Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মিয়ানমারকেই সমস্যার সমাধান করতে হবে

রোহিঙ্গা নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১২ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মিয়ানমারের উপর চায় প্রয়োগের দাবি সংসদ সদস্যদের : কফি আনানের সুপারিশ বাস্তবায়নেই সমাধান

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমারকেই সমস্যার সমাধান করতে হবে। কারণ তারাই এ সমস্যা সৃষ্টি করেছে, সমাধানও তাদেরকেই করতে হবে। অবশ্যই তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে হবে। কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে তাদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। মিয়ানমারে সেইফ জোন স্থাপন করতে হবে। প্রতিবেশি দেশ হিসেবে প্রয়োজনে আমরা সাহযোগিতা করবো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের দুর্ভোগের সুযোগ নিয়ে কেউ যেন রাজনীতির সুযোগ নেয়ার চেষ্টা না করে। ভাগ্য বদলের চেষ্টা না করে। তাদেরকে খাদ্য দেয়ার সামর্থ্য আমাদের রয়েছে। সেদেশ থেকে সত্যিকার যারা এসেছে তাদের আইডেনটিটি থাকবে, ছবি থাকবে। সাময়িকভাবে তাদের আশ্রয় দেয়ার ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু মিয়ানমারকে তাদের অবশ্যই নিজের দেশে প্রত্যাবর্তনের ব্যবস্থা করতে হবে।
সোমবার রাতে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এর আগে ১৬ জন এমপি ওই ইস্যুর ওপর বক্তব্য রাখেন। আলোচনা শেষে এ বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ ধারায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাব উত্থাপন করেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও ডা. দিপু মনি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে গত কয়েক দিনে কয়েক লাখ মানুষ এদেশে আসতে বাধ্য হয়েছে। অত্যাচারের যে চিত্র দেখলাম তা বলার ভাষা খুুঁজে পাচ্ছি না। রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের নাগরিক। এটা তো সবাই জানে। ১৯৭৪ সালে মিয়ানমারের মিলিটারি জান্তা তাদের অধিকার কেড়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে। ’৮১ ও ’৮২ সালে তারা যে আইন করে সেখানে চার স্তর বিশিষ্ট সিটিজেনশিপ চালু করে। এর উদ্দেশ্য ছিলো তাদের অধিকার কেড়ে নেয়া। একটা জাতির ওপর মিয়ানমানর সরকার এ ধরনের আচরণ কেন করছে তা জানি না। আমরা বারবার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে প্রতিবাদ করছি। আমি যে কয়বার মিয়ানমার সফর করেছি তাদের বলেছি, আপনারা আপনাদের নাগরিক আমাদের দেশ থেকে ফিরিয়ে নিন। ফিরিয়ে নেয়া তো দূরের কথা, তারা উল্টো তাদের ওপর অত্যাচার চালাতে লাগলো। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১২ সালে ও ২০১৬ সালে দুষ্কৃতকারীরা তাদের পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এর জেরে সাধারণ মানুষদের ওপর অত্যাচার চালানো শুরু করে। শিশুর লাশ নাফ নদীতে ভাসছে। গুলি খাওয়া মানুষ আসছে। মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা হয়েছে। আমরা তো মানুষ। তাদেরকে আশ্রয়ে নিষেধ করবো কীভাবে। আমাদের তো অভিজ্ঞতা রয়েছে। ১৯৭১ সালে আমাদের সঙ্গে পাকিস্তানীরা যে ঘটনা ঘটিয়েছিলো সেসব চিত্র চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আমরা তো ভুক্তভোগী ছিলাম। আমরাও তো ৬ বছর ধরে রিফিউজি হয়ে ছিলাম। তার কষ্ট আমরা জানি। এদের আশ্রয় দিয়েছি মানবিক কারণে, অন্য কোন কারণে নয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে চাই। মিয়ানমার সরকারকে বলতে চাই, রোহিঙ্গাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া, হঠাৎ রোহিঙ্গাদের দেশ থেকে বিতাড়িত করার ফলাফল কী হতে পারে সেটা কি তারা চিন্তা করছে। তিনি বলেন, আমরা কখনই এ ধরনের কর্মকাÐকে সমর্থন করবো না। উদাহরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পার্বত্য চট্রগ্রামে অশান্ত পরিবেশ ছিলো। ’৯৬ সালে সরকার গঠনের পর আমরা সেখানে শান্তিচুক্তি করি। এই অশান্ত পরিবেশ মোকাবেলা করতে সামরিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করা হতো। ’৮১ সালে এসে ঘোষণা দিয়েছিলোম এটা সামরিকভাবে সমাধান করা সম্ভব নয়। রাজনৈতিকভাবে সমস্যার সমাধান করতে হবে। পরে সরকারে এসে আমরা শান্তিচুক্তি করি। তাদেরকে পুনর্বাসন করি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্য দেশে রিফিউজি থাকা মোটেই সম্মানজনক নয়। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে যতবার আমার কথা হয়েছে, তাদেরকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে বলেছি। এ বিষয়ে তাদেরকে আমরা সহযোগিতা করতে পারি। আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারি। আমাদের পররাষ্ট্র সচিব বারবার তাদের ওখানে গেছেন্ আলোচনা করেছেন। এখন তারা এমন অবস্থা তৈরি করেছে যে, বিশ্ব বিবেক নাড়া দিয়েছে। নাফ নদীতে শিশুদের লাশ। কেন? সমস্ত মুসলিম উম্মাহ যদি এটা অনুভব করতে পারতো তাহলে আজ এ ধরনের ঘটনা ঘটতো না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মানুষকে মানুষ হিসেবে দেখি। হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান দেখছি না। অং সাং সূ চি নিয়ে অনেকে কথা বলেছেন। সেখানে কেবল গণতন্ত্রর যাত্রা শুরু হয়েছে। কিন্তু আইন করে তাকে ক্ষমতা দেয়া হয়নি। তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এ হিসেবে সেখানে সেনবাবাহিনীর প্রতিনিধি বেশি। এখানে অং সান সু চিরই বা ক্ষমতা কত সেটাও ভেবে দেখা দরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা তো অমানুষ হতে পারি না। অমানবিক হতে পারি না। মিয়ানমারের এক জেনারেলর ঘোষণা দিয়েছেন এরা সব বাঙালী। বাঙালী তো পৃথিবীর অনেক দেশেই রয়েছে। আর বাঙালী বলেই কি এভাবে নির্যাতন করবে, তাড়িয়ে দেবে। তারা তো বছরের পর বছর সেখানে বাস করছে। যারা মিয়ানমারের পুলিশ ব্যারাকে হামলা চালিয়েছে তারা কী অর্জন করছে? তারা এটা কি বোঝে না তাদের কারণে আজ লাখ লাখ মানুষের ওপর পাশবিক অত্যাচার হচ্ছে। এ অবস্থা কেন তারা সৃষ্টি করে দিচ্ছে। যারা তাদের অস্ত্র জোগান দিচ্ছে হয়তো তারা লাভবান হচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রমের কারণে আজ মিয়ানমারের সাধারণ নাগরিক কষ্ট পাচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে। আমি বলেছি, প্রয়োজনে যৌথভাবে কাজ করতে পারি। মিয়ানমারকে এটা বুঝতে হবে। শিশুরা নারীরা কী অপরাধ করেছে? এটা আমরা মানতে পারি না। মানতে চাই না। যারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদের প্রত্যেককে ফিরিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজনে সেইফ জোন করে তাদের থাকার ব্যবস্থা করতে হবে। রাখাইন রাজ্য থেকে যাদের বিতাড়ন করা হয়েছে তাদেরকে ফেরত নিতে হবে। কফি আনান কমিশন রিপোর্ট বাস্তবায়ন করতে হবে। এই সমস্যা মিয়ানমার সৃষ্টি করেছে এর সমাধান মিয়ানমারকেই করতে হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কফি আনানের নেতৃত্বে যে কমিশন হয়ে তা মিয়ানমারই গঠন করেছে, সেটা মানতে সমস্যা কোথায়? কোথাও আপত্তি থাকলে আলোচনা করতে পারে।
আলোচনায় অংশ নেয়া অন্য সদস্যরা রোহিঙ্গাদের উপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানান। নির্যাতনের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় তারা শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির কড়া সমালোচনা করেন। আন্তর্জাতিক আদালতে এই নির্যাতনের বিচার এবং কপি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশনের সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য ‘নিরাপদ অঞ্চল’ প্রতিষ্ঠার দাবি তোলেন তারা। এছাড়া আলোচকদের অনেকে শান্তি ও মানবতার পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন।
সংসদের কার্যপ্রণালী বিধির ১৪৭ বিধিতে প্রস্তাবটি (সাধারণ) এনে চাঁদপুর-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘সংসদের অভিমত এই যে, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উপর অব্যাহত নির্যাতন-নিপীড়ন বন্ধ, নিজ বাসভূমি থেকে বিতাড়ন করে বাংলাদেশে পুশইন করা থেকে বিরত থাকা এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিয়ে নাগরিকত্বের অধিকার দিয়ে নিরাপদে বসবাসের ব্যবস্থা গ্রহণে মিয়ানমার সরেকারের ওপর জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মহলের জোরালো কূটনৈতিক চাপ প্রয়োগের আহŸান জানানো হউক।’
প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, সরকার এই মুহূর্তে মানবিক সঙ্কট মোকাবেলা করছে। স্রোতের মত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে। এর একটি স্থায়ী সমাধান দরকার। প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন। রোহিঙ্গারা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে, এটা আমাদের দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। কারণ এর সঙ্গে অস্ত্রও আসছে। শান্তিতে নোবেল পাওয়া সু চি কীভাবে এরকম কাজ করতে পারেন সেটি ভেবে অবাক হয়ে যাই। তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের মেহমান। তাদেরকে মানুষ হিসেবে আমরা জায়গা দিয়েছি। তবে আজ হোক কাল হোক তাদের নিজ দেশে চলে যেতে হবে। রোহিঙ্গারা যাতে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। অনেকে এটা নিয়ে রাজনীতি করতে পারে, সেই সুযোগ দেয়া যাবে না। জাতিসংঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে এ বিষয়ে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু সমস্যা সমাধানে কফি আনানের সুপারিশের পূর্ণাঙ্গ বাস্তনের দাবি জানান। একইঙ্গে এ অপরাধে মায়ানমারকে আন্তর্জাতিক আদালতের বিচারের সম্মুখীন হতে হবে, আর আগত রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিয়ে পুনর্বাসন করে এর স্থায়ী সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করেন।
আরেক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের কফি আনানের সুপারিশ পেশের মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর আবার সেনা ক্যাম্প ও ছাউনীতে আক্রমণের কথা বলে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন শুরু হলো। এটা স্রেফ গণহত্যা। জাতিসংঘ ইতিমধ্যেই একে জাতিগত নিধন বলে মন্তব্য করেছে। তিনিও কফি আনানের সুপারিশ বাস্তবায়ন এবং মিয়ানমারে নিরাপদ এলাকা গড়ে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের দাবি জানান। পাশাপাশি এদেশে বিএনপি বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই দলটির কেউ একদিনও সেখানে গেলো না আর বলে সরকার কূটনৈতিকভাবে ব্যর্থ। বিএনপি’র এমন বক্তব্য ও আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজরুল করিম সেলিম বলেন, বিএনপি আগে রোহিঙ্গাদের ভুয়া ভোটার করেছিলো, এবার যাতে ওদের ব্যবহার করে কোনো অপশক্তি নেতিবাচক কিছু না করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, সব রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারের ফিরিয়ে নিতে হবে, কফি আনানের সুপারিশ পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করতে হবে।
অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু বলেন, রোহিঙ্গাদের অপরাধটা কী? হাজার হাজার বছর ধরে তারা সেখানে অবস্থান করছে। সারা পৃথিবী আজ তাকিয়ে দেখছে। মিয়ানমার সারা পৃথিবীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। সারাবিশ্ব আজ শেখ হাসিনার প্রশংসা করছে। কিন্তু অবাক হয়ে দেখলাম, যারা গণতন্ত্র ও মানবতার কথা বলে তারা আজ মিয়ানমারের সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি করেছে।
ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন রোহিঙ্গা মিয়ানমারের সমস্যা এবং সে দেশকেই সমাধান করতে হবে মন্তব্য করে বলেন, সতর্ক থাকতে হবে যাতে রোহিঙ্গাদের কেউ নেতিবাচকভাবে কাজে না লাগাতে পারে। কারণ ওদের সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্র এবং মাদকও আসছে। সমস্যা সমাধানে তিনিও কফি আনানের সুপারিশ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জাসদের একাংশের কার্যকরি সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল বলেন, অং সান সু চি শান্তি ও গণতন্ত্রের বারোটা বাজিয়েছেন। বাঙালিদের এই পার্লামেন্ট বিশ্বকে জানাতে চায়, মুসলমান হিসেবে রোহিঙ্গাদের আমরা জায়গা দি নাই, মানুষ হিসেবে জায়গা দিয়েছি। দ্বিতীয় বার্তা- রোহিঙ্গারা আমাদের জাতিগোষ্ঠী নয়, মিয়ানমারের জাতিগোষ্ঠী। তৃতীয় বার্তাটি হলো- মিয়ানমার বিশ্বের কাছে মিথ্যাচার করছে। বিশ্বের পÐিত ও মোড়লদের উদ্দেশে বলতে চাই, আপনাদের আচরণে এখন নৈতিকতার কোনো সামঞ্জস্য নেই। বিশ্ব আজ সঠিক আচরণ করতে না পারলে কাল এটা আপনাদের ঘরে যাবে। আমার প্রস্তাব হচ্ছে, সার্বিয়ান আর্মিদের সরিয়ে দিয়ে যেভাবে কসোভোর জন্ম হয়েছে. একইভাবে মিয়ানমারেও ব্যবস্থা নিতে হবে। তবে খাদ্য ও আশ্রয় দিতে গিয়ে নিজেদের যেন ক্ষতি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে বিপদমুক্ত রাখুন, আমরা সংঘাত চাই না, কারণ বাঙালি ভেসে আসেনি।
জাসদের আরেকাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেন, এই সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আরাকানে রোহিঙ্গাদের উপর যে নৃশংসতা হচ্ছে তা মধ্যযুগীয় নৃশংসতাকেও হার মানিয়েছে। কেউ যদি মানবতার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় পরবর্তীতে কীভাবে তার পুরস্কার কেড়ে নেয়া যায়, নোবেল কমিটিকে আজ সেটিও ভাবতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ