিজ্ঞেস করতে যাবো? তবে তিনি চান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপ দেয়া হোক। অং সান সু চিকে এটা মানতে হবে যে, এই মানুষগুলো তার দেশের এবং মিয়ানমারই তাদের দেশ।
গত সোমবার জাতিসংঘের সংস্কার নিয়ে নিউ ইয়র্কে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কয়েক মিনিট কথা হয় বলে রায়টার্সকে এক সাক্ষাৎকারে জানান শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (ট্রাম্প) শুধু জানতে চাইলেন বাংলাদেশের কী খবর? আমি বললাম, বাংলাদেশ খুবই ভালো অবস্থায় আছে। তবে আমাদের একমাত্র সমস্যা হল মিয়ানমার থেকে আসা শরণার্থীরা। কিন্তু তিনি শরণার্থীদের বিষয়ে কিছু বলেননি।
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনীর চলমান অভিযানকে জাতিসংঘ বর্ণনা করেছে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে আগামী ২১ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, শরণার্থীদের বিষয়ে ট্রাম্পের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। সুতরাং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য তার কাছে সাহায্য চাওয়া অর্থহীন। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে ঘোষণা দিয়েছে, তাদের দেশে তারা কোনো শরণার্থীকে ঢুকতে দেবে না। তাদের কাছ থেকে আমি কী আশা করতে পারি, বিশেষ করে প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে? তিনি তো নিজের মনোভাব জানিয়ে দিয়েছেন... তাহলে আর তার কাছে কেন সাহায্য চাইব?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ধনী দেশ নয়। আমাদেরই এখন ১৬ কোটি মানুষ। দেশের আয়তনও খুব কম। যদি আমরা ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারি, তাহলে আরও ৫/৭ লাখ মানুষকে খাওয়াতে পারব।
এ বিষয়ে হোয়াইট হাউজের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাদের প্রেসিডেন্টের আলোচনার বিষয়ে তিনি অবগত নন।
তবে তিনি এও বলেছেন যে, ট্রাম্প এ বিষয়ে খুবই আগ্রহী এবং কেউ বিষয়টি সামনে আনলে তিনি অবশ্যই কথা বলবেন।
সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি চান, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে আরও চাপ দেয়া হোক। তাকে (মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি) এটা মানতে হবে যে, এই মানুষগুলো তার দেশের এবং মিয়ানমারই তাদের দেশ। তাদের উচিৎ এই মানুষগুলোকে ফিরিয়ে নেয়া। এই মানুষগুলোকে দুর্দশার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।
নিউইয়র্কে প্রধানমন্ত্রীর ব্যস্ত সময় কাটছে
যোগ দিচ্ছেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশনে যোগ দিতে শেখ হাসিনা এখন নিউ ইয়র্কে। তিনি আগামী ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পক্ষে তার বক্তব্য তুলে ধরবেন, যেখানে রোহিঙ্গা সঙ্কট আলোচিত হবে। সোমবার বিকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী আরও দুটি উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশ নেন। এগুলো হল ‘হাই লেভেল মিটিং অন দ্য প্রিভেনশন অব সেক্সচ্যুয়াল এক্সপ্লয়টেশন অ্যান্ড অ্যাবিউজ’ এবং ‘হাই লেভেল ফলোআপ মিটিং অব গেøাবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক অ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ’। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোগবে এবং জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গেও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন শেখ হাসিনা। এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাত করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সূষমা স্বরাজ।
এর আগে, রবিবার বিকালে নিউ ইয়র্কে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী নিউ ইয়র্ক পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এম জিয়াউদ্দিন ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন। এবার এমন এক সময়ে বিশ্ব নেতারা জাতিসংঘ অধিবেশনে মিলিত হচ্ছেন, যখন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর হামলায় হাজার হাজার নিরীহ রোহিঙ্গা অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিচ্ছেন। নৃশংস নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গার পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছেন। কয়েক যুগ ধরে প্রায় চার লাখ রোহিঙ্গার ভার বহন করে আসা বাংলাদেশের এই দফায় আরও প্রায় চার লাখ শরণার্থী প্রবেশ করেছে। রাখাইনের পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এই সংখ্যা ১০ লাখে ঠেকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রোহিঙ্গাদের এই মানবিক সঙ্কট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও মিয়ানমার তাদের অবস্থানে অনড়। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সঙ্কটের ‘মূল কারণগুলো’ তুলে ধরে তা নিরসনে বাংলাদেশের প্রস্তাব তিনি বিশ্বনেতাদের সামনে তুলে ধরবেন শেখ হাসিনা। রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি হলেও মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি এবার জাতিসংঘ অধিবেশনে অংশ নেননি। ২১ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেয়ার পর ওইদিনই জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেয়ার ফাঁকে বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বৈঠক করছেন, করবেন। নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে সংবাদ সম্মেলনও করবেন প্রধানমন্ত্রী। সফর শেষে ২২ সেপ্টেম্বর তিনি নিউ ইয়র্ক থেকে ভার্জিনিয়ার উদ্দেশে রওয়ানা হবেন। সেখানে ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরিবারের সঙ্গে এক সপ্তাহ কাটিয়ে ২ অক্টোবর দেশে ফিরবেন তিনি।
শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যৌন নির্যাতন বন্ধে বাংলাদেশের অবস্থান জিরো টলারেন্স
জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের মাঝে যৌন অপরাধ নির্মূলে জাতিসংঘের মহাসচিবের যথাযথ পদক্ষেপের প্রতি বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে ভিকটিম সাপোর্ট ফান্ডে ১ লাখ ডলার প্রতীকী চাঁদার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা সদস্য ও পুলিশ সদস্য নিয়োগকারী হিসেবে আমরা যৌন নির্যাতন ও অপরাধ বন্ধের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করি। এ অভিযোগে আমাদের অবস্থান হচ্ছে জিরো টলারেন্স।
গতকাল সোমবার জাতিসংঘ সদর দফতরে ট্রাস্টিশিপ কাউন্সিল চেম্বারে যৌন নির্যাতন ও অপরাধ দমন শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের এক বৈঠকে এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি যৌন অপরাধ প্রতিরোধে জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগের প্রশংসা করেন। বলেন, বাংলাদেশ সবসময় এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শান্তিরক্ষীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে দ্রæত ব্যবস্থা নিতে হবে। অভিযোগের সঙ্গে জড়িতদের তাদের নিজ খরচে দেশে ফেরত পাঠাতে হবে এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্টদের ভাতা বন্ধ থাকবে।
শেখ হাসিনা বলেন, যৌন অপরাধের অভিযোগে আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা কন্টিনজেন্ট কমান্ডারদের দেয়া হয়েছে। তারা মিশন এলাকায় যেকোন অভিযোগের তদন্ত ও বিচার করতে পারবে। বাংলাদেশী কোনো শান্তিরক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা মিশন এলাকার সর্বোচ্চ সিনিয়র কর্মকর্তার রয়েছে। তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের ২ লাখ নারীর ওপর নির্যাতনের জঘন্য অপরাধের উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা সুনাম ও বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে। এটি আমাদের দৃঢ় নৈতিক মূল্যবোধ, উৎসাহব্যঞ্জক অনুপ্রেরণা ও উচ্চমানের শৃঙ্খলার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী বক্তৃতা দেন। এতে অন্যান্যের মধ্যে জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সভাপতি মিরসলভ লাজকাক বক্তৃতা করেন। এ ছাড়া ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট সাউলি নানিস্টো, উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট তাবরে ভাজকুয়েজ, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হাইলেমারিয়াম ডেসালেগন বক্তৃতা করেন।
সরকার শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিয়েছে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার অর্থনীতি ও সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে শ্রমিক অধিকারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, মানবাধিকার এবং শ্রমিকের অধিকারের সুরক্ষায় আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের কারণে আমরা অর্থনীতি ও সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে শ্রম অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি।
গতাকাল সোমবার সন্ধ্যায় কনভেইন কনফারেন্স সেন্টারে গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক এ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের ফলোআপ বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
সুইডেনের সহায়তায় গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক উন্নয়নের কার্যক্রমের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি যে, সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত হলে যথাযোগ্য চাকরির সংস্থান এবং শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সোশ্যাল ডায়ালগ এবং হারমোনিয়াস ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন্স প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ব্যাপক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় ‘বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়ন শুরু করেছে।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোফেন, আইএলও মহাপরিচালক গাই রেডার ও অর্গাানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) মহাসচিব অ্যাঞ্জেল গুররিও অনুষ্ঠান বক্তব্য রাখেন।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার শ্রম আইনে পরিবর্তন এনে তা ‘শ্রমিকবান্ধব আইনে পরিণত করেছে, যা কর্মপরিবেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে।’ তিনি বলেন, পোশাক শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি গত পাঁচ বছরে তিন গুণ বেড়েছে। এতে শ্রমিকদের উন্নত জীবন-জীবিকা এবং কর্মপরিবেশ ও তাদের উপার্জনের স্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমুখী পদক্ষেপের সুবাদে নাগরিকদের মাথাপিছু আয় গত নয় বছরে অন্তত তিন গুণ বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।
জাতিসংঘের সংস্কার বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের সভায় প্রধানমন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়োজনে জাতিসংঘ সংস্কার বিষয়ক এক উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার সকালে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘হাই লেভেল মিটিং অন ইউএন রিফর্ম’ শীর্ষক এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। জাতিসংঘ সংস্কার নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের সভায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, আমলাতন্ত্র ও অব্যবস্থাপনার কারণে জাতিসংঘের সম্ভাবনার পূর্ণ বিকাশ ঘটছে না।
হাসিনা-মাহমুদ আব্বাস বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আসা ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বৈঠক করেন। বৈঠকে দুই নেতা মিয়ানমারের সমস্যা এবং রোহিঙ্গা মুসলিম শরনার্থীদের বিষয়ে আলোচনা করেন।
গতকাল রাতে গ্রান্ড হায়াত হোটেলের নিজ কক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফিলিস্তিনী নেতার এই বৈঠক হয়।
বৈঠকের পরে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, বৈঠকে মাহমুদ আব্বাস ফিলিস্তিনের সংকটের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী ফিলিস্তিনের জনগণের পাশে থাকায় তার অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করেন।
প্রেস সচিব বলেন, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, এটি একটি দুর্যোগ। সর্বত্রই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মানবিক ভূমিকা প্রশংসিত হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, একজন মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেরই কিছু না কিছু মানবিক গুনাবলী রয়েছে। তিনি বলেন, অস্থায়ী ব্যবস্থাপনায় বর্তমানে বাংলাদেশে ৭ লাখ মিয়ানমারের শরনার্থী বসবাস করছে। যদিও মিয়ানমারকে তাদের এসব নাগরিকদের ফেরত নিয়ে যেতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগের উদ্যোগ নিয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পুণর্বাসনে এ সময় বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তৎপরতার কথাও প্রধানমন্ত্রী মাহমুদ আব্বাসকে জানান। শেখ হাসিনা বলেন, একজন রিফিওজির দুঃখ, কষ্ট তিনি বোঝেন। কারণ, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা রিফিউজি হিসেবে ৬ বছর বিদেশে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন।
আগত রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য তার সরকার শরনার্থীদের রেজিষ্ট্রেশন করানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক এ সময় উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • পারভেজ ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৩১ পিএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ
    Total Reply(0) Reply
  • মালেক ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১:৩২ পিএম says : 0
    একমাত্র আল্লাহর উপরই আমাদের ভরশা করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Asad ২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ২:৪৬ পিএম says : 0
    আল্লাহ তোমার দয়া আর করুনা ছাড়া ওদের বাচার আর কোন পথ নেই।আল্লাহ তুমিই তাদেরকে রক্ষা কর।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ