Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিদ্যুৎ সঙ্কট না থাকলেও সীমাহীন দুর্ভোগে দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষ

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে নজিরবিহীন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে জরুরী চিকিৎসা ও পানি সরবারহ সহ সব ধরনের নাগরিক পরিসেবা মারাত্মক বিপর্যয়ের কবলে। নাগরিক জীবনে বার বার দুর্বিসহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ ঘাটতি না থাকলেও সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার ত্রæটির কারণে দক্ষিণাঞ্চলের কোটি মানুষ এখন যথেষ্ঠ কষ্টে আছেন। ঘন ঘন জাতীয় গ্রীড বিপর্যয়ের পাশাপাশি স্থানীয় বিতরণ ও সরবারহ ব্যবস্থায় গোলযোগের ফলে বরিশালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এখন নিয়মিত ঘটনায় পরিনত হয়েছে। গত একমাসে অন্তত ছয়বার বরিশালÑভেড়ামাড়া ও বরিশালÑখুলনা ১৩২কেভী গ্রীড লাইনে বিপর্যয় সৃষ্টি হয়। এর সাথে বরিশাল ৩৩কেভী সাব-স্টেশন থেকে নগরীর অপর দুটি ৩৩/১১কেভী সাব-স্টেশন মুখি সঞ্চালন লাইনের ব্রেকারে গোলযোগের কারনেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট ক্রমশ অসহনীয় পর্যায়ে পৌছছে।
জাতীয় গ্রীড লাইনের দুদিক থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চল সংযূক্ত থাকলেও নির্বিঘœ ও নিরবিচ্ছিন্ন সঞ্চালন ব্যবস্থা নিশ্চিত হচ্ছে না। বরিশালÑমাদারীপুরÑফরিদপুরÑভেড়ামাড়া ১৩২কেভী ডবল সার্কিট লাইনে গত একমাসে অন্তত ৬বার গোলযোগ দেখা দেয়। জাতীয় গ্রীডের এ গোলযোগের সাথে সাথে বরিশালে সামিট পাওয়ারের ১১০মেগাওয়াট এবং ভোলার ২২৫মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার স্টেশনটিও ট্রিপ করে যায়। এসব পাওয়ার স্টেশন ট্রিপ করার পরে তা সচল করতে অন্তত ৩-৬ঘন্টা সময় প্রয়োজন হয়। ফলে সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল দীর্ঘ সময় ধরে বিদ্যুৎ বিহীন থাকছে।
গত শুক্রবার রাত সোয়া ১১টার দিকে বরিশালÑভেড়ামাড়া গ্রীড লাইনে বিপর্যয়ের সাথে সাথে অনরূপভাবেই সমগ্র দক্ষিণাঞ্চল অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। মিনিট দশেকের মাথায় জাতীয় গ্রীড থেকে স্টেশন লোড এবং পনের মিনিটের মধ্যে বিভিন্ন ফিডারে বিদ্যৎ সরবারহ পূণর্বহাল করা সম্ভব হলেও ৫মিনিটের মাথায় আবার বিপর্যয় দেখা দেয়। ফলে দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্র বিদ্যুৎ ব্যবস্থা পূণর্বহাল হতে রাত ৩টা অতিক্রম করে।
কিন্তু মাত্র ছয় ঘন্টার মাথায়ই গতকাল সকালে বরিশালে রূপাতলী ৩৩কেভী সাব-স্টেশন থেকে পলাশপুর সাব-স্টেশনমুখি সঞ্চালন লাইনের ব্রেকারে গোলযোগের ফলে পুনরায় বরিশাল মহানগরী সহ ঝালকাঠী জেলা বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়ে। দিনভর সে বিপর্যয় মোকাবেলার করতে কাশীপুর সাব-স্টেশন থেকে বিকল্প ব্যবস্থায় পলাশপুর সাব-স্টেশনে বিদ্যুৎ পৌছে দিতে গিয়ে নগরী যুড়ে লোডসেডিং করতে হয়। কিন্তু পলাশপুর সঞ্চালন লাইনের ব্রেকারের মেরামতকাজ শেষ হবার আগেই দুপুর পৌনে ২টার দিকে রূপাতলী ৩৩কেভী সাব-স্টেশন থেকে পদ্মা ক্যাপমুখি ৩৩কেভী সঞ্চালন লাইনে বিকট শব্দে বিস্ফোরণসহ অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পুনরায় গোটা নগরী সহ ঝালকাঠী জেলার বিদ্যুৎ সরবারহ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যায়। ঘন্টাখানেক বাদে নগরীর বিদ্যুৎ সরবারহ প্রায় স্বাভাবিক হলেও পদ্মা ক্যাপ-এর ৩৩কেভী সঞ্চালন লাইনটি সন্ধা পর্যন্ত চালু করা যায়নি। এভাবেই প্রতিদিন বরিশাল মহানগরী সহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ বিপর্যয় সমগ্র নাগরিক জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। এর সাথে বিভিন্ন ১১কেভী ও .০৪কেভী লাইন ও বিতরন ট্রান্সফর্মারে গোলযোগ এ অঞ্চলে নিয়মিত ঘটনা।
ফলে বরিশাল ও পটুয়্খাালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের স্বাস্থ্য পরিসেবা এবং পানি সরবারহ ব্যবস্থা মুখ থুবরে পড়ছে। শিল্প ও ব্যবসা বাণিজ্যেরও অপুরনীয় ক্ষতি হলেও পরিস্থিতির উন্নয়নে তেমন কোন কার্যকর উদ্যোগ নেই। এমনকি পওয়ার গ্রীড কোম্পানী-পিজিসিবি’র পশ্চিমাঞ্চলীয় ডিজিএম-এর সেল ফোনটিও গত বেশ কিছৃুদিন ধরে বন্ধ থাকায় গ্রীড লাইনের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে গতকাল বিদ্যুৎ বিতরণ কোম্পানীর বরিশাল জোনের ডিজিএম ও কোম্পানীর পরিচালক- কারিগরির সাথে আলাপ করা হলে তারা উভয়ই পরিস্থিতি উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচীর কথা জানিয়েছেন। তবে এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নে অন্তত দেড় বছর সময় প্রয়োজন হবে বলে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিদ্যুৎ

১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১৮ জানুয়ারি, ২০২৩
১৭ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ