Inqilab Logo

শনিবার ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে শিল্পী আবদুল জব্বারের দাফন

| প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


স্টাফ রিপোর্টার
‘সালাম সালাম হাজার সালাম, সকল শহীদ স্মরণে’সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের কণ্ঠশিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জব্বারের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে বাদ জোহর নামাজে জানাজা শেষে তার মরদেহ মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর আগে সকাল ১০টায় বাংলাদেশ বেতারে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেয়া হয় শিল্পী আব্দুল জব্বারের মরদেহ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মরহুমের লাশ আনা হলে তাকে এক নজর দেখতে রাজনীতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ নানা পেশার মানুষের ঢল নামে। সবাই ফুলেল শ্রদ্ধায় সিক্ত করেন বাংলা সংগীতাঙ্গনের এ বরপুত্রকে। তার স্মরণে সেখানে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। খোলা হয় শোক বই।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন পর্বের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার মুখ্য সচিব ড. কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপরই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাভোকেট কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি শেষ শ্রদ্ধা জানান।
এ সময় ওবায়দুল কাদের বলেন, মরহুম আব্দুল জব্বার সুরের জাদুকর ছিলেন। বাংলা গানের হেমন্ত মুখোপাধ্যায় হিসেবে তাকে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের এ কণ্ঠসৈনিক ও মুক্তিযোদ্ধা আমাদের আত্মার আত্মীয় ছিলেন। বঙ্গবন্ধুও তাকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে যে গানগুলো গেয়েছেন, তা আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে এবং কালজয়ী হয়ে আছে। মরহুমের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন খ্যাতিমান কণ্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমীন, কুদ্দুস বয়াতী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ভিসি অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পক্ষে কলমসৈনিক কামাল লোহানী, শিল্পী বুলবুল মহলানবীশ, কল্যাণী ঘোষ, সৈয়দ হাসান ইমাম, আশরাফুল আলম, দেবু ভট্টাচার্য, গণস্বাস্থের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, উদীচীর পক্ষে সভাপতি ড. শফিউদ্দিন আহমেদ, গান বাংলা টেলিভিশনের পক্ষে শিল্পী মাহমুদ সেলিম, জাতীয় জাদুঘরের পক্ষে মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের পক্ষে সভাপতি গোলাম কুদ্দুছসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ মরহুম শিল্পী আব্দুল জব্বারের বড় ভাইয়ের সন্তানগণ এ শিল্পীর প্রতি শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষে ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগ, পাবলিক লাইব্রেরি, বাংলাদেশ আওয়ামী যুব লীগ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক পরিষদ, বাংলাদেশ টেলিভিশন, প্রযুক্তি অধিদপ্তর, নজরুল ইনস্টিটিউট, সঙ্গীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ, স্মৃতি ৭১’, বাংলাদেশ টেলিভিশন শিল্পী সংস্থা, বাংলার মুখ, বালাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বাংলাদেশ আওয়ামী শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড, বাংলাদেশ গণসঙ্গীত সমন্বয় পরিষদ, কেন্দ্রীয় খেলাঘর, সুরতাল, থিয়েটার অঙ্গণ, চন্দ্রকলা থিয়েটার, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী, বাংলাদেশ লেখক পরিষদ, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, স্মৃতি ৭১, কথা ও সুর সঙ্গীত কলাকেন্দ্র, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, মার্কেনটাইল ব্যাংক, মহানগর আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ মিউজিশিয়ান ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ যাত্রাশিল্প উন্নয়ন পরিষদ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ যুব মেত্রী, রাইজিং বিডি ডট কম, আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র, আর টিভি পরিবার, দেশ টিভি পরিবার, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা, বুলবুল একাডেমী অব ফাইন আর্টস (বাফা), বাংলা একাডেমি, দনিয়া সাংস্কৃতিক জোট, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর অঞ্চল-৬, আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল, প্রাচ্যনাট, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, স্বভূমি লেখক শিল্পী কেন্দ্র, বাংলাদেশ চারুশিল্পী সংসদ, বাংলাদেশ নারী মুক্তি সংহতি, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, সম্মিলিক সামাজিক আন্দোলন, এ্যাডাব, বঙ্গবন্ধু গবেষণা পরিষদ ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট মরহুম আবদুল জব্বারে প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর নামাজে জানাজায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, তথ্যসচিব মরতুজা আহমদসহ হাজার হাজার মানুষ অংশ গ্রহণ করেন।
শিল্পী আবদুল জব্বার কিডনি জটিলতার পাশাপাশি হৃদযন্ত্র ও প্রোস্টেট রোগে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বুধবার ইন্তেকাল করেন। তিনি ১৯৩৮ সালের ৭ নভেম্বর কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। আব্দুল জব্বার ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে গান গাওয়া শুরু করেন। বাংলাদেশ সরকার প্রদত্ত দুটি সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক (১৯৮০) ও স্বাধীনতা পুরস্কার (১৯৯৬) ছাড়াও বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক (১৯৭৩), বাচসাস পুরস্কার (২০০৩) ও আজীবন সম্মাননা (সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস-২০১১) পান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ