পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মক্কা থেকে মিনায় যাওয়ার কার্ড পাননি ৪টি বেসরকারী হজ এজেন্সি’র প্রায় ৮শ’ বাংলাদেশী হজযাত্রী। আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ (আরাফার দিন)। গতকাল বুধবার মক্কার স্থানীয় সময় দুপুরের মধ্যে এসব হজযাত্রীদের মিনায় পৌছার কথা ছিল। মিনার কার্ড হাতে না পেয়ে এসব হজযাত্রী মক্কায় অঝোরে কেঁদেছেন। চুক্তি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সউদী মুয়াল্লেমদের জনপ্রতি ১৫ রিয়ালের বকেয়া ৫শ’রিয়ার করে পরিশোধ না করায় মুয়াসসাসা কর্তৃপক্ষ এসব হজযাত্রীদের মিনার কার্ড দেয়নি। গতকাল সন্ধ্যায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এসব হজযাত্রীদের ভাগ্যে মিনার কার্ড জোটছে কিনা এবং তারা হজ করতে পারবেন কিনা তা’ জানা যায়নি। মক্কা থেকে নির্ভরযোগ্য সূত্র এতথ্য জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে মক্কাস্থ বাংলাদেশ হজ মিশনের কাউন্সেলর হজ মাকসুদুর রহমানের মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। মক্কায় চারটি হজ এজেন্সি’র প্রায় ৮শ’ হজযাত্রী মিনার কার্ড পাননি এমন প্রশ্নের জবাবে মিনা থেকে হাবের মহাসচিব মো: শাহাদাত হোসাইন তসলিম ইনকিলাবকে বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। এ প্রসঙ্গে কিছু বলতে হলে হজ মিশনের কাউন্সেলর মাকসুদুর রহমান বলবেন। হাব মহাসচিব বলেন, বিকেলে কাউন্সেলর হজ মাকসুদুর রহমানকে ফোনে জিজ্ঞেস করেছি সব ঠিক আছে কিনা তিনি বলেছেন, সব ঠিক আছে এবং বাংলাদেশী হজযাত্রীদের কোনো সমস্যা নেই। রাতে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসিহ’র মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। ব্রাইট ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী ও মিসফালা ট্রাভেলসে অংশিদার রেজাউল করিম উজ্জ্বলের সউদী’র ফোনে দফায় দফায় যোগোযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল বিকেল পর্যন্ত মক্কার ৭৪ নম্বর ও ৭৫ নম্বর মুয়াল্লেম ৬/৭টি বাংলাদেশী হজ এজেন্সি’র হজযাত্রীদের মিনায় যাওয়ার গাড়ী দিতে পারেনি। মিনায় যাওয়ার জন্য এসব এজেন্সি’র শত শত হজযাত্রী মক্কায় চরম হতাশায় ভুগছেন। মক্কা থেকে গোল্ডজয় ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী ও এন ই আর সার্ভিসেসের (১০৬৭)-এর অংশিদার আলহাজ শামসুল হক টেলিফোনে ইনকিলাবকে এতথ্য জানিয়েছেন। মিনা থেকেও একটি হজ এজেন্সি’র স্বত্বাধিকারী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঐ হজ এজেন্সি’র স্বত্বাধিকারী জানান, মুয়াল্লেম কর্তৃপক্ষের বকেয়া ৫শ’ রিয়াল করে পরিশোধ না করায় হজ এজেন্সি বদরপুর ট্রাভেলস, ব্রাইট ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী রেজাউল করিম উজ্জ্বলের পরিচালনাধীন মিসফালা ট্রাভেলসসহ চারটি হজ এজেন্সি’র প্রায় ৮শ’ হজযাত্রীকে মুয়াসসাসা কর্তৃপক্ষ মিনায় যাওয়ার কার্ড দেয়নি। এসব হজযাত্রী মিনার কার্ড না পেয়ে মক্কায় কান্নাকাটি করে দিন কাটাচ্ছেন। মক্কাস্থ হজ মিশনের কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তা মক্কায় আটকেপড়া এসব অসহায় হজযাত্রীদের কোনো খোঁজ খবরও নেননি। তিনি বলেন, ৭৪ নং ও ৭৫নং মুয়াল্লেম কর্তৃপক্ষের চরম অবহেলা ও গাফলতির দরুন গত মঙ্গলবার থেকে ২শ’৪জন হজযাত্রীর কোনো গাড়ী পাচ্ছি না। তিনি বলেন, মুয়াল্লেম কর্র্তৃপক্ষ মিনায় যাওয়ার যথাসময়ে গাড়ী না দেয়ায় অন্যান্য হজ এজেন্সি’র হজযাত্রীদের মিনায় পাঠাতে গলদঘর্ম পোহাতে হচ্ছে। প্রচন্ড গরমের মধ্যে গাড়ীর অভাবে পায় হেঁটেও হজযাত্রীদের মিনায় পাঠাতে পারছিনা। বিকেলে আলহাজ শামসুল হক বলেন, শোনা যাচ্ছে মুয়াল্লেম মক্কায় আটকেপড়া হজযাত্রীদের মিনায় পাঠাতে উদ্যোগ নিচ্ছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে মক্কায় অবস্থানকারী হজযাত্রীরা মিনায় যেতে শুরু করেন। হাব মহাসচিব মুয়াল্লেম কর্তৃপক্ষের গাড়ী সরবরাহ প্রসঙ্গে বলেন, এবার সময়মতো গাড়ী পেতে সকল দেশেরই হজযাত্রীদের সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, সউদী মুয়াল্লেম সময় মতো গাড়ী না দিয়ে কারো কিছু করার নেই। গত সোমবার ও মঙ্গলবার সউদী আরবে এক নারীসহ আরও চার বাংলাদেশি হজযাত্রী ইন্তেকাল করেছেন । ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত মোট ৩৯ জন বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হলো।
রাতে মিনা থেকে আল কুতুব হজ ট্রাভেলসের (৬৭১)-এর স্বত্বাধিকারী মাওলানা কুতুব উদ্দিন এবং খিলক্ষেত ট্যুরস এন্ড ট্রাভেলসের (৮৮৯) স্বত্বাধিকারী আলহাজ শহীদুল ইসলাম টেলিফোনে ইনকিলাবকে বলেন, মুয়াল্লেমদের চরম অব্যবস্থাপনায় মঙ্গলবার দিবাগত সারা রাত মিনায় গমনেচ্ছু হজযাত্রীরা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন। ১২৬নং, ১১৮নং, ১১৪নং ,১১৬নং , ১৩৪নং মুয়াল্লেম কর্তৃপক্ষ মিনায় যাওয়ার গাড়ী দেয়ার কথা দিয়ে গতকাল বুধবার সকাল ৮টা থেকে ৯টায় গাড়ী দিয়েছে। মুয়াল্লেমরা এবার ৭শ’ ২০ রিয়ালের স্থলে ৯শ’ রিয়াল করে নিয়েছে। তার পরেও চুক্তি অনুযায়ী মুয়াল্লেমরা মিনায় হাজীদের সেবা দিচ্ছে না। প্রত্যেক তাবুতেই ৯জন থেকে ১০জন হজযাত্রীর সিট কম দিয়েছে। এতে তাবুতে হাজীদের শোয়ার জায়গা দিতে চরম হিমসিম খেতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে মুয়াল্লেম কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেয়া হলে তারা জানিয়েছে মুয়াসসাসা কর্তৃপক্ষ প্রত্যেক মুয়াল্লেমকে ৫শ’ হজযাত্রীর সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছে কিন্ত তাবুর জায়গা বাড়ানো হয়নি। এক প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, মিনার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করা হয়েছে। মিনার ফুটপাতে কোনো দোকানপাট বসতে দেয়া হয়নি। এছাড়া প্রতি বছরের ন্যায় অবৈধ হাজী মিনায় এবার আসতে দেয়া হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।