Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আরো দুইজনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

টাঙ্গাইলে চলন্ত বাসে গণধর্ষণ পর হত্যা মামলায়

| প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা : টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল” কলেজের ছাত্রী রুপা খাতুনকে গণধর্ষণ করে হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত বাসের চালক হাবিব ও সুপার ভাইজার গেন্দুকে বুধবার বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই আসামীর স্বকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। পরে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে গত মঙ্গলবার বিকেলে গ্রেফতারকৃত বাসের তিন হেলপার জাহাঙ্গীর (২০), আকরাম (৩০) ও শামীম (৩৫)কে টাঙ্গাইল আদালতে প্রেরণ করা হলে সন্ধ্যায় এই গ্রেফতারকৃত তিনজন আসামী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জনবাবন্দি দিয়েছে। পরে তাদেরকে বিজ্ঞ আদালত জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দেন।
এদিকে এই পৈশাচিক গণধর্ষণের ঘটনার সকল আসামি গ্রেফতারে পুলিশি তৎপরতা তুলে ধরে বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন মাধ্যমে পুলিশ সুপার মো. মাহবুব আলম পিপিএম সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
গত শুক্রবার রাতে ঐ তরুণী বগুড়া থেকে ছোয়া পরিবহণের বাসে ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। রাতে বনের সড়ক থেকে এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করেছিল মধুপুর থানা পুলিশ। শনিবার নিহত তরুণীর পরিচয় না পেয়ে অজ্ঞাত হিসেবে তার লাশ দাফন করা হয়।
সোমবার রাতে মধুপুর থানায় গিয়ে অজ্ঞাতনামা ঐ তরুণীর ছবি ও পড়নের সালোয়ার কামিজ দেখে নিহত তরুণীর ভাই হাফিজুর রহমান তার বোন হিসেবে তাকে শনাক্ত করেন এবং তার বোনের নাম রুপা খাতুন বলে জানান। সে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল” কলেজে এলএলবি বিষয়ে অধ্যয়নরত ছিল। সে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আছানবাড়ী গ্রামের জিলহাস প্রামাণিকের মেয়ে।
নিহত তরুণী বড় ভাই হাফিজুর প্রামাণিক জানান, তার ছোট বোন রুপা খাতুন অনার্স শেষ করে ঢাকার আইডিয়াল ‘ল” কলেজে এলএলবি বিষয়ে অধ্যয়নরত ছিল। পাশাপাশি সে শেরপুর জেলায় ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রোমশনাল ডিভিশনে কর্মরত ছিল। গত শুক্রবার শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিতে সে বগুড়া যায়। পরে পরীক্ষা শেষে বগুড়া থেকে ময়মনসিংহগামী ছোয়া পরিবহণের (ঢাকা মেট্রো ব-১৪-৩৯৬৩) একটি বাসে তার এক সহকর্মীর সাথে যাত্রা করে।
তার সেই সহকর্মীর কর্মস্থল ঢাকায় হওয়ায় সে এলেঙ্গাতে নেমে যায় এবং রুপা ঐ বাসেই ময়মনসিংহ যাচ্ছিল। কিন্তু সে সঠিক সময়ে ময়মনসিংহ না পৌঁছায় তার সহকর্মীরা মোবাইলে ফোন করলে এক যুবক ফোনটি রিসিভ করে এবং রুপা ভুল করে ফোনটি ফেলে রেখে গেছে বলে জানিয়ে কেটে দেয়।
শনিবার সকালে কর্মস্থলে না পৌঁছায় ইউনিলিভার বাংলাদেশ এর শেরপুর অফিস থেকে রুপার বড় ভাই হাফিজুর প্রামাণিক এর মোবাইলে রুপা কর্মস্থলে না ফেরার বিষয়টি অবগত করে তারা। পরবর্তীতে রুপার মোবাইলে যোগাযোগ করতে না পেরে তার বড় ভাই ময়মনসিংহ কোতয়ালী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে।
মধুপুর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কাইয়ুম খান সিদ্দিকী জানান, নিহতের ভাই লাশ শনাক্ত করার পর তার তথ্য ছোয়া পরিবহণের বাসের চালক, সুপার ভাইজারসহ সকল আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।
বর্তমানে নারীর প্রতি সহিষ্ণতা, নারী নির্যাতন ধর্ষণের ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। এ ধরনের অপকর্মের সাথে জড়িত আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না বলেই এ ধরনের ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। ধর্ষণের সকল ঘটনায় জড়িত আসামিরা দ্রæত মামলার নিষ্পত্তির মাধ্যমে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা হবে এমনটাই প্রত্যাশা করছে সাধারণ মানুষ।



 

Show all comments
  • কারি নোমান ইবনে আ:রশিদ ৩১ আগস্ট, ২০১৭, ৭:৫৪ এএম says : 0
    এদেরকে মানুষ বলাই ভুল, এরা হচ্ছে সমাজের কুকুর। কুকুররের যেমনি ভাবে মা বোন নেই, এই মানুষরুপি কুকুরদের ও মা-বোন নেই। তারা তাদের যৌন চাহিদা মিটানোর জন্য কর্মস্থল বানিয়েছে, রাস্তা, ঘাট, পার্ক, চিপায় চাপায়, বন জংগল, গাড়ী, এক কথায় যে যেখানে পাচ্ছে সেখানেই.................
    Total Reply(0) Reply
  • S. Anwar ৩১ আগস্ট, ২০১৭, ৮:০০ এএম says : 0
    এই আওয়ামী জালিমদের পতন না হলে দেশে আইনের শাসন কোনদিনও প্রতিষ্ঠিত হবে না। নারীরা এভাবেই তাদের দ্বারা ধর্ষিতা ও খুন হতেই থাকবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ