Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফুলে ফুলে ঢেকে গেল জাতীয় কবি নজরুলের মাজার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০১৭, ৪:২৯ পিএম

তিনি বিদ্রোহী, তিনিই গানের পাখি বুলবুল—জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আজ রোববার অগণিত অনুরাগী শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার ফুলে ফুলে ঢেকে দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির মাজার।
আজ ১২ ভাদ্র বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের এই দিনে তিনি ঢাকায় তদানীন্তন পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
রোববার দিনের শুরুতেই কবির মাজারে কবি পরিবারের সদস্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যে দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সকাল সাতটায় কবি পরিবারের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান কবির নাতনি খিলখিল কাজী, তাঁর ভাই বাবুল কাজীর স্ত্রী লুনা কাজী ও তাঁর মেয়ে আবাছা কাজী। পরে তাঁরা কবির আত্মার শান্তি কামনায় মোনাজাত করেন। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে খিলখিল কাজী বলেন, ‘সর্বস্তরের মানুষের কাছে কাজী নজরুলকে পৌঁছে দিতে পারিনি আমরা। এই পৌঁছে দিতে না পারার জন্য আমরাই দায়ী। কারণ, আমরা কবিকে নিয়ে সেভাবে চর্চা করছি না। কাজী নজরুল ছিলেন সবার কবি, মানুষের কবি। গ্রাম থেকে শহরে, সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নজরুল পড়াতে হবে, তার জীবনদর্শন জানাতে হবে।’ এই সময়ে বিশ্বে যেখানে ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে, মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, তখন নজরুল দর্শনের চর্চা খুবই জরুরি বলে মন্তব্য করেন খিলখিল কাজী।
পরে উপাচার্য আ আ ম স আরোফিন সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের নেতৃত্বে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমী, নজরুল ইন্সটিটিউট, শিল্পকলা একাডেমী ছাড়াও আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের পক্ষে এবং ব্যক্তিগতভাবে কবির অনুরাগীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষে কবির সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দলের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরবিএনপির পক্ষে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ফুলেল শ্রদ্ধা জানান কবির সমাধিতে। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে এক সংক্ষিপ্ত সভায় কবির জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজী নজরুলের সাহিত্যকর্ম ই-বুকে পরিণত করতে হবে। এটা একটা বড় কাজ। সে সঙ্গে সমস্ত গানের আদি রেকর্ড ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিতে হবে। সে সঙ্গে নজরুল রচনাবলী বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করতে হবে। একুশ শতকে নজরুলকে শুধু আমাদের মাতৃভাষায় বন্দী রাখলে হবে না; বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে হবে।’ নজরুলের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসে বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ফেরদৌস আরা বলেন, নজরুলের গানের চর্চার পাশাপাশি তার অসাম্প্রদায়িক চেতনাকেও ছড়িয়ে দিতে হবে।

কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, টেলিভিশন ও বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল কবির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ