পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পাকিস্তান যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সকল চলমান আলোচনার সাথে সাথে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সফরও স্থগিত করেছে। ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমালোচনার প্রতিবাদ হিসেবে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। সোমবার পাকিস্তান সিনেটের এক গোপন বৈঠকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ এ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান বলে সূত্রসমূহ জানায়।
খাজা আসিফ সিনেটকে বলেন, ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ হিসেবে তিনি গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে তার নির্ধারিত সফর স্থগিত করেন। পাশাপাশি দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলসহ দুই মার্কিন কর্মকর্তার আসন্ন ইসলামাবাদ সফর স্থগিত করা হয়।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২১ আগস্ট আফগান কৌশল বিষয়ক বক্তৃতায় সন্ত্রাসীদের পাকিস্তানে নিরাপদ আশ্রয় দেয়ার জন্য ইসলামাবাদের সমালোচনা করেন এবং যুক্তরাষ্ট্র আর তা মেনে নেবে না বলে হুঁশিয়ার করে দেন।
পাকিস্তানের জন্য এটা এক ব্যতিক্রমধর্মী পদক্ষেপ। যে দেশটি তার স্বাধীনতা লাভের সময় থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম ঘনিষ্ঠ মিত্র , সে দেশের পক্ষ থেকে এ পদক্ষেপ গ্রহণকে দেশটির পররাষ্ট্র নীতিতে পরিবর্তন এবং ১৯৪৭ সালের পর নয়া দিল্লীর সাথে সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠা ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ-বেইজিং-মস্কো অক্ষের আত্মপ্রকাশের আভাস হিসেবে দেখা হচ্ছে। একুশ শতকে ইউরেশিয়ার এই কৌশল রেখা হচ্ছে ঠান্ডা লড়াই অথবা আরো সুনির্দিষ্ট করে বললে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ যুদ্ধের সময়ে যে পরিস্থিতি ছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীত।
ট্রাম্পের আফগানিস্তান নীতি কি ব্যর্থ হতে যাচ্ছে?
পাকিস্তানের শক্ত অবস্থানের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই ট্রাম্পের আফগান পরিকল্পনা অকার্যকর হতে দেখছে। এ বছরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ট্রাম্প নির্বাচনকালে আফগানিস্তান বিষয়ে দেয়া তার প্রতিশ্রæতি থেকে সম্প্রতি সম্পূর্ণরূপে পিছু হটেছেন। তিনি তখন বলেছিলেন, আফগানিস্তানে ২০০১ সাল থেকে মার্কিন সৈন্যরা যুদ্ধে নিয়োজিত রয়েছে এবং অদূর ভবিষ্যতে এ সমস্যার সমাধান হবে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে বেরিয়ে আসবে।
ট্রাম্প তার ২১ আগস্টের বক্তৃতায় পাকিস্তানের সমালোচনা করে আফগান সমস্যাকে অধিকতর বিশ^ সমস্যায় পরিণত করেন ও ভারতকে সেখানে বৃহত্তর ভূমিকা পালনের আহবান জানান। তিনি বলেন, তা চীনের বিরুদ্ধেও একটি পাল্টা পদক্ষেপ হবে।
এদিকে বেইজিং ও মস্কো একসাথে ইসলামাবাদের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে । এতে প্রমাণিত হয় যে আফগানিস্তান মঞ্চকে বহু পাখি মারার পাথর হিসেবে ব্যবহারের ট্রাম্পের পরিকল্পনায় চিড় ধরেছে। ভয়কম্পিত হওয়ার পরিবর্তে মার্কিন চাপের পাল্টা জবাব হিসেবে এ মুহূর্তে নেতৃত্বহীন পাকিস্তান খোলাখুলিভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বৈঠক ও সফর বিনিময় স্থগিত করেছে।
পাকিস্তানের পাল্টা জবাব দেয়া ছাড়া আর পথ নেই
পাকিস্তানের জন্য আফগানিস্তানে ভারতের আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালনের ধারণা মেনে নেয়া অগ্রহণযোগ্য। এটা তাকে আরো দু’টি বৈরী ফ্রন্টে লড়াই করতে বাধ্য করবে। পাকিস্তান আফগানিস্তানের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার সুযোগ নষ্ট করেছে এবং ভারতকে সে সুবিধা নেয়ার সুযোগ দিয়েছে। এখন আফগানিস্তানে ভারতের ভূমিকা দৃঢ় করার মার্কিন ইচ্ছার প্রেক্ষিতে কোণঠাসা ইসলামাবাদের চীন ও রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য প্রতিদ্ব›দ্বীর সমর্থনে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়া ছাড়া আর কোনো পথ নেই।
সব গুরুত্বপূর্ণ শক্তিই আফগান সমস্যার কোনো সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। এ অঞ্চল ক্রমেই বড় রকমের মাথাব্যথায় পরিণত হয়েছে এবং সেখানকার গোলমেলে পরিস্থিতিকে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করার চেষ্টারত আরো অনেকগুলো শক্তির কারণে যথেষ্ট হুমকি সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তানকে সরিয়ে দিয়ে ও আফগানিস্তানে ভারতকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ট্রাম্প পরোক্ষ ভাবে অন্যান্য বৃহৎ শক্তিকে যুদ্ধবিধ¦স্ত দেশটির সাথে সম্পৃক্ত করছেন যার ফলে আগামী দিনগুলোতে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যেতে পারে।
আসলে ট্রাম্প আফগানিস্তানে আমেরিকার পরাজয়কেই শুধু নিশ্চিত করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্কে উত্তেজনা
পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডন-এর খবরে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়া নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন নীতি ঘোষণার পর পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ বলেন, এ নীতিতে আফগানিস্তানে অস্থিতিশীলতার পেছনে ভারতের সামরিক ভূমিকার বিষয় বিবেচনায় নেয়া হয়নি। তিনি আরও বলেন, তাঁর দেশ বিশৃঙ্খলার এজেন্টদের আশ্রয় নয়; বরং আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
খাজা আসিফ দাবি করেন, পাকিস্তানকে অস্থিতিশীল করতে ইসলামাবাদ ভারতকে আফগানিস্তানের মাটি ব্যবহার করতে দেবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।