Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ব্যর্থতা ঢাকতেই জিয়া পরিবার নিয়ে মিথ্যাচার-----মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

রোহিঙ্গা সমস্যার মোকাবেলায় ও চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের ব্যর্থতা আড়াল করতেই খালেদা জিয়াসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে সরকার মিথ্যাচার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, জিয়া পরিবারের সদস্যদের বিদেশে টাকা পাচারের তদন্ত হচ্ছে-প্রধানমন্ত্রী যেসব মন্তব্য করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই ধরণের মিথ্যাচার করে জনগণকে বিভ্রান্ত রতেই শেখ হাসিনা ও মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ অবলীলায় মিথ্যাচার করছেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। 

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার আকন্ঠ দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। মেগা প্রজেক্টের নামে সরকার বিলিয়ন ডলার লোপাট করছে। লুট করছে জনগণের সম্পদ। শেয়ার মার্কেট লুট, ব্যাংক লুট, পাওয়ার প্ল্যান্ট, পদ্মা সেতু, কুইক রেন্টাল, মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে, উড়াল সেতুতে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করে এখন জিয়া পরিবারের সদস্য এবং গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রীর বিরুদ্ধে এই মিথ্যাচারের জবাব জনগণ দেবে।
তিনি বলেন, বিএনপি’র সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নামে বিদেশে যে কল্পিত সম্পদের কথা বলা হয়েছে তা হাস্যকর। আমরা চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই-এই ধরণের কল্পকাহিনীর কোন প্রমান তারা ১০ বছর তন্ন তন্ন করে খুঁজেও বের করতে পারেননি, এখনও পারবেন না। এই মিথ্যাচার শুধুমাত্র দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করবার হীন উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক গতি সঞ্চার করতে, বন্যা পরবর্তী সংকট মোকাবেলা করতে, বেহাল সড়ক সচল করতে, রাখাইনে গণহত্যা ও রোহিঙ্গাদের বিতাড়নে নিন্দা জানাতে ব্যর্থতা, চালের দাম কমাতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ এই সরকার তাদের ব্যর্থতা ঢাকতেই এই মিথ্যাচার করছে। আমরা এই মিথ্যাচারের প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাচ্ছি এবং এই ধরণের মিথ্যাচার থেকে বিরত থাকার এবং ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানাচ্ছি।
রোহিঙ্গাদের জন্য নিয়ে যাওয়া বিএনপির ২২ ট্রাক ত্রাণ নিতে পুলিশ বাঁধা দিয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ২২ ট্রাক ত্রাণ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে গত ১৩ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার থেকে উখিয়া রওনা দিলে পুলিশ বাধা দেয়। নেতৃবৃন্দকে বিএনপি অফিসে অবরুদ্ধ করে রাখে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আওয়ামী লীগের নামে সরকারি অর্থে ত্রাণ বিতরণ করেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, জনাব সাধারণ সম্পাদক বিদেশে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী কার কত সম্পদ রয়েছে ইতিমধ্যে দেশী বিদেশীর মিডিয়াতে আসতে শুরু করেছে, কানাডায় কারা বেগম পল্লী, মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম, সিঙ্গাপুর, ব্যাংককে বিশাল শপিং মল কিনেছেন, আমেরিকায় কারা নতুন বাড়ী কিনেছেন, কতগুলো বাড়ী কিনেছেন-তা এখন দেশবাসীর অজানা নয়। তিনি বলেন, ত্রাণের নামে আওয়ামী লীগের বিশাল লুটপাটের সুযোগ সৃষ্টি করে, অন্য কাউকে ত্রাণ দেয়ার সুযোগ না দেয়া মানবতার বিরুদ্ধে অবরাধ হিসেবে গণ্য হবে। মানুষের জন্য ত্রাণ সংগ্রহ করা তা বিতরণ করতে যাওয়া এক নয়। লোক দেখানো কাজ আপনারা করেন। লোক দেখানো নামে উন্নয়নের লুটপাট আপনাদের স্বভাবজাত। কাদের মাথায় সোনার মুকুট পরে বিয়ে হয়েছিলো, কাদের নামে ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগ উঠেছিলো তাদের এই কয় বছরে দখলদারিত্বের ক্ষমতা থেকে হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ করেছেন। কাদের নামে-বেনামে স্ক্যান্ডাল সেটির তালিকা দেশের মানুষ অবগত। কারা ব্যাংকের মালিকানা থেকে জনগণের সম্পদ লুট করছে, কারা ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে লোপাট করে দিচ্ছে তা দেশবাসী অবগত।
সংসদে বুধবারের অধিবেশনে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের পত্রিকার প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ বিএনপি নেতাদের বিদেশে সম্পত্তির ফিরিস্তি তুলে ধরে সে বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ জানতে চান। জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, তথ্যগুলো যখন বের হয়েছে, তখন নিশ্চয়ই আমাদের কাছে তা আছে। এটা নিয়ে তদন্ত চলছে। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে মানি লন্ডারিংয়ের জন্য একটি তদন্তের ব্যবস্থা আছে। সেই সূত্রেও তদন্ত করা হচ্ছে। এই তদন্তের মধ্য দিয়ে সত্যতা যাচাই করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে গত মঙ্গলবার কেরানীগঞ্জের মির্জাপুরে নিজের বাসভবনে পূজা উদযাপন কমিটির প্রস্তুতি সভায় পুলিশের বাধার কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। এসময় অন্যদের মধ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম আজাদ, নিপুণ রায় চৌধুরী, মুনির হোসেন, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ঢাকা জেলার ডা. দেওয়ান মো. সালাউদ্দিন ও নাজিমউদ্দিন মাস্টার উপস্থিত ছিলেন।#####



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ