পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই্ সরকারের দায়িত্ব, আমরা তা’ পালন করেছি। সব সময় আওয়ামী লীগ দুর্গত মানুষের পাশে ছিল আছে থাকবে। আগামী ২০৪১ সালে বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তিনি বলেন, নদী মার্তৃক বাংলাদেশে নৌকার প্রয়োজন সব সময় ছিল, আছে থাকবে, নৌকা ছাড়া গতি নাই, তাই উন্নয়নের ধারাবাহিকতার প্রয়োজনেই আগামী নির্বাচনেও নৌকায় ভোট দিতে হবে।
তিনি গতকাল শনিবার বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় স্থানীয় ডিগ্রী কলেজ ময়দানে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। ত্রাণ বিতরণের জন্য সমাবেশটি আয়োজন করা হলেও বিপুল লোক সমাগমের কারণে সেটি একটি বিশাল জনসভায় রুপ নেয়। সমাবেশে শেখ হাসিনা বলেন, ৮১ তে দেশে ফেরার পর থেকেই যখন ক্ষমতায় ছিলামনা তখন থেকেই দেশের সব দুর্যোগেই সব সময় মানুষের পাশে দাঁিড়য়েছি। ৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে দেখি ভান্ডার শুন্য। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পরও একই অবস্থা। আমাদের দক্ষ পরিচালনায় ইতোমধ্যেই বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেলের স্বীকৃতি পেয়েছে। বিদ্যুতের উৎপাদন ১৫ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করেছি। এবারের বন্যার শুরু থেকেই ত্রাণ ও দুর্যোগ মন্ত্রনালয় ২৪ ঘন্টার জন্য খোলা রেখেছি, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও সেল খোলা হয়েছে। চালের সংকট যাতে না হয় সেজন্য এলসি মার্জিন ২৮ শতাংশ থেকে ২ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। প্রয়োজন মেটাতে সরকারিভাবে ১৫ লক্ষ মেঃটন চাল আমদানীর ব্যবস্থা হয়েছে। আগামী ৩ মাসের জন্য ৫০ লাখ দরিদ্র মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজিতে চাল বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেখানে একজন সর্বোচ্চ ৩০ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন।
তিনি বলেন, বন্যায় যাদের বাড়ী নষ্ট হয়েছে তাদের ঘর করে দেব। স্কুল নষ্ট হয়েছে সেসব স্কুল করে দেব। রাস্তা করে দেব। যেসব শিক্ষার্থীদের বই খাতা নষ্ট হয়েছে তাদের বই খাতা দেব। ত্রানের কোন সমস্যা হবে না। ত্রাণ পৌঁছে যাবে আপনাদের ঘরে। বন্যার পর যাতে কৃষকরা গম, ডালসহ সব ধরণের শস্য চাষাবাদ করতে পারে সেজন্য ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের বিশেষ প্রনোদনা দেয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নদী ভাঙন থেকে গোটা দেশ রক্ষায় প্রকল্প হাতে নিয়েছি। আপনারা আমাদের সহযোগিতা করেন। প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ২০০৮ ও ২০১৪ সালে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে বিজয়ী করেছেন। নৌকা ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়ন হয়। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নাই। বাবা জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন, দুঃখী মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য তিনি জীবন দিয়েছেন। সেই দুঃখি মানুষের মুখে হাসি ফুটানোই আমার লক্ষ্য। আমার মা বাবা ভাই বোন সবাইকে হারিয়েছি। তাই আপনাদের মাঝেই তাদেরকে খুঁজে পাই। মানুষকে কিভাবে শান্তিতে রাখবো সেটাই আমার লক্ষ্য। আমরা চাইনা একটি সন্তানও বিপথগামী হয়ে যাক। যুব সমাজ বা ছেলেমেয়েরা জঙ্গিবাদে না জড়িয়ে যায় মাদকাসক্ত না হয় সে দিকে অভিভাব দের খেয়াল রাখতে হবে। ইমাম, মোয়াজ্ঝিন ও সমাজের লিডারদের সব সময় সজাগ থাকতে হবে যেন জঙ্গীবাদের বিস্তার না ঘটে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বেগম সাহাদারা মান্নানের সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনুর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন মায়া, খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রিয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ও পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল মান্নান, বগুড়া -২ আসনের জাপা সংসদ সদস্য শরিফুল ইসলাম জিন্না, বগুড়া - ৪ আসনের জাসদ দলীয় সংসদ সদস্য রেজাউল করিম তানসেন, বগুড়া - (৫) আসনের আ’লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব হাবিবর রহমান, বগুড়া - (৬) আসনের জাপা দলীয় সংসদ সদস্য নুরুল ইসলাম ওমর, বগুড়া (৭) আসনের জাপা দলীয় সংসদ সদস্য এ্যাড, আলতাব আলী, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মমতাজ উদ্দিনসহ জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। সমাবেশ শেষে সেখানেই বগুড়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকীর পরিচালনায় বন্যার্তদের মধ্যে ত্রাণ ও ক্ষতিগ্রস্থ আমন চাষীদের মধ্যে আমনের চারা বিতরণ করেণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে তিনি স্থানীয় সূধিবৃন্দ, জন প্রতিনিধি ও প্রশাসন কর্মকর্তাদের সাথে মত বিনিময় করে হেলিকপ্টার যোগে ঢাকায় ফিরে যান।
এর আগে সকালে গাইবান্ধা গোবিন্দ উপজেলা পরিষদ চত্ত¡রে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ ও কৃষকদের মাঝে আমন ধানের চারা বিতরণকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন বন্যায় ক্ষয়ক্ষতির শিকার প্রত্যেক মানুষকে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করে, কৃষি পূনর্বাসনে বিনামূল্যে বীজ ও চারা দেওয়া হবে। ক্ষতিগ্রস্ত লোকজনের ঘরবাড়ি নির্মাণে সহায়তা করা হবে। বন্যা কবলিত এলাকায় কোন ধরণের ব্যাংক ঋণের সুদ আদায় করা হবে না। কৃষির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিনাজামানতে সুদমুক্ত ঋণ, আমন ধানের চারা বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষিক্ষেত্রে ৫৮ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা বিতরণ করা করা হবে। তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বন্যার আগাম খবর সরকার জেনেছে। একারনে সরকারের পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের ফলে কোন মানুষ অনাহারে থাকেনি। খাদ্যের অভাব যাতে না হয়, এ জন্য আগেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। একটি মানুষও যেন না খেয়ে কষ্ট না পায় সেটাই সরকারের লক্ষ্য। শেখ হাসিনা বলেন, আপনাদের সেবা করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। সরকারে থাকি আর বিরোধী দলে থাকি মানুষের বিপদে সব সময় আওয়ামী লীগ পাশে দাঁড়িয়েছে। বন্যায় যেসব স্কুল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সেগুলো মেরামত করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। যেসব শিক্ষার্থীদের বইখাতা নষ্ট হয়েছে, তাঁদের আবার নতুন বইখাতা বিতরণ করা হবে বলে তিনি জানান। বর্তমান সরকার সব ধরণের বিপদে মানুষজনের পাশে আছে এবং থাকবে। কিন্তু বিএনপি নেতা খালেদা জিয়া বন্যার্তদের পাশে না দাড়িয়ে আয়েশি জীবনযাপন করছেন।
গাইবান্ধা-০৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, পানি সম্পদ মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক,খালেদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, হুইপ মাহবুব আরা বেগম গিনি এমপি, সংসদ সদস্য ডা, ইউনুস আলী সরকার, সংসদ সদস্য গোলাম মোস্তফাম উম্মে কুলসুম স্মৃতি, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. শামসুল আলম হিরু, সাধারণ সম্পাদক আবু ব্ক্কর সিদ্দিকসহ আ.লীগ নেতৃবৃন্দ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।