পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : মিয়ানমারের আরকানে মুসলিম নারী ও শিশু নির্যাতন এবং নির্বিচারে গণহত্যা বন্ধের দাবী জানিয়ে হেফাজতে ইসলামের আমীর শায়খুল ইসলাম আল্লমা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বৌদ্ধসন্ত্রাসী ও সরকারী বাহিনী যৌথভাবে সরাসরি হত্যাকান্ড চালাচ্ছে। বর্তমান হত্যাকান্ড অতীতের যে কোন সময়ের চাইতে মর্মান্তিক ও মর্মন্তুদ। বার্মার মগসন্ত্রাসীদের পৈশাচিক আর নির্মমতার কোন নজীর দুনিয়াতে নেই। তিনি বলেন, গত কয়েকদিন থেকে নদীতে ভাসছে মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলমান শিশু-কিশোর, যুবক-যুবতি, বৃদ্ধ নারী পুরুষের বিকৃত লাশ। মায়ের সামনে মেয়েকে, মেয়ের সামনে মাকে, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে ধর্ষণ করে নির্বিচারে হত্যা করছে সরকারী বর্বর বাহিনী। তারা মুসলমানদের ঘর বাড়ি, মাদরাসা ও মসজিদগুলি জ্বালিয়ে দিচ্ছে, শিশুসহ সব বয়সী মানুষদেরকে দা দিয়ে কুপিয়ে মারছে, এমনকি জীবন্ত মানুষগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করছে। এরা সন্ত্রাসী, খুনি, এরা মানবতার শত্রæ।
গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গারা আমাদের ভাই বোন। এরা সন্ত্রাসী নয়, নিপীড়িত অসহায় মজলুম। এদের আশ্রয় দেয়া আমাদের ঈমানী দায়িত্ব। তিনি রোহিঙ্গা নির্যাতিত অসহায় মানুষদেরকে আশ্রয় দেয়ার জন্য সরকরের প্রতি দাবী জানিয়ে বলেন, মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলিম মা বোনদের রক্ত নিয়ে যারা হোলি খেলায় মেতে উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে সোচ্চার হোন, কুটনৈতিক চাপ প্রয়োগ করুন। মানবতার শত্রæদের মোকাবিলায় বিশ্ব মুসলিম নেতৃবৃন্দ ও রাষ্ট্রগুলোকে শামিল করুন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা মুসলমানরা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও বৌদ্ধ সন্ত্রাসীদের অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করছে। এদের সাহায্য করুন। তাড়িয়ে দিয়ে আল্লাহর গজব ডেকে আনবেন না।
আল্লমা শাহ আহমদ শফী জাতিসংঘ, ওআইসিকে মিয়ানমারের এই সা¤প্রদায়িক ও জাতিগত নিপীড়ন বন্ধের জন্য জোরালো ভূমিকা রাখার আহŸান জানিয়ে বলেন, মুসলমান হওয়াটাই কি আরাকানের নির্যাতিত নাগরিকদের অপরাধ? যে নির্যাতন আজ আরাকান চলছে তার শতভাগের একভাগও যদি কোনও মুসলিম দেশে অমুসলিমদের ওপর করা হতো তাহলে বিশ্বসংস্থা ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের শক্তিধর দেশগুলো এভাবে নীরব ভূমিকা পালন করতো ? তাই, আরকানে মুসলিম গণহত্যার উসকানিদাতা অং সান সুচির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস বিরোধী আইনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব, মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, আজ রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলিমরা নিজ জন্ম ভূমিতে অধিকারহারা। তারা নিজের আবাসভূমিতে নিষ্ঠুর বর্বরতম নির্যাতনের স্বীকার। মানবতাবাদী কোন রাষ্ট্র সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে আসছে না। বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো আজ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। উগ্রজাতীয়তাবাদ আর ক্ষমতালিপ্সা মানুষের পাশবিকতাকে কতটা উসকে দিতে পারে, তারই বাস্তবচিত্র আরাকানের অসহায় মানুষের আর্তচিৎকার। উগ্রসা¤প্রদায়িকতা মানুষকে যে পশুতে পরিণত করে তার নিকৃষ্টতম উদাহরণ হলো আরকানের বর্তমান চিত্র।
আল্লমা শাহ আহমদ শফী আরো বলেন, আরকানে মুসলমানের ওপর যে নির্যাতন চলছে তা জাহেলী যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়ে ফেলছে। এই করুণ পরিস্থিতিতে কোন বিবেকবান ও ঈমানদার মানুষ নিরব বসে থাকতে পারে না। আরকানের অত্যাচারিত মুসলমানদের পাশে দাড়ানো, যার যার সামর্থানুযায়ী সাহায্য করা সকল মুসলমানদের ঈমানী ও মানবিক দায়িত্ব। তিনি আরকানে মুসলমানের ওপর নির্যাতন বন্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখা এবং আজ শুক্রবার সারা দেশের মসজিদ মাদরাসায় মহান আল্লাহর নিকট বিশেষ দোয়া করার জন্য হেফাজতে ইসলাম নেতৃবৃন্দ, সর্বস্তরের ওলামায়ে কেরাম ও দেশবাসির প্রতি আহবান জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।