Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

২৫ কোটি টাকার প্রকল্প ২০০ কোটিতে উন্নীত হলেও অনুমোদন মিলছে না

বাইপাস সড়কের অভাবে বরিশাল মহানগরীতে দুর্ঘটনা এখন নিত্যকার ঘটনা

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বরিশাল বিভাগীয় সদরে অদ্যাবধী কোন বাইপাস সড়ক নির্মিত না হওয়ায় এ মহানগরীতে ছোট-বড় দুর্ঘটনা নিত্যকার ঘটনায় পরিনত হয়েছে। বাড়ছে হতাহতের ঘটনাও। মহানগরীর বুক চিড়ে বরিশালÑফরিদপুর, বরিশালÑপটুয়াখালী ও বরিশালÑভোলাÑচট্টগ্রাম ৩টি জাতীয় মহাসড়ক চলে যাওয়ায় ১০টন থেকে ৪০টন বহনক্ষম বড় বড় লড়িসহ ট্রেইলার চলাচল করছে হরহামেসা। অদুর ভবিষ্যতেই পায়রা বন্দর থেকে পণ্যবাহী আরো অনেক ভারী যানবাহন বরিশাল মহানগরীর ওপর দিয়েই দেশের বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করবে।
উপরন্তু বরিশাল সিটি করপোরেশন নগরীর কাশীপুর থেকে আমতলা জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় ৫কিলোমিটার রাস্তা কথিত ফোর লেনে উন্নীত করার নামে মহাসড়কটির মূল ২৪ফুট অংশকে দুদিক থেকে সংকুচিত করায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বেড়েছে। মহানগরীকে বড়মাপের যানবাহন মূক্ত রাখতে বরিশাল সড়ক বিভাগ থেকে ১৯৯৮-৯৯অর্থ বছরে প্রায় ২৫কোটি টাকা ব্যায় সাপেক্ষ ‘বরিশাল বাইপাস নির্মান প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প সড়ক অধিদফ্তর হয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হলেও তা আর অনুমোদন লাভ করেনি। প্রায় ২০কিলোমিটার দীর্ঘ বরিশাল বাইপাস সড়ক প্রকল্পটি পুণঃ বিবেচনার জন্য পেস করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তবে ২৫কোটি টাকার সে প্রকল্প ব্যায় এখন প্রায় ২শ কোটি টাকায় উন্নীত হচ্ছে।
নগরীরর দপদপিয়া সেতুর সংযোগ স্থল থেকে কালিজিরা বাজার হয়ে ডেফুলিয়াÑসোনামিয়ার পুলÑমাবপাশা হয় গড়িয়ার পাড় এলাকা পর্যন্ত এ বাইপাস সড়ক নির্মিত হবার কথা। নগরীর অভ্যন্তর থেকে প্রতিনিয়ত বড় ধরনের পণ্যবাহী যানবাহনসহ বরিশালের দক্ষিণাঞ্চলের সবগুলো জেলা ও উপজেলার যাত্রীবাহী বাসসমুহও দোর্দন্ড প্রতাপে চলাচল করছে। নগরীর গড়িয়ারপাড়Ñকাশীপুর চৌমাথাÑনথুল্লাবাদÑআমতলা জিরো পয়েন্ট হয়ে রূপাতলী এবং কলীজিরা ও দপদপিয়া সেতু সংযোগ পর্যন্ত মহাসড়কটি ইতোমধ্যে অত্যন্ত বিপজ্জনক সড়কে পরিনত হয়েছে। এমনকি মহানগরীর অভ্যন্তরের এ জাতীয় মহাসড়কটির ঐ অংশে সব ধরনের থ্রী-হুইলার, রিকসা ও ইজিবাইক সহ দ্বিতল বাসও চলাচল করছে। বছর কয়েক আগে বরিশাল সিটি করপোরেশন দিনের বেলা নগরীতে সব ধরনের ট্রাক চলাচল নিষিদ্ধ করলেও নগরীর ঐ অংশটি জাতীয় মহাসড়কের অংশ হওয়ায় সেখানে দিন রাত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বড় মাপের সব ধরনের পণ্যবাহী ট্রাক সহ ট্রেইলার ছাড়াও যাত্রীবাহী বাস ও ট্যাংক লড়ি পর্যন্ত।
সিটি করপোরেশন সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে সড়ক অধিদফ্তরের জাতীয় মহাসড়কটির সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ ঐ ৫কিলোমিটার সড়ককে কথিত চার লেনে উন্নীত করতে গিয়ে একদিকে জনগনের প্রায় ৫০কোটি টাকা নষ্ট করেছে, অপরদিকে নগরীতে যানবাহন চলাচল যথেষ্ঠ ঝুকিপূর্ণ করে তুলেছে। মহাসড়কটির মূল ক্যারেজ ওয়েটি দুপাশ থেকে সংকুচিত করেছে সিটি করপোরেশন। কথিত ঐ চার লেন নির্মাণে রাস্তাটির মালিক সড়ক অধিদফ্তরের অনুমোদন দুরের কথা কোন ধরনের পরামর্শও করেনি সিটি করপোরেশন। ফলে এখন দূর্ঘটনা এনগরীর অভ্যন্তর দিয়ে যাওয়া মহাসড়কটিতে নিত্যকার ঘটনা। বেপরোয়া গতির দুর পাল্লার বাস ও ট্রাক সহ ট্যাংকলড়ী এবং ট্রেইলারগুলো প্রায়ই এনগরীর ধীরগতির যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যানবাহনগুলোকে ধাক্কা দিচ্ছে। বাড়ছে হতাহতের ঘটনাও। সর্বশেষ গত বুধবার দুপুরে নগরীর সদর উপজেলা কমপ্লেক্সর সামনে দুর পাল্লার যাত্রীবাহী একটি বাস হামলে পড়ায় ইজিবাইকের চালক সহ এর ৫যাত্রী আহত হয়। যার মধ্যে একটি দুবছরের শিশুও রয়েছে। ইজিবাইকের চালকের অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। এধরনের দূর্ঘটনা বরিশাল মহানগরীর নিয়মিত ঘটনায় পরিনত হলেও তা থেকে উত্তরনের কোন যোড়াল উদ্যোগও নেই।
সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে অবিলম্বে বরিশাল মহানগরী বাইপাস নির্মাণের কোন বিকল্প নেই। সারা দেশে সড়ক ও জনপথ অধিদফ্তর শত শত কোটি টাকার উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করলেও বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের নিরাপদ ও নির্বিঘœ সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত করণে ২শ কাটি টাকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবী বলেও মনে করছেন মহলটি। তবে তা কত দ্রæত বাস্তবায়িত হয় তই এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছেন সড়ক পরিবহন বিশেষজ্ঞগণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ