ইভিএম-এ ভোট কেন?
আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম-এ ১৫০ আসনে ভোট গ্রহণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। কাকতালীয় কিনা জানি না, ১৫০ সংখ্যাটা আমাদের এর আগে চিনিয়েছিলেন রকিবুল
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে হাইকোর্টের দেয়া রায় সুপ্রিম কোর্টে বহাল রাখা এবং তার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর রাজনৈতিক অঙ্গনে যে ধরনের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত দেশকে কোথায় নিয়ে দাঁড় করায়- এ ভাবনা সচেতন ব্যক্তিদের উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। বিশেষ করে ক্ষমতাসীন দলের নেতা এবং সরকারের মন্ত্রীরা যেভাবে প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে বিষোদগার করে চলেছেন, তাতে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে বলে মনে করছে অভিজ্ঞমহল।
রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগের সাতজন বিচারপতিই এক মত হয়ে স্বাক্ষর করেছেন। কিন্তু শাসক দলের আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন শুধু প্রধান বিচারপতি। তাদের কথাবার্তা শুনে মনে হয়, তারা প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তাদের কথাবার্তা সব ধরনের শিষ্টাচার লঙ্ঘন করেছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে- এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশিষ্টজনেরা। এর সাথে দ্বিমত প্রকাশের অবকাশ নেই এ জন্য যে, একই কথা যদি বিরোধী দলের কোনো নেতাকর্মী বা সাধারণ নাগরিক বলতেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে এতদিনে আদালত অবমাননার মামলা হয়ে যেত। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের নেতারা অবলীলায় সেসব কথা বললেও তাদের বিরুদ্ধে আদালত এখনও কোনো পদক্ষেপ নেন নি। এটা সম্ভবত আদালতের ধৈর্য ধারণের বহিঃপ্রকাশ; যে কথা স্বয়ং প্রধান বিচারপতিও বলেছেন।
অনেকেই বলছেন যে, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়কে নিয়ে সরকার বিচার বিভাগের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। সরকারের মন্ত্রীরা এবং সরকার দলের নেতারা অত্যন্ত আপত্তিকর ভাষায় প্রধান বিচারপতিকে আক্রমণ করে কথা বলছেন, যা অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্খিত। তারা প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার পদত্যাগ দাবি করছেন এবং পদত্যাগ না করলে তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকিও দিচ্ছেন। কেউ কেউ আদালতের দরজায় লাথি মারার ঘটনার কথাও স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন প্রধান বিচারপতিকে। তাদের এসব অশোভন কথাবার্তা দেশজুড়ে সমালোচনার ঢেউ তুললেও তারা নির্বিকার।
লক্ষণটি কারো কাছেই ভালো মনে হচ্ছে না। সরকার এবং বিচার বিভাগের এ দ্ব›দ্ব কোথায় গিয়ে শেষ হবে তা ভেবে কূল পাচ্ছেন না কেউ। এ ক্ষেত্রে সরকারের অসহনশীল মনোভাব এবং আদালতের প্রতি অশ্রদ্ধার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছেন সচেতন মানুষ। তারা বলছেন যে, রায় বা পর্যবেক্ষণ পছন্দ না হলে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো এবং প্রতিকার চাওয়ার দরজা সরকারের সামনে খোলাই ছিল। তারা রিভিউ আবেদনেই তাদের সব ক্ষোভের কথা তুলে ধরতে পারতেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তারা সে পথে যাবেন বলে জানিয়েছেন স্বয়ং আইনমন্ত্রী। কিন্তু তা সত্তে¡ও শাসক দলের নেতাদের প্রধান বিচারপতিকে লক্ষ্য করে বাক্যবাণ নিক্ষেপ বন্ধ হয়নি। আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দেয়ার পরও একই বিষয়কে নিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দেয়া কতটুকু সুবিবেচনাপ্রসূত তা ভেবে দেখা দরকার।
বিএনপি শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছিল যে, রায় পরিবর্তনের জন্য সরকার প্রধান বিচারপতির ওপর চাপ দিচ্ছে। যদিও সরকার তা অস্বীকার করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে সরকার দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের বক্তব্য ও কর্মকান্ডে বিষয়টি আর চাপা থাকেনি। নিয়ম কানুনের ধার না ধেরে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে গমন এবং রায় নিয়ে আলোচনা চাপের বিষয়টিকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলেছে। কেননা, কোনো বিচারাধীন বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিচারপতির সাথে আলোচনা করা রীতিবিরুদ্ধ কাজ বলেই সবাই মনে করেন। অবশ্য ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, রায়ের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে তাদের দলের অবস্থান জানাতেই তিনি প্রধান বিচারপতির বাসায় গিয়েছিলেন।
প্রশ্ন হলো, রায়ের বিষয়ে দলের মনোভাব বা অবস্থান জানাতে তাকে প্রধান বিচারপতির বাসায় গিয়ে রাতের আহার গ্রহণ করতে হবে কেন? রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ পিটিশন করলেই তো প্রধান বিচারপতি এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ তথা সরকারের অবস্থান জানতে পারতেন। তাছাড়া ওবায়দুল কাদের তখন বলেছিলেন যে, রায়ের বিষয়ে প্রধান বিচারপতির সাথে তার আলোচনা হয়েছে এবং আরো আলোচনা হবে। যেহেতু মামলাটি এখনও বিচারধীন (কারণ সরকার রিভিউ করবে) বলে ধরে নেয়া যায়, সেহেতু তা নিয়ে বিচারকের সাথে আলোচনা করা নৈতিকতার মধ্যে পড়ে কীনা সে প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। পরবতীতে দুইজন মন্ত্রী ও এটর্নী জেনারেলকে নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ জনমনে এ ধারণার জন্ম দিয়েছে যে, সরকার বিষয়টি আইনীভাবে মোকাবিলার চেয়ে আলোচনায় সমাধানেই বেশি আগ্রহী। অনেকে মনে করেন যে, সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পরই তারা প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তীব্র ভাষায় আক্রমণ শুরু করেছেন।
সরকার দলীয় নেতাদের তীব্র বাক্যবাণে জর্জরিত প্রধান বিচারপতি প্রথমদিকে তেমন মুখ খোলেননি। রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন দল ও বিএনপির বাকযুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে বলেছিলেন, ‘ কারো ট্র্যাপেই পড়বো না।’ ১০ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীনসহ বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে আইন কমিশন চেয়ারম্যানের মন্তব্যের প্রতি আপিল বিভাগের তিন সদস্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে প্রধান বিচারপতি ওই মন্তব্য করেছিলেন। ওই সময় তিনি রায় নিয়ে রাজনীতি না করার আহŸান জানিয়েছিলেন সবার প্রতি। এরপর ১৫ আগষ্ট সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘রায় নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো কথা বলব না। যা বলার কোর্টেই বলব’।
এরপর কোর্টে বলা তার কথাই একেবারে আগুন জ্বেলে দিয়েছে। প্রধান বিচারপতি গত ২০ আগষ্ট নি¤œ আদালতের বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা ও আচরণবিধির গেজেট প্রকাশের শুনানিকালে এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আপনারা মিডিয়ায় একটা বলেন, কোর্টে আরেকটা বলেন। ঝড় তো আপনারাই তুলেছেন। আমরা বিচার বিভাগ যথেষ্ট ধৈর্য ধরছি। আমরা যথেষ্ট ধৈর্যের পরিচয় দিচ্ছি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে সুপ্রিম কোর্ট ইয়ে (অযোগ্য ঘোষণা) করেছে। সেখানে আলোচনা-সমালোচনা হয়নি। আমাদের আরো পরিপক্বতার পরিচয় দিতে হবে।’ প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্য মিডিয়ায় আসার পর আগুনে যেন ঘি পড়েছে। সরকার দলের নেতারা বলছেন যে, প্রধান বিচারপতি প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দিয়েছেন, পাকিস্তানের সাথে বাংলাদেশের তুলনা করে আমাদের স্বাধীনতাকে অমর্যাদা করেছেন। তবে, অনেকেই মনে করেন যে, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রধান বিচারপতির বক্তব্যের মর্মার্থ সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পারেননি।
এটাতো সত্যি যে, আওয়ামী লীগ নেতারা যেভাবে যে ভাষায় প্রধান বিচারপতি তথা বিচার বিভাগকে আক্রমণ করে চলেছেন, তাতে ইচ্ছে করলে আদালত যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারতো। কারো কারো বক্তব্য তো আদালত অবমাননার পর্যায়ে পড়ে। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট নীরবেই তা হজম করে চলেছে। সম্ভবত তিক্ততা যাতে আর না বাড়ে সে জন্যই আদালতের এ চোখ কান বুজে থাকা। আর পাকিস্তানের উদাহরণ টেনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দেয়ার তত্ত¡ও সঠিক নয়। প্রধান বিচারপতি পাকিস্তানের উদাহরণ হয়তো এ জন্যই তুলে ধরেছেন যে, পাকিস্তানের মতো একটি অসহিষ্ণুতার দেশেও সুপ্রিম কোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলেনি। আমরা তো ওদের চেয়ে অনেক বেশি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সুশৃঙ্খল। আমরা কেন আদালতের আদেশ নিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম করব?
কিন্তু সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক হলো স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী প্রধান বিচারপতি বক্তব্যের প্রকাশ্য সমালোচনা করেছেন। রাষ্ট্রের তিন স্তম্ভের অন্যতম একটি হলো নির্বাহী বিভাগ। সে বিভাগের প্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। তো তিনি যখন রাষ্ট্রের অপর স্তম্ভ বিচার বিভাগের প্রধানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরাসরি মন্তব্য করেন, তখন সচেতন মানুষেরা বিচলিত না হয়ে পারে না। গত ২১ আগস্ট দলের এক আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘উচ্চ আদালত থেকে নানা ধরনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট যাকে নিয়োগ দিলেন, তিনিই তার ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাচ্ছেন। তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করা ও পক্ষ নেয়া প্রধান বিচারপতির কাজ নয়। প্রধান বিচারপতি তার পর্যবেক্ষণে সংসদ সদস্যদের নিয়ে যে বৈধতা ও অবৈধতার প্রশ্ন এনেছেন এ ধরনের প্রশ্ন আসতে পারে না। কথাগুলো পর্যবেক্ষণে লেখার আগে এ পদ থেকে ওনার সরে যাওয়া উচিত ছিল।’ এছাড়া প্রধানমন্ত্রী এও বলেছেন যে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তুলনা করে তাকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। তিনি জনগণের কাছে এর বিচার চান বলেও তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন। (সূত্র: দৈনিক ইনকিলাব, ২২ আগস্ট ২০১৭)। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরে আর এ কথা বলা যাবে না যে, দেশের নির্বাহী বিভাগ তথা সরকার ও বিচার বিভাগ মুখোমুখি দাঁড়ায়নি। কথার অনুমোদনই যেন ধ্বনিত হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। দেশবাসী আশা করেছিল, আদালত সংক্রান্ত এ বিষয়ে হয়তো প্রধানমন্ত্রী জড়াবেন না। তিনি হয়তো আইনী লড়াইয়ের নির্দেশ দানের মধ্যেই তার ভূমিকাকে সীমিত রাখবেন। সেটা হলে তার নিজের ভাবমর্যাদা যেমন রক্ষা পেত, তেমনি আমাদের রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভবিষ্যত নিয়েও অতটা উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু থাকত না।
বস্তুত, ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় নিয়ে ক্ষমতাসীন মহল যে ধরনের কথাবার্তা বলছে, তাতে এ কথা বলা বোধকরি অমূলক হবে না যে, তারা বোধ হয় কোনো কারণে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। নাহলে আইনীভাবে মোকাবিলার পথ খোলা থাকতে কেন সেটাকে রাজনীতির ময়দানে নিয়ে গেলেন? এ প্রসঙ্গে সাবেক প্রধান বিচারপতি মাহমুদুল আমীন চৌধুরীর মন্তব্য প্রণিধানযোগ্য। সম্প্রতি একটি দৈনিককে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, ‘এটা নিয়ে সবাই খামাখা তোলপাড় করছেন। রায় শুদ্ধ হতে পারে, না-ও হতে পারে। রায় সম্পর্কে আমার দ্বিমত থাকতে পারে। শোধরানোর প্রতিষ্ঠিত তরিকা আছে। আইন আছে। এটা নিয়ে রাজনীতি করা মোটেই উচিত হয়নি বা হচ্ছে না। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি রাজনীতি করছে। মন্ত্রীদেরও কেউ কেউ করছেন। অথচ তারা অবহিত আছেন যে, সংবিধানই সুপ্রিম কোর্টকে সংসদের পাস করা কোনো বিল অসাংবিধানিক ঘোষণা করার এখতিয়ার দিয়েছে। তারা সংবিধানপ্রদত্ত ক্ষমতাবলেই ষোড়শ সংশোধনীকে বাতিল ঘোষণা করেছেন।’ (প্রথম আলো, ১২ আগস্ট ২০১৭)।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, আইনীভাবে মোকাবিলার রাস্তা থাকা সত্তে¡ও আওয়ামী লীগ ও সরকার সুপ্রিম কোর্টের রায়কে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার পথ বেছে নিয়েছে। তারা কোন বিবেচনায় এমন একটি ভ্রান্তপথ অনুসরণ করছে অনেকেরই তা বোধগম্য হচ্ছে না। তবে, সরকার ও বিচার বিভাগের এ বৈরীতা দেশকে কোন অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায় তা ভেবে অনেকেই শঙ্কিত। ইতোমধ্যে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রাষ্ট্রের দুই বিভাগের মধ্যে সৃষ্ট তিক্ততার কারণে আবারো সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টির আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বি. চৌধুরী বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের ভেতর সরকার ও জাতীয় সংসদ জোট বেঁধে তৃতীয় অঙ্গ বিচার বিভাগের বিরুদ্ধে যে লড়াই করছে, তা ভালো লক্ষণ নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি ভবিষ্যতে কোনো অবৈধ অসাংবিধানিক সরকার আসার প্রেক্ষাপট রচনা করতে পারে। এই বিরোধের সুযোগে যদি কোনো অসাংবিধানিক সরকার গঠনের প্রচেষ্টা হয়, তার জন্য কে দায়ী হবে?’ (দৈনিক ইনকিলাব, ১৮ আগস্ট ২০১৭)।
ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই যেমন ভয় পায়, তেমনি বাংলাদেশের মানুষও এ ধরনের রাজনৈতিক জটিলতা দেখলেই প্রমাদ গোণে। অতীত ইতিহাসই তাদের এ ভীতির কারণ। অতীতে যতবার এ ধরনের রাজনৈতিক জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে, ততবারই তার সমাপ্তি ঘটেছে কোনো না কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনার মধ্য দিয়ে। সুতরাং আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের উচিত অগ্র-পশ্চাৎ বিবেচনা করে কথা বলা, কাজ করা।
লেখক: সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।