Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ক্ষতি পুষিয়ে দেবে আমনে

বন্যার পলি হয়েছে ফার্টিলাইজার, সেচ খরচ লাগেনি, উৎপাদন খরচ কম, কৃষক স্বস্তিতে

মিজানুর রহমান তোতা : | প্রকাশের সময় : ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বন্যা ও অতিবৃষ্টিতে দেশের অনেকস্থানে কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আবার প্রকারান্তরে সামগ্রিক কৃষির লাভও হয়েছে। বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর কৃষকরা কোমর বেধে মাঠে নেমেছেন। ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য কৃষকরা সার্বক্ষণিক মাঠে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। আবাদ ও উৎপাদনে রীতিমতো জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সারাদেশে চলতি রোপা আমন আবাদ চলছে। কৃষকের সেচ ও সার খরচ লাগছে না বললেই চলে। উৎপাদন খরচ আমনে একেবারেই কম হবে। এতে কৃষকরা রয়েছেন স্বস্তিতে। এবার প্রায় দেড় কোটি মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের টার্গেট করা হয়েছে। এই তথ্য জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ মোঃ গোলাম মারুফ। তিনি জানান, সারাদেশে মোট ৫৬ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ৫৩লাখ ৩০হাজার রোপা আমন ও ৩লাখ হেক্টর বোনা আমন। ধান ও চালের দাম বেশী হওয়ায় কৃষক অতিমাত্রায় ঝুকেছেন ধান আবাদে। তার মতে, বন্যায় দেশের বিভিন্নস্থানে কমবেশী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ঠিকই আবার পলি পড়ে ফার্টিলাইজারের কাজ হয়েছে। চলতি মৌসুমের আমন আবাদের জন্য হয়েছে যথেষ্ট সহায়ক। কৃষকের উৎপাদন খরচ কমেছে। সেচ দেওয়া লাগছে না। মাঠপর্যায়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যতটুকু সম্ভব বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য। উৎপাদনের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। কৃষকরা জানিয়েছেন, খরচ সবদিক দিয়ে কম হচ্ছে সত্য কিন্তু ধানের চারার দাম এবার একটু বেশী ছিল।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ফিল্ড সার্ভিস উইং এর পরিচালক কৃষিবিদ আব্দুল হান্নান সারাদেশের মাঠের সার্বিক অবস্থা উল্লেখ করে দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, আগামী ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আমন আবাদ চলবে। রোপনকৃত ধানের চেহারা বলে দিচ্ছে ফলন ভালো হবে। পোকা মাকড়ের উপদ্রব নেই বললেই চলে। মাঠপর্যায়ের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোর অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত পরিচালক ড. সুনীল কুমার রায় জানান, মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। বন্যা বা অতিবৃষ্টিতে যেসব জমিতে আমন আবাদ করা যায়নি, পরে তা শর্ট চারা দিয়ে রিকোভারি করা গেছে। তিনি বলেন, যশোর অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশী জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। আবাদকৃত জমির পরিমাণ ৪ লাখ ২৮হাজার ৯শ’ ৮৭ হেক্টর। এসব জমির ধান অনেকস্থানে ফ্লাওয়ার স্টেজে। আবার দেরীতে (নাবি) রোপনকৃত ধানের অবস্থাও ভালো।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, কম আবাদ হলেও এবার আউশের ফলন ভালো হয়েছে। বৃষ্টিনির্ভর আউশ আবাদে খরচ একেবারেই কম। কৃষকরা আশা করছেন, বর্তমানে ধান ও চালের দামও বেশী। তাই ধান আবাদে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন তারা। কৃষকদের কথা, ‘আমরা তো ধান পাট ও অন্যান্য ফসল আবাদ করি। কোনরূপ ফাঁকির সুযোগ নেই। কিন্তু ফসল উৎপাদনের পর মূল্য নিয়ে বেশীরভাগই দুশ্চিন্তা করতে হয়। এবার পাটের ফলনে আমরা খুশী। কিন্তু বাজারে উঠানোর পর হাসি ¤øান হয়ে গেছে। আমনের ক্ষেত্রে সেটি যেন না হয় সেদিকে নজর দেওয়ার জন্য কৃষকরা দাবি জানিয়েছেন। তাদের কথা, আমন আবাদের ব্যাপারে বন্যার পর মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা তৎপর ঠিকই কিন্তু অনেক এলাকার কোন কোন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সময়মতো মাঠে নেমে কৃষকদের সমস্যার সমাধানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে অমনোযোগীতার অভিযোগ রয়েছে। তারা কৃষি এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অন্তরায়। সরকারী কর্মকর্তা হয়েও প্রকাশ্যে দলবাজির সঙ্গে তারা যুক্ত। জেলা বা উপজেলা সদরে বসে মাঝেমধ্যে ডিউটি করেন, মাঠে নামেন না-এমন অভিযোগও করেছেন কৃষকরা।



 

Show all comments
  • Kamal Pasha ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১১:৩৬ এএম says : 0
    ইনশাআল্লাহ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ