Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এভাবে আর মিয়ানমারকে চলতে দেয়া যায় না

গোল টেবিল আলোচনায় বক্তারা

| প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : কয়েকদিন ধরে আনান কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশের পর মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন শুরু হয়। উপায় না পেয়ে তারা বাংলাদেশের সীমান্তে অবস্থান নেয়। কিছু রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশও করেছে। এভাবে আর মিয়ানমারকে চলতে দেয়া যায় না। গতকার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক গোল টেবিল আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ইনস্টিটিউট অব কনফ্লিক্ট এবং ল› অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ ওই আলোচনার আয়োজন করে। ওই আলোচনায় সাবেক কূটনীতিক, সামরিক বিশ্লেষক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, মিয়ানমারের আরাকানের রোহিঙ্গা মুসলিমরা ১৯৮২ সালের পর থেকেই সে দেশের নাগরিকত্ব হারান। সে থেকে তাদের ওপর অমানবিক নির্যাতন চলে আসছে। যা অব্যাহত আছে। যার ফলশ্রæতিতে এখন পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে অবস্থান করছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, কফি আনানের প্রতিবেদনে যে মৌলিক কথা আছে সেটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। সেটি হচ্ছে এ সমস্যার উৎপত্তি হচ্ছে মিয়ানমারের ভেতরে। এ সমস্যার সমাধান মিয়ানমারের ভেতর থেকে আসতে হবে। নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রি. জে (অব) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কোনোদিনই ভালো হবে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত তারা (মিয়ানমার) বলে তাদের (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে দাও। রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের স্পষ্ট কোনো অবস্থান দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন বক্তারা। এমনকি বিষয়টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতেও ব্যর্থ হয়েছে। রোহিঙ্গাদের সঠিক তথ্য উপাত্ত সরকারের কাছে নেই বলেও জানান তাঁরা। সাবেক রাষ্ট্রদূত মো. জমির বলেন, কফি আনান রিপোর্ট বাস্তবায়নকল্পে আমাদের সরকারের তরফ থেকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়া উচিত। জাতিসংঘের অধিবেশনে আশা করি প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি তুলে ধরবেন।
রোহিঙ্গা রক্ষায় মুখের প্রতিবাদ আর যথেষ্ট নয়
মিয়ানমার সরকারকে চাপে রেখেই নির্যাতিত মুসলিম রোহিঙ্গাদের অধিকার আদায় করতে হবে। এজন্য রোহিঙ্গা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উচিত জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরামে দেশটির বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করা। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশ সবচেয়ে ভুক্তভোগী। এজন্য বাংলাদেশকে উদ্যোগ নেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। রোহিঙ্গাদের নির্মম পরিস্থিতির জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করেছেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমারে সরকারি মদদে রোহিঙ্গা নির্মূল চলছে। সেখানে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। দেশটির বিরুদ্ধে মুখে প্রতিবাদ অনেক হয়েছে। এখন পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে। আর জাতিসংঘকেই এর নেতৃত্ব দিতে হবে।
কাজী রিয়াজুল হক বলেন, সামনের মাসে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সভা রয়েছে। সেখানে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ভুক্তভোগী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের জোরালো প্রস্তাব রাখা উচিত। এ প্রসঙ্গে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, রোহিঙ্গা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। এই জনগোষ্ঠী চরম মানবিক বিপর্যয়ের শিকার।
তিনি বলেন, বিপন্ন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ায় তারা আরও অসহায় হয়ে পড়েছে। মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে এটা একটা মর্মান্তিক পরিস্থিতি। তিনি রোহিঙ্গা ইস্যুর আশু সমাধানে সংশ্লিষ্ট সকল দেশকে এগিয়ে আসার আহŸান জানান।
টি আইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা আমাদের নয়, মিয়ানমারের। দেশটির সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম সীমায় পৌঁছে গেছে। শিগগিরই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক স¤প্রদায়কে কূটনৈতিকভাবে এ সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন। নইলে মানবাধিকার প্রশ্নে গোটা বিশ্বকেই কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে না দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উচিত সাময়িকভাবে তাদের আশ্রয় দেয়া।



 

Show all comments
  • Mainuddin Ishan ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ৪:৫৯ এএম says : 1
    বাংলাদেশ সরকারের উচিৎ তাদের অস্থায়ীভাবে জায়গা দেওয়া এবং সামরিক শক্তি প্রয়োগ করা।
    Total Reply(0) Reply
  • apu ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:১৭ পিএম says : 0
    প্রধান মন্ত্রী কি ৭১ এর কথা ভূলে গিয়েছেন? ভারত আমাদের শেল্টার দিয়েছে আর দিয়েছে অস্র । প্রধান মন্ত্রীর সময় এসেছে ইন্দিরা গান্ধীর ভূমিকা নেওয়া । আমরা ARSA পাশে থাকবো
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ