পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রতিটি সড়ক যেন এক একটি টার্মিনাল। পর্যাপ্ত বাস ও ট্রাক টার্মিনাল না থাকায় সড়কে ঠাঁই হচ্ছে যাত্রীবাহি বাস, পণ্যবাহি ট্রাকসহ ভারী যানবাহনের। এই মহানগরীতে এমনিতেই জনসংখ্যা ও যানবাহনের তুলনায় সড়কের সংখ্যা কম। অতিরিক্ত যানবাহনের চাপে সড়কের অবস্থা বেহাল। তার উপর সড়কে অঘোষিত টার্মিনাল গড়ে তোলায় ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে।
বৈধ টার্মিনালের সংখ্যা কম হওয়ায় নগরীতে বাসের আটটি আর ট্রাকের অন্তত ১৪টি অবৈধ টার্মিনাল গড়ে উঠেছে। এই ২২টি টার্মিনালকে ঘিরে ওই সব এলাকায় তীব্র যানজট হচ্ছে। এছাড়াও নগরীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও পয়েন্টে ভারী যানবাহন রেখে সড়ক দখল করে নেওয়া হচ্ছে। এতে করে নগরীতে স্বাভাবিক যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। জনদুর্ভোগের পাশাপাশি দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী খ্যাত বন্দর নগরীর সার্বিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রফতানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘিœত হচ্ছে। অবৈধ টার্মিনালকে ঘিরে চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধ সংগঠিত হচ্ছে।
গত এক দশকে মহানগরীতে ভারী যানবাহনের চাপ কয়েকগুন বেড়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা বাড়ছে। তার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বন্দরমুখী আমদানি-রফতানি পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের বহর। বাড়ছে দেশের অন্যতম বাণিজ্যিক এলাকা চাক্তাই খাতুনঞ্জ ও আসদগঞ্জের ব্যবসা বাণিজ্য। চট্টগ্রাম বন্দরকে ঘিরে পতেঙ্গা এলাকায় গড়ে উঠেছে ১২টি বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনাল। এসব টার্মিনালের আশপাশের সড়কও এখন অঘোষিত টার্মিনাল হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। পতেঙ্গা এলাকা দেখা যায় সড়কের দু’পাশে সারি সারি ভারী যানবাহন। জানা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে ঢোকার সিরিয়াল পেতে প্রতিদিন দেড় থেকে দুই হাজার ভারী যানবাহন বন্দরের আশপাশের সড়কগুলোতে অবস্থান নেয়। এতে করে সড়কের একপাশে স্বাভাবিক যানবাহন চলতে গিয়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
বন্দরের সদরঘাট লাইটারেজ জেটিকে ঘিরে সদর ঘাট ও মাঝির ঘাট সড়ক ট্রাক ও কার্ভাড ভ্যানের টার্মিনাল হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। যানবাহনের চাপ কমাতে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকায় নির্মিত টোল রোড ও ফ্লাইওভারের বিশাল এলাকা ব্যবহার হচ্ছে ভারী যানবাহনের টার্মিনাল হিসাবে। বন্দরমুখি পোর্ট কানেকটিং রোডও যেন অঘোষিত ট্রাক টার্মিনাল। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে গণপরিবহনও। আন্তঃজেলা বাসের সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু নেই পর্যাপ্ত টার্মিনাল। এসব বাস রাস্তায় দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করা হচ্ছে। এতে করে মহানগরীর সার্বিক ট্রাফিক ব্যবস্থা এখন বেহাল দশায়।
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-সিডিএ প্রণীত ১৯৯৫ সালের মাস্টার প্ল্যানে নগরীর বাইরে অন্তত ৩টি বাস ও ট্রাক টার্মিনালের প্রস্তাবিত স্থান ছিল। এসব টার্মিনাল নির্মান করা হয়নি। এমনকি ২০০৮ সালে সিডিএ যে ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) প্রণয়ন করেছিল তাতেও কর্ণফুলীর দক্ষিণ পাড়সহ নগরীর বাইরে খোলা জায়গায় বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছিল, কিন্তু তা হয়নি। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে নগরীর হালিশহরে বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।
এদিকে বৈধ টার্মিনাল না থাকায় নগরীর বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৮টি বাস ও ১৪টি অবৈধ ট্রাকস্ট্যান্ড রয়েছে। এগুলোর কারণে নগরজুড়ে অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, প্রতিদিন ছয় হাজারের বেশি আন্তঃজেলা বাস ও ট্রাক মহানগরীতে আসা-যাওয়া করে। কিন্তু স্থায়ী বাস টার্মিনাল আছে মাত্র দুটি আর ট্রাক টার্মিনাল একটি। বৈধ টার্মিনালে স্থান সংকুলান না হওয়ায় এসব অবৈধ টার্মিনাল গড়ে উঠেছে।
স্থায়ী বাস টার্মিনাল দুটি হলো বহদ্দারহাট ও বিআরটিসি বাস টার্মিনাল। আর স্থায়ী ট্রাক টার্মিনালটি নগরীর নীমতলায়। নগরীর গরিবুল্লাহ শাহ (রহ.) মাজারসংলগ্ন সড়ক দামপাড়া, স্টেশন রোড, অক্সিজেন মোড়, চান্দগাঁও, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুসংলগ্ন সড়ক, সেতুর দুই পাড়ের গোল চত্বর, মাদারবাড়ী, অলংকার মোড় থেকে এ কে খান গেট, বড়পুল, কদমতলী, সিইপিজেড, বন্দরটিলা, হাসপাতাল গেইট, এলাকায় অবৈধ বাস স্ট্যান্ডগুলোর অবস্থান। এসব এলাকায় দূরপাল্লার বাস কাউন্টারের সামনে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করানো হয়। এসব অঘোষিত টার্মিনাল ও স্ট্যান্ডকে ঘিরে যানজট স্থায়ী রূপ নিয়েছে।
এছাড়া নগরীর পোর্ট কানেকটিং রোড, পাহাড়তলী ডিটি রোড চাল বাজারসংলগ্ন সড়ক, বারো কোয়ার্টার, মনসুরাবাদ, কাঁচা রাস্তা, বড়পুল, নিমতলা, সল্টগোলা, কদমতলী, মাদারবাড়ী, সদরঘাট, মাঝিরঘাট, বাংলাবাজার ও অক্সিজেন মোড়, স্টিলমিল, পতেঙ্গা সৈকত সড়ক, বিআরটিসি বাস টার্মিনাল সংলগ্ন সড়কে গড়ে উঠেছে অঘোষিত ট্রাক টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড।
নগরীতে চলাচলকারি বাস, মিনিবাস ও টেম্পুর জন্যও নেই কোন টার্মিনাল। এসব যানবাহন রাখা হয় সড়কে। নগরীর কাটগড়, পতেঙ্গা, হালিশহর, লালদীঘির পাড়, নিউমার্কেট, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, বারিক বিল্ডিং মোড়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড় ও পয়েন্টে এসব যানবাহনের স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা জানায়, নগরীতে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, প্রাইম মুভার এবং দেড় হাজারের মতো বাস যাতায়াত করে। এসব যানবাহন নগরীতে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। নগরীর প্রতিটি প্রবেশ পথে অঘোষিত টার্মিনাল ও স্ট্যান্ড গড়ে উঠায় প্রবেশ ও বের হতে সব পরিবহনকে তীব্রজটের মুখে পড়তে হয়। প্রবেশ পথে স্থায়ী জটের প্রভাবে নগরীতে যানজট তীব্র হচ্ছে।
সিডিএর মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী, ঢাকাসহ উত্তরাঞ্চলগামী যানবাহনের জন্য ফৌজদারহাট এলাকায় এবং রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, হাটহাজারী, নাজিরহাট, ফটিকছড়িসহ উত্তর চট্টগ্রামগামী যানবাহনের জন্য বালুছড়ায় আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প আছে। কিন্তু তা এখনও কাগজে-কলমে। সিডিএর কর্মকর্তারা বলছেন একটি প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে আছে, সেটি এখনও পাশ হয়নি। নগরীর হালিশহর এলাকায় ট্রাক টার্মিনাল তৈরির প্রস্তাবও ফাইলবন্দী। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণের জন্য সরকারের কাছে প্রায় ১০ একর খাস জমি বরাদ্দ আবেদন করা হয়েছে। সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন তার গত বাজেট বক্তব্যে বলেছেন জমি পাওয়ার পর টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।