Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন কন্টেইনার টার্মিনালের ভিত্তি স্থাপন

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

 চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে আরও একটি নতুন কন্টেইনার টার্মিনাল পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনালের (পিসিটি) ভিত্তি স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ১৯শ কোটি টাকা ব্যায়ে ২৭ একর জমিতে এই টার্মিনাল নির্মাণ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নগরীর বিমানবন্দর সড়কের ড্রাইডক ও চট্টগ্রাম বোট ক্লাবের মাঝখানের এই টার্মিনালের জেটিতে এক সাথে তিনটি জাহাজ ভিড়তে পারবে। পিসিটি থেকে নৌ, সড়ক ও রেলপথে কন্টেইনার পরিবহন করা যাবে। গতকাল (শুক্রবার) নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান পিসিটির ভিত্তি স্থাপন করেন।
এসময় তিনি বলেন চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃদপিন্ড। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সেই হৃদপিন্ড সচল করছেন। চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নে একের পর এক প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। সেনাবাহিনী পিসিটির নির্মাণকাজ করবে জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি সেনাবাহিনীকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিড়ি হিসাবে ব্যবহার করেছে। আর শেখ হাসিনা সেনাবাহিনীকে দেশের উন্নয়নের অংশিদার করছেন। নৌমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এই অগ্রযাত্রা কেউ রুখে দিতে পারবে না।
বিশেষ অতিথি স্থানীয় সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বলেন, স্বাধীনতার পর মাত্র তেরটি জেটি নিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের যাত্রা শুরু হয়। বিগত ৪৭ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরে আরও ৪০টি জেটি হওয়ার কথা। কেন হয়নি, এ জন্য কারা দায়ী তাদের চিহ্নিত করতে হবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার সাথে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, আমদানি-রফতানি জড়িত উল্লেখ করে তিনি বলেন, বন্দরের কর্মকর্তাদের অবহেলার খেসারত ব্যবসায়ীরা কেন দেবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রকৌশল বিভাগের প্রধান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান সরকার বলেন, পিসিটি নির্মাণের দায়িত্ব পেয়ে সেনাবাহিনী খুশি। তিনি বলেন, গুণগতমান অক্ষুণœ রেখে নির্ধারিত সময়ে ২০১৯ সালের মধ্যেই পিসিটির নির্মাণ কাজ শেষ করা হবে। সেনাবাহিনী দেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের পাশাপাশি চট্টগ্রাম মহানগরীর পানিবদ্ধতা নিরসনে সেনাবাহিনী একটি বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে।
চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নের অর্থ হল দেশের উন্নয়ন। চট্টগ্রাম বন্দরকে অবহেলিত রেখে জাতীয় অগ্রগতি সম্ভব নয়। বন্দরের বিভিন্ন অব্যবস্থাপনা ও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অবসান জরুরী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি না হলে ব্যবসায়ীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যবসা করতে পারবেন না। স্বাগত বক্তব্যে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম খালেদ ইকবাল বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বাড়ছে। দেশের ৯২ ভাগ আমদানি-রফতানি এ বন্দর দিয়ে হচ্ছে। ২০০৮ সালে যেখানে ১০ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হতো এখন সেখানে ২৫ লাখ টিইইউএস কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হচ্ছে। সক্ষমতার দিক থেকে চট্টগ্রাম বন্দর ২৭ ধাপ এগিয়েছে।
পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক কেন্দ্রসহ বর্তমান সরকার বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন চলছে। আর এ কারণে এসব প্রকল্পের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে এখন হেভি কার্গো আসছে। আমদানি-রফতানি দ্রæত বাড়ছে, এর চাপ সামাল দিতে চট্টগ্রাম বন্দরে নতুন জেটি নির্মাণ, ইয়ার্ড সম্প্রসারণ এবং ইকুইপমেন্ট সংগ্রহ করা হচ্ছে। একই সাথে বন্দরের সকল কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় আসছে। এসব পদক্ষেপের ফলে খুব শিগগির বন্দরে জট কমে যাবে এবং জাহাজের অবস্থানকাল কমে আসবে বলে জানান তিনি।
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে পিসিটির উপর একটি তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন পরামর্শক বুয়েটের প্রফেসর ড. আশরাফ আলী। পরে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান কেক কেটে ও বেলুন উড়িয়ে পিসিটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এরপর মন্ত্রী চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য নতুন সংগৃহীত ইকুইপমেন্ট পরিদর্শন করেন।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ