পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রতি বছর ঈদুল আজহার প্রাক্কালে যে পশু যবেহ করা হয়, এর পেছনে রয়েছে এক দীর্ঘ মর্মান্তিক ইতিহাস। সে ইতিহাস নবীকূল মধ্যমনি হযরত ইব্রাহীম (আ:) এবং তাঁর প্রাণাধিক পুত্র ইসমাঈল (আ:) কে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে। মহান আল্লাহপাক হযরত ইব্রাহীম (আ:) কে নির্দেশ দিলেন, প্রিয়তম পুত্র ইসমাঈল (আ:) কে কুরবানী করতে। হযরত ইব্রাহীম (আ:) পুত্রকে এই নির্দেশের কথা বললে, হযরত ইসমাঈল (আ:) বললেন : ‘হে পিতা! আপনি নির্দেশ প্রতিপালনে অগ্রসর হোন, আমাকে আল্লাহর ইচ্ছায় ধৈর্যশীলদের অন্তভুক্ত পাবেন।’ (সূরা সাফফাত : আয়াত ১০২)।
এরপর হযরত ইব্রাহীম (আ:) এ ব্যাপারে মনস্থির করলেন এবং পুত্রকে যবেহ, করতে প্রস্তুত হলেন। ‘যখন উভয়ই আল্লাহর নির্দেশ পালনে প্রস্তুত হলেন এবং পিতা পুত্রকে কাত করিয়ে শোইয়ে দিলেন, তখন আমি (আল্লাহ) তাঁকে ডাক দিলাম : হে ইব্রাহীম! তুমি নির্দেশ বাস্তবায়নে সততার প্রমাণ দিয়েছ। একান্তভাবে আল্লাহর সন্তোষ্টির উদ্দেশ্যে নিবেদিত প্রাণ লোকদেরকে এমনিভাবেই আমি প্রতিফল দিয়ে থাকি। নি:সন্দেহে ইহা সুস্পষ্ট পরীক্ষা মাত্র। আর পুত্র যবেহের বিনিময়ে তাঁকে এক যবেহকরা মোটা তাজা পশু উপহার দিলাম”। (সূরা আস্সাফফাত ; আয়াত ১০৩-১০৭)।
মোট কথা, হযরত ইব্রাহীম (আ:)-এর আদর্শের বাস্তব অনুসরণের প্রমাণ পেশ করার উদ্দেশ্যেই প্রতি বছর ঈদুল আজহার সময়ে পশু কুরবানী করার রেওয়াজ চালু হয়েছে। এই রেওয়াজ নবী করীম (সা:)-এর শরীয়তেও অব্যাহত রাখা হয়েছে। তাই, তিনি কুরবানী সংক্রান্ত প্রশ্বাবলীর উত্তর অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় প্রদান করেছেন। হযরত যায়েদ ইবনে আরকাম (রা:) হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেছেন; একবার আমি জিজ্ঞেস করলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ; এই কুরবানী কি? নবী করীম (সা:) উত্তর করলেন : তোমাদের পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ:)-এর সুন্নাত। আমি বললাম, ইহা করলে আমরা কি পাব? তিনি বললেন : প্রত্যেকটি চুলের বিনিময়ে একটি করে নেকী মিলবে। আমি পুনরায় জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! পশমের ব্যাপারে কি হবে? তিনি বললেন : পশমের প্রত্যেকটি চুলের বদলে একটি করে নেকী লাভ করা যাবে।” (মুসনাদে আহমাদ, সুনানে আবু দাউদ, মুস্তাদরেকে হাকেম, সুনানে ইবনে মাজাহ, আল মুন্য়েরী-)।
হযরত আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত-হয়েছে, রাসূলে করীম (সা:) বলেছেন : “কুরবানীর দিন কোন ব্যক্তি রক্ত ঝরানোর তুলনায় আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়ও পছন্দনীয় অন্য কোন কাজই করতে পারেনা। যবেহ করা পশু কিয়ামতের দিন উহার শিং, পশম ও খুর নিয়ে উপস্থিত হবে। কুরবানীর রক্ত মাটিতে পড়ার পূর্বেই আল্লাহর নিকট সন্তেুাষ্টির মর্যাদায় পৌঁছে যায়। সুতরাং তোমরা এতে মনের সুখও সন্তোষ নিবদ্ধ কর।” (মুস্তাদরেক হাকেম, জামে তিরমিজী, সুনানে ইবনে মাজাহ)।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।