পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মিজানুর রহমান তোতা : দেশে কোরবানির পশু সঙ্কট নেই ন্যুনতম। তবুও শেষ সময়ে ভারতীয় গরুর চালান ঢুকছেই। সীমান্তের গরু করিডোরগুলোতে (যা খাটাল হিসেবে পরিচিত) চলছে টাকার খেলা। ওই খাঁটাল পার হওয়া মাত্র নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ঘাট মালিক, ক্ষমতাসীন দলের রাঘব বোয়ালদের নিযুক্ত প্রতিনিধি, মাস্তান, গরু ব্যবসায়ীদের হাতে। তারা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে গরুপ্রতি টোল আদায় করে থাকে। খাটালে গরু হাতবদল হয় টাকার বিনিময়ে। অথচ করিডোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাষ্টমস সরকারী আদায় করতে পারছে না। সীমান্ত সুত্র বলেছে, যত গরু ঢোকে তার সর্বোচ্চ ৩০ ভাগ গরু থেকে রাজস্ব আদায় হয়। বাকি গরু খাটালের নিয়ন্ত্রণকারীরা করিডোর এড়িয়ে বাইপাস রুটে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে পাঠিয়ে থাকে। ভারতীয় গরু ব্যবসা নিয়ে একটি শক্তিশালী গড়ে উঠেছে। সীমান্ত সুত্র জানায়, কাথুলী, গুড়দহ, ভৈরবা, কার্পাসডাঙ্গা, নাভারণ, কুসুমপুর ও মহিষাকুন্ডুসহ দক্ষিণ-পশ্চিমসহ দেশের বিভিন্ন গরু করিডোর দিয়ে এবার হঠাৎ কয়েকদিন ব্যাপকহারে গরু ঢুকেছে।
প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তর সুত্র জানায়, দেশে মোট ২কোটি ৩৭লাখ ৭৮হাজার গরু, ২কোটি ৫৮লাখ ৪৫হাজার ছাগল ও ১৪লাখ ৫৬হাজার মহিষ রয়েছে। কোরবানির পশুর কোনরূপ সঙ্কট হবে না। তারপরেও কেন ভারতীয় গরু ঢকতে ন্যুনতম বাধা দেওয়া হচ্ছে না বুঝি না। সুত্র জানায়, কোরবানির জন্য দেশী পশু রয়েছে ১ কোটি ১৫লাখ গরু, ছাগল। যশোর ও খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের হিসাব দিয়ে প্রাণী সম্পদ অফিসার ভবতোষ কান্তি সরকার জানান, এ অঞ্চলে ১লাখ ২০ হাজার ৬শ’ খামারীর হাতে রয়েছে ৫লাখ ৫৮হাজার হাজার গরু ও ছাগল। প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের মাঠপর্যায় থেকে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগে লিখিতভাবে ভারতীয় গরু ঢোকা বন্ধ রাখার ব্যাপারে কয়েকদফা জানানো হয়েছে। তারপরেও ভারতীয় গরু ঢুকছে। তবে তিনি দাবি করেন, অন্যান্যবারের তুলনায় গরু করিডোর দিয়ে কম গরু ঢুকছে।
কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রমেই পশুর আমদানী বাড়ছে। পশু হাটের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে জোরদার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলায় জেলায় আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও হাটে বিশৃঙ্খলার আশংকা কাটছে না। কয়েকজন গরু ব্যবসায়ী জানালেন, কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে হাটে নানা ধরণের ঝামেলা সৃষ্টি হয়। গরু ও ছাগল নিয়ে চলে টানাটানি। কয়েকদিন পরই হাট জমজমাট হলে নানা ধরণের সমস্যা সৃষ্টি হবার আশঙ্কা রয়েছে। যশোর উপশহর, নওযাপাড়া, রাজারহাট, বারীনগর, চৌগাছা, মনিরামপুর খুলনার ফুলতলা, সাতক্ষীরার কলারোয়া, ঝিনাইদহের বারোবাজার, কালীগঞ্জ, মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, খালিসপুর, হাটগোপালপুর, ভাটই, গাড়াগঞ্জ, শেখপাড়া ও চুয়াডাঙ্গার জীবননগরসহ বিভিন্ন কোরবানীর পশু হাটে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাট ধীরে ধীরে জমজমাট হবে। কোরবানির শেষ এক সপ্তাহ জুড়ে জমজমাট হবে। গরু ও ছাগল পালনকারী ব্যক্তি ও পরিবারের সংখ্যা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে প্রায় ৫লাখ। এর বাইরে ভেড়া ও মহিষ পালনকারী কৃষক রয়েছে অসংখ্য। ভারত থেকে গরু আসার কারণে তাদের সর্বনাশ ঘটবে। কোরবানী উপলক্ষে গো-খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি সত্বেও কষ্ট করে ছোট বড় খামারীরা গরু ও ছাগল উৎপাদন করেছে। এখন তাদের মাথায় হাত উঠেছে। এতে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তারা গরু ও ছাগল পালনে নিরুৎসাহিত হয়ে পড়বে। খামারীদের কথা, ভারতীয় গরু ঢোকা কিছুদিন বন্ধ থাকায় দেশে গরু ও ছাগল উৎপাদন বেড়ে যায় বহুগুণে। সীমান্ত ঘাট এবং খাটাল মালিকরা যোগসাজসে কোরবানীকে সামনে রেখে গরু ঢোকানোর ব্যবস্থা করেছে।
সুত্রমতে, ভারতীয় গরু ঢুকলে দাম কমবে ভেবে কোন কোন মহল খুশীতে গদগদ হচ্ছে। আসলে ভারত বিশেষ স্বার্থে গরু ঢুকিয়ে দেশীয় খামারীদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যাতে গরু ও ছাগল পালনে অনাগ্রহী হয়। ভবিষ্যতে যাতে ভারতীয় গরুর উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল হয় বাংলাদেশ। যশোর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়ার কয়েকজন খামার মালিক জানালেন, আমরা কিছুদিন আগে শুনে খুশী হয়েছিলাম যে ভারত থেকে গরু ঢোকা বন্ধ হয়ে গেছে। জোর দিয়েছিলাম গরু ও ছাগল পালনে। কোরবানী উপলক্ষে হাটে শুধু দেশী গরু থাকবে, দুটো ভালো পয়সা পাবো, কিন্তু গরু ঢুকছে জেনে মনোকষ্ট বেড়ে গেছে। আমাদের সর্বনাশ ঘটবে। অনেক পরিবার মার খাবে। তাদের কথা জরুরিভাবে গরু করিডোরগুলো বন্ধের ঘোষণা দেয়া উচিত। গরু করিডোর দিয়ে ভারতীয় গরু আসার কারণে ঘাট মালিক, খাটাল মালিক ও সিন্ডিকেট চক্র এবং অবৈধ আয়কারী প্রভাবশালীরা লাভবান হয়ে থাকে। সরকার নামকাওয়াস্তে রাজস্ব পায়। তা ছাড়া কারো কোন লাভ হয় না ক্ষতি ছাড়া।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।